পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭

কবর ও মাজারঃ মনা পাগলার ভাবনা - তৃতীয় ও শেষ পর্ব

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)

মনা বিরবির করে পড়ে যেতে লাগলো। আর মাওলানা সাহেব তার কথার কোন আমল না দিয়েই হড় হড় করে হেঁটে যেতে লাগলো। সেটা দেখে মনা আরো ক্ষেপে গিয়ে বললোঃ

কিছু্ ইলিয়াস মেওয়াতীর ভক্তরা আমাদের বলছে আমরা না কি মাজার পূজারী। তারা বিভিন্ন ছবি এডিট করে এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাই তাদের উদ্দেশ্য বলছিঃ

কবর আরবী শব্দ ও মাজার ফার্সী শব্দ। মাজারের কথা শুনলেই ওহাবীদের শরীরে তিন কেজি পরিমানে এলার্জি উঠে। মানুষ যেন মাজার শরীফ জিয়ারতে না যেতে পারে সেজন্য তারা বিভিন্ন চক্রান্তরে জাল বুনছে। তারা মাজার জিয়ারত করা, মাজারে ফুল দেয়া, ইত্যাদিকে শিরক ফতোয়া দিচ্ছে।

যেমুন ধরেনঃ

১. জিয়ারতের উদ্দেশ্য নবীজির রওজা মোবারকে হাজির হওয়া শিরক।
(ফতোয়ায়ে কোররা, ফতোয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া)

২. সম্মাানের উদ্দেশ্য হুজুর (দঃ) এর রওজা সামনে দাঁড়ানো শিরক।
অথচ মাজার তথা কবর জিয়ারত বিষয়ে হুজুর (দঃ) অনুমতি রয়েছে। যেমনঃ সুনান ইবনে জাজাহ-তে ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ "নিশ্চ য় রাসূল্লাল্লাহ (দঃ) বলেন, আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারতে নিষেধ করেছিলাম। এখন এগুলোর যিয়ারতে যাও। কারন কবর যিয়ারত, পৃথিবীতে সংযম ও আখেরাতের স্মরণ আনয়ন করে।
(সহীহ মুসলিম,হাদীস-৯৭৭, সূনানে ইবনে মাজাহ খন্ড-১,পৃ-৫০০,৫০১, সুনানে আবু দাউদ,হাদীস-৩২৩৫, মুয়াত্তা-এ-মালেক খন্ড ২,পৃ-৪৮৫)

উক্ত হাদীস হতে প্রমানিত হল যে, কবর বা মাজার যিয়ারত করা ইসলাম সম্ম ত তথা শরীয়ত সম্ম ত।

নবীজির রওজা মোবারক জিয়ারত করার ফজীলত বিষয়ে হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছেঃ
"হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল্লাল্লাহ (দঃ) এরশাদ করেন, যে আমার রওজা মুবারক যিয়ারত করবে, তাঁর জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব।

(শুয়বুল ঈমান,৬/৫১পৃ, শিফা শরীফ ২/৮৩ পৃ,নাওয়ারিদুল উসুল ফি আহাদিসুর রুসুল, ২/৬৭পৃ, তারগীব ওয়াত তারহীব,২/২৭পৃ, জামিউল আহাদিস,২০/৩৪৮পৃ, জামিউস সগীর,২/৬০৫পৃ,কানজুল উম্মাল,১৫/৬৫১ পৃ, মিজানুল ইতিদাল,২/৪৩৫পৃ) ইমাম সুবকী (রহঃ) উক্ত হাদিসের ব্যাপারে বলেন, উক্ত হাদিস হাসান।(শরহুল মাওয়াহেব,১২/১৮০পৃ) এমনকি মুহাদ্দিস হক দেহলবী (রঃ) ও উক্ত হাদীসকে সহীহ বলেছেন।

হাশীয়াতুল সানাদী আলা সুনানে ইবনে মাজাহ,২/২৬৮পৃ) এছাড়া ইমাম মুলাক্কন (রহঃ) বলেন,  উক্ত হাদীসটির সনদ শক্তিশালী।(আল বদরুল মনীর,৬/২৯৬পৃ)

হযরত ফাতেমা (সাঃঅাঃ) রাসূল (দঃ) এর চাচা হযরত আমির হামজা (রাঃ) এর মাযার প্রতি প্রতিবার জুমার দিন জিয়ারত করতেন। সেজন্য উনি মদীনা থেকে ৩ মাইল দূরে অবস্থিত ওহুদের প্রান্তরে যেতেন।

১.ইমাম বায়হাকী (রহঃ) আসসুনুনুল কোবরা, ৪র্থ খন্ড-পৃ: ৭৮,হাদীস ৪৯৯৯)
এখন বন্ধুরা আপনারাই বলুন যেখানে হযরত ফাতেমা (রা:) এর স্বয়ং মাজার জিয়ারত করেছেন, আর আজকালের ইয়াজীদের বংশধররা মাজার যিয়ারত করতে কিভাবে নিষেধ করে।

ওহাবীরা মাজার শরীফে ফুল দেওয়াকে শিরক বলে, অথচ তাদের শ্রদ্ধাভাজন ইবনে তাইমিয়া যেদিন ইন্তেকাল করেন, তার লাশ বহনের সময় রাস্তার দুধারে বাড়ী ছাদে লক্ষাধিক মহিলা ফুল ছিটিয়ে শেষবারের মত শোক প্রকাশ করেছিল। (সূত্র: শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ আল্লামা আবু মুহাম্মাদ আলীমুদ্দীন, পৃ-২০৭)।

এবার নিচের লেখা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং ভাবুন, দেখবেন সত্য আপনার সম্মু খে প্রকাশ হয়ে যাবে।
মাজার জিয়ারতকারী ও ভক্তিকারী গনই সঠিক, কারন
--মাজার নাই ফেরাউনের।
-- মাজার নাই নমরুদের।
-- মাজার নাই আবু জেহেলের।
-- মাজার নেই ইয়াজীদের।
-- মাজার নেই মোহাম্মদ বিনআব্দুল ওহাবের।
-- মাজার নেই মওদুদীর।

এখন লক্ষ্য করুন, কিন্তু

-- পৃথিবীতে যত নবী- রাসূলের সন্ধান আছে তাদের সকলের মাজার আছে।
-- মাযহাবের ইমাম গণের মাযার আছে।
-- আউলিয়া কেরাম এর মাজার শরীফ আছে।
-- জামানার মুজাদ্দেদগনের মাজার আছে।
-- হাদীস শরীফের ইমাম গনের মাজার আছে।
-- তাফসীরের ইমামগনের মাজার আছে।
-- তরিকতের ইমামগনের মাজার আছে।
-- যারয় ভারত বর্ষে ইসলাম এনেছেন তাদের মাজার শরীফ আছে।
-- এমনকি মাজার বিরোধী গুরু ইবনে তাইমিয়ার ও মাজার আছে।
 কিন্তু মনার কথা কেউ শুনছে বলে মনে হচ্ছে না। তারা যেভাবে অাসছিল, ঠিক সেভাবেই চলে গেল। মনা তাদের বুঝাতে চেষ্টা করলো কিন্তু একটা পাগলের কথার কোন মুল্যই তারা দিতে চাচ্ছিল না। তারা মনার দিকে এখন ফিরেও তাকাচ্ছে না। মনা মাথায় হাত দিয়ে বললোঃসত্যের কুন দাম নাইক্ক্যা....দুর হালার মোল্লা....এই হালার লগে প্যাচাল পাইর‌্যা লাব নাইক্ক্যা। অন্য দিকে যাই গ্যা......এ কথা বলে মনা হাঁটতে শুরু করলো...