পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০১৭

মহাভারত থেকে কিছু দার্শণিক জীবনদর্শন মূলক তথ্য ও ব্যাখা

পুঁথি ঘেঁটে যা জানা যায়, সে সময়কার জনসংখ্যার আশি শতাংশ পুরুষ মহাভারতের ১৮ দিনের যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিলেন।
যুদ্ধ শেষে সঞ্জয় কুরুক্ষেত্রের সেই জায়গায় গমন করেন যেখানে যুদ্ধ হয়েছিল। কুরুক্ষেত্রের জমিতে দাঁড়িয়ে উনি ভাবতে থাকেন, সত্যিই কি সেই জায়গার মাটি যেখানে তিনি দাঁড়িয়ে, মহাপ্রতাপশালী পান্ডব এবং কৌরবদের রক্তে শুষে নিয়েছে। এই চিন্তা যখন ওনার মস্তিষ্কে বিরাজ করছে, তখন এক কম্পিত কন্ঠ, বৃদ্ধের কোমল ধ্বনি তাঁর কানে বেজে ওঠে। তিনি শুনতে পানঃ

-"তুমি কখনোই সত্য জানতে পারবে না বৎস..!!"

ঘুরে দাঁড়াতে সঞ্জয় গেরুয়া বস্ত্রধারী এক বৃদ্ধকে ধুলোর স্তম্ভ থেকে উঠে আসতে দেখেন।

-আমি জানি বৎস, তুমি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের বিষয় জানতে চাও কিন্তু ততক্ষণ তা তোমার বোধগম্য হইবে না, যতক্ষণ না তুমি বাস্তবে যুদ্ধটা কি বস্তু, সেটা বুঝিবে। মৃদু হেসে বৃদ্ধ বলেন।

-তার মানে..?

-মহাভারত একটি দৃষ্টান্ত, একটি মহাকাব্য, হয়ত বাস্তব, হয়ত বা দর্শন। মৃদু-মন্দ হেসে বৃদ্ধ সঞ্জয়ের দিকে তাকান। তাঁর মনে আরও প্রশ্ন উদ্রেক করাই বোধহয় তাঁর লক্ষ।

-আপনি দয়া করে যদি বলেন ওই দর্শন বস্তুটি কি..?? সঞ্জয় অনুরোধ করেন।

-নিশ্চয়, এই বলিয়া বৃদ্ধ আরম্ভ করেন। শুন, তাহলেঃ

-পঞ্চপান্ডব আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয় বই কিছু না। দৃষ্টি, ঘ্রাণ, স্বাদ, স্পর্শ ও ধ্বনি।আর কৌরবরা কি, তা কি জান তুমি..??  দৃষ্টি সরু করে বৃদ্ধ শুধান। কৌরব আমাদের একশতদোষ যারা নিত্য, প্রতিমুহূর্ত আমাদের ওই পাঁচ ইন্দ্রিয়কে আক্রমণ করছে। জান কখন..??  সঞ্জয় আবার মাথা নাড়েন। শ্রীকৃষ্ণ যখন তোমার রথের সারথি হন, তখন..!! বৃদ্ধ ঝকঝকে হাসি হাসেন এবং সঞ্জয় এই অন্তর্নিহিত জ্ঞান প্রাপ্তিযোগে অবাক চোখে বৃদ্ধকে দেখেন।

-শ্রীকৃষ্ণ তোমার অন্তর ধ্বনি, তোমার আত্মা, তোমার পথপ্রদর্শনকারি আলোক স্তম্ভ এবং তুমি যদি তাঁর হাতে নিজেকে সমর্পিত করে দাও, তুমি চিন্তামুক্ত থাকবে জীবনে।

সঞ্জয় বোকার মত বৃদ্ধের দিকে তাকিয়ে থাকে কিন্তু শীঘ্রই আবার সামলে নিয়ে পরের প্রশ্ন করেনঃ

-তাহলে দ্রোণাচার্য, ভীষ্মপিতামহ কেন কৌরবের হয়ে লড়াই করলেন, যদি কৌরবরা দোষী হয়..??

ধীরে মাথা সঞ্চালন করে বৃদ্ধ বলেনঃ

-ইহার মানে, যখন তুমি বড় হও, তোমার ধারণা বয়স্ক মানুষদের প্রতি বদল হতে থাকে। ছেলেবেলায় যে বয়ঃজ্যেষ্টদের মনে হত তারা সঠিক, বড় হয়ে বুঝতে পার, ততটা ঠিক নন তারা। তাদেরও দোষ আছে। এবং একটা দিন আসে যখন তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাদের সংগ তোমার জন্যে ভাল কি মন্দ। তারপর এটাও হয়ত তুমি উপলব্ধি কর একটা সময়, তাদের সাথে লড়াই করাই তোমার জন্যে মংগলের। বেড়ে ওঠার ইহাই সবচাইতে কঠিন পক্ষ এবং সেইজন্যেই গীতার সারমর্ম জানা দরকার।

বাকরূদ্ধ হইয়া সঞ্জয় মাটির ওপর হাঁটু ভেঙ্গে বসে পড়েন। ইহার কারণ এই নয় যে, এই বাণী ক্লান্তিজনিত তাঁর কাছে বরং এই দর্শনের মাত্রাধিকতায় তিনি আবিভূত হইয়া পড়েন।

-তাহলে কর্ণকে কি বলবেন..??

-আহ্, তুমি সর্বোত্তম প্রশ্ন সবার শেষে করেছ। শোনঃ

-কর্ণ তোমার ইন্দ্রিয়গণের ভ্রাতা। সে বাসনা। সে তোমারই এক অংশ কিন্তু সে সংগ দেয় দোষের। যদিও সে দোষীর সংগ দিয়ে মনে মনে পীড়া অনুভব করে কিন্তু নিজেকে ঠিক সাবস্ত্য করার জন্যে নানান যুক্তি দেয়, ঠিক যেমন তোমার বাসনা সর্বক্ষণ তোমায় যুক্তি যুগিয়ে চলে। তোমার বাসনা তোমায় মিথ্যে যুক্তি দিয়ে মন ভোলানোর চেষ্টা করে না কি সর্বদা..??

সঞ্জয় নিঃশব্দে মাথা নাড়ান। এক দৃষ্টিতে তিনি কুরুভুমির দিকে তাকিয়ে থাকেন। মনে তাঁর লক্ষ-কোটি চিন্তা তোলপাড় করে। প্রতিটি কথা গুছিয়ে তিনি সামঞ্জস্য তৈরি করার চেষ্টা করেন। খানিক বাদে যখন তিনি মাথা তোলেন, বৃদ্ধ তখন সেখান থেকে প্রস্থান করেছেন। ধুলোর স্তম্ভে আবার মিলিয়ে গেছেন। পেছনে ফেলে রেখে, এক চিলতে জীবনদর্শন

বুধবার, ২৪ মে, ২০১৭

শেখ সাদী (রহঃ) এর কিতাব গুলিস্তা - প্রথম অধ্যায়

বাদশাহের ঘটনাঃ
-----------------
ঘটনাঃ কবি বলেন, একদিন এক বাদশাহকে বলতে শুনলাম, যে এক বন্ধীকে হত্যা করতে আদেশ দিচ্ছেন। তখন বন্দী নিরাশ হয়ে বাদশাকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে লাগলো। কথিত আছে, যে ব্যক্তি জীবনের আশা ত্যাগ করে, তার মনে যা থাকে তাই সে প্রকাশ করে দেয়।
ওয়াক্তে জরুরাত চু নামানাদ গরেজ
দস্তে বগীরাদ ছারে শামশিরে তেজ।
অর্থাৎ কবি বলেন, অসহায় অবস্থায় যখন পলায়ন করার আর পথ না পায়, তখন ধারালো তলোয়ারের অগ্রভাগ ধরতে সে দ্বিধা করে না।
ব্যাখাঃ যখন কোন ব্যক্তি শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং তার মৃত্যুর আশংকা দেখে, পালাবার পথ না পায়, তখন নৈরাশ্য অবস্থায় মনের সব সাহস অর্জন করে শত্রুর মোকাবেলা করতে উদ্যত হয়, যদি সে ধারালো তলোয়ারের আঘাত প্রতিরোধ করতে অন্য কোন কিছু না পায়, তখন সে তার নিজের কোমল হাত দ্বারা তা প্রতিরোধ করে। তাতে সে সফল হোক বা না হোক। যেমনঃ বয়াতে কবি বলেনঃ
ইযা ইয়াইসাল ইনসানু তালা লেসানুহু
কাসিন নাওরেম মাগলুবিঈ' ইয়াসুলু অালাল কালবি।
অর্থাৎ কবি বলেন, জীবনের কঠিন মুহুর্তে মানুষ যখন নিরাশ হয়ে যায় তখন তার জিহ্বা লম্বা হয়ে যায়। অর্থাৎ মুখে যা আসে তাই বলে থাকে। যেমন-বিড়াল, কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে উপায় না দেখে নিজের ছোট থাবা দ্বারা কুকুরকে আঘাত করতে চেষ্টা করে।
বাদশা নিজের অধীনে বন্দীবে কিছু বলতে শুনে তার কথা বুঝতে না পেরে উপস্থিত উজিরদের জিগ্যাসা করলেন, সে কি বলছে? উজিরদের মধ্যে সৎ উদ্দেশ্যের একজন উজির ছিল। সে বাদশাহর নিকট আরজ করলো, হে বাদশাহ নামদার! বন্দী বলছে-
উচ্চারণঃ ওয়াল কাজিমিনাল গাইযা ওয়াল আফিনা আনিন্নাসি ওয়াল্লাহু ইউহিব্বুল মুহসীনীন। অর্থাৎ রাগ দমনকারী এবং মানুষের অপরাধ ক্ষমাকারীকে আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন।
উজিরের এ কথা শুনে বাদশাহর মনে দয়া হলো। তিনি বন্দীকে হত্যা করার আদেশ বাতিল করলেন। কিন্তু দ্বিতীয় উজির তার বিরুদ্ধ ছিল। সে বললোঃ আমাদের সহকর্মীদের মধ্য হতে কারো পক্ষেই বাদশাহর দরবারে সত্য ছাড়া মিথ্যা বলা ঠিক নয়। এ বন্দী বাদশাহকে অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করেছে। 
বাদশাহ তার কথায় কান দিলেন না। মুখ-মন্ডল অন্যদিকে ফিরিয়ে নিয়ে বললেনঃ সে যা বলেছে তা মিথ্যা। তা আমার নিকট বেশি পছন্দ হয়েছে। তুমি যে সত্য বলেছ তার অপেক্ষায়। কেননা, তার কথার উদ্দেশ্য সৎ, তোমার কথার উদ্দেশ্য অসৎ এবং পাপ। জ্ঞানী লোকেরা বলেছেন, সৎ উদ্দেশ্যের জন্য মিথ্যা বলা ভালো। অসত্যের জন্য সত্যও ভালো নয়।

হর কে শাহ আঁ-কুনাদ কেহ উ গোয়েদ
হায়ফে বাশদকে জুয নেকু গোয়েদ।
অর্থঃ কবি বলেন, যখন বাদশাহ নামদার তাই করবেন, যা তিনি বলবেন তখন সৎ ছাড়া অসৎ বলা দুঃখের বিষয় হবে।

মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০১৭

কেন স্র্রষ্টাকে নিজের ভিতর খুঁজব?

কেন স্র্রষ্টাকে নিজের ভিতর খুঁজব?
--------------------------------
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, কারণ মানুষেরই বিবেকবোধ ও আত্মজ্ঞান লাভের ক্ষমতা আছে। মানুষ ব্যতীত অন্য কোন জীব আত্মজ্ঞান লাভ করতে পারে না। আত্ম জ্ঞান হচ্ছে নিজেকে নিজের ভিতর জানার জ্ঞান । নিজেকে জানলে জগতের আর কিছুই জানার বাকি থাকে না। নিজেকে জানলে আপনা আপনি সব কিছু জানা হয়ে যাবে। নিজেকে জানার প্রাথমিক ধাপ হচ্ছেঃ-

মানুষ = মহা প্রাণ অষ্ট প্রকৃতি ( ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম, মন, বুদ্ধি, অহংকার)
পঞ্চ জ্ঞান ইন্দ্রিয় ( চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক )
পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের গুণ ( শব্দ, স্পর্শ, রুপ, রস, গন্ধ )
পঞ্চকর্ম ইন্দ্রিয় ( বাক, পানি, পদ, লিঙ্গ, উপাস্থ )
বায়ু ভেদে প্রকৃতিগত তিনগুণ (সত্ত্ব, রজঃ ,তম )
ষড় রিপু ( কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য ) ২৫ টি দৈব সম্পদ বা নিবৃত্তিমুখি গুণ বা শক্তি ১০০ আসুরী বা মন্দ প্রবৃত্তি।
বর্ণিত বিষয় সমূহের সমষ্টি হচ্ছে মানুষ।

বর্ণিত বিষয় সমূহ জানাকে আত্মজ্ঞান বলে। উপরে বর্ণিত বিষয় সমূহ সব কিছুই মানুষের মধ্যে বিদ্যমান। বিদ্যমান বিষয়সমূহ জানলে মানুষ তার প্রবৃত্তিকে চিনতে পারে, নিজের ভিতর একটি সরল পথ তৈরি করতে পারে। সে পথ নিবৃত্তির প্রথম সোপান। স্র্রষ্টা অবিনাশী ও নিরাকার সত্ত্বা। তার আকার প্রকার নির্ধারণ করা সাধারণ মানব মস্তিষ্কের পক্ষে নিতান্তই অসম্ভব। তার মানে কি স্র্রষ্টাকে আমরা উপলব্ধি করতে পারব না? অবশ্যই পারব। তিনি প্রাণরুপে প্রতি দেহ ঘটে বিরাজ করছেন। অসীম সমীম হলেন দেহ ঘটে বা ভান্ডে। সাংখ্য রুপে তিনি সসীম হলেন ২১,৬০০ বার প্রাণরুপে স্পন্দিত হচ্ছেন এই দেহ ভান্ডে। দেহস্থ সব কিছু তাই বিকশিত হচ্ছে।

পিতার মস্তক হতে বিচ্যুতির পূর্বে আমরা সবাই শুন্যই ছিলাম বা মহাপ্রাণের সাথে যুক্ত ছিলাম। আদি পিতা আমাদের পিতার আজ্ঞা চক্রের সামান্য উপরে ব্রক্ষযোনি স্থানে নিক্ষেপ করলেন বাকি কাজ টা করলেন আমার বাবা ও মা। শুরু হলো প্রাণের অনন্ত পথের যাত্রা। এই যাত্রা পথে জন্ম –মৃত্যু, সুখ-দুঃখ ভোগ, কর্মফল ও ঋণদায় শোধের সমষ্টি। দেহস্থ পরম পুরুষ স্বাক্ষী স্বরুপ সব দেখে যান, তিনি শুধু থাকেন..কিছুই করেন না করান না। যেখান হতে বিচ্যুতি হয়ে এই ভবে এলাম ...সেখানে ঠিক সেই ভাবে ফিরে যেতে না পারলে জীবের মুক্তি নেই।

মুক্তি লাভের উপায় হচ্ছেঃ  দেহস্থ যে পরম পুরুষ আছেন তার স্মরণ করা। শুধু স্মরণ করলে কি হবে?
তিনি আবার ইন্দ্রিয়াতীত ও গুণাতীত...

ইন্দ্রিয়াতীত স্থানে ও গুণাতীত হয়ে তাকে স্মরণ করতে হবে। মানব দেহই ধর্ম ও কর্ম ভূমি। জগতের যা কিছু কল্যাণ ও অকল্যাণ মানুষই করেন। জগতের পরিবর্তন মানুষের কর্মের সমষ্টি। মানবদেহে তিনি প্রাণ রুপে থেকে জগতের হিত সাধন করছেন...আবার কাউকে সায়েস্তা করার জন্য এই মানুষকেই ব্যবহার করছেন। মানব দেহস্থিত জীবাত্মা পরমাত্মার সাথে মিলনের স্থল বা মোহনা হচ্ছে মানব দেহ।

তাই মানব দেহেই সাধনার স্থল এবং এটাই বিশ্ব ব্রক্ষান্ড। এখানেই সব কিছু। এখানেই পাওয়া যায় অমুল্য নিধি।
 [কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ দুলাল মহন্ত দাদা]

বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০১৭

কোরআনে বর্ণিত ২৫ জন নবীর নাম

হজরত আবু জর গিফারি (রা.) প্রিয় নবী (সা.) কে প্রশ্ন করেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পয়গম্বরদের সংখ্যা কত? তিনি জবাব দিলেন, ১ লাখ ২৪ হাজার। তাদের মধ্যে ৩১৫ জন হচ্ছেন রাসূল। (আহমদ ও শরহে মাকাসিদ)।
তবে আল কোরআনে যেসব পয়গম্বরের নাম উল্লেখ হয়েছে, তাদের সংখ্যা মাত্র ২৫ জন। তাদের কারও কারও আলোচনা বিভিন্ন সূরায় একাধিক জাগায় স্থান পেয়েছে। আবার কারও কারও নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এর সংখ্যা মাত্র ৫টি। কোরআনুল কারিম যেহেতু হেদায়েতের বাণী ও উপদেশগ্রন্থ, তাই অতীতকালের জাতি ও সম্প্রদায়ের ঘটনাবলি, তাদের ভালো-মন্দ আমল ও তার পরিণতি বর্ণনার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক ধারা বর্ণনাপদ্ধতি অবলম্বন করা হয়নি। বরং সত্য প্রচারের লক্ষ্যে দাওয়াত প্রদানের মুখ্যতম পন্থাই গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে প্রাচীনকালের সম্প্রদায় ও তাদের প্রতি প্রেরিত পয়গম্বরদের আলোচনা বারবার শ্রবণ করার ফলে শ্রোতাদের অন্তরে দৃঢ়ভাবে গেঁথে যেতে পারে এবং তা শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বেশ উপযোগীও বটে। কোরআনে বর্ণিত ২৫ জন নবীর নাম হলো-

১. হজরত আদম (আ.), মোট ৯টি সূরায় ২৫ জায়গায় তার নাম উল্লেখ হয়েছে।
২. হজরত ইদ্রিস (আ.), দুটি সূরায় দু’বার উল্লেখ হয়েছে।
৩. হজরত নুহ (আ.), ২৮টি সূরায় ৪৩ বার উল্লেখিত হয়েছে।
৪. হজরত হুদ (আ.), তিনটি সূরায় সাতবার উল্লিখিত হয়েছে।
৫. হজরত সালেহ (আ.), চারটি সূরায় ৯ স্থানে উল্লেখ হয়েছে।
৬. হজরত ইবরাহিম (আ.), ২৫ সূরায় ৬৯ বার উল্লেখ হয়েছে।
৭. হজরত লুত (আ.), চৌদ্দটি সূরায় ২৭ বার উল্লেখ হয়েছে।
৮. হজরত ইসমাঈল (আ.), আট সূরায় ১২ জাগায় উল্লেখ হয়েছে।
৯. হজরত ইসহাক (আ.), ১২ সূরায় ১৭ বার আলোচিত হয়েছে।
১০. হজরত ইয়াকুব (আ.), ১০টি সূরায় ১৬ বার আলোচিত হয়েছে।
১১. হজরত ইউসুফ (আ.)। তিনটি সূরায় ২৭ বার উল্লেখ হয়েছে।
১২. হজরত শুয়াইব (আ.), চার সূরায় ১১ বার উলি্লখিত হয়েছে।
১৩. হজরত আইয়ুব (আ.), চারটি সূরায় চার জাগায় আলোচিত হয়েছে।
১৪. হজরত যুল কিফল (আ.), দুটি সূরায় দু’বার আলোচিত হয়েছে।
১৫. হজরত মুসা (আ.), ৩৪টি সূরায় ১৩৭ বার আলোচিত হয়েছে।
১৬. হজরত হারুন (আ.), ১৩টি সূরায় ২০ বার আলোচিত হয়েছে।
১৭. হজরত দাউদ (আ.), ৯টি সূরায় ১৬ বার উল্লেখ হয়েছে।
১৮. হজরত সুলাইমান (আ.), সাতটি সূরায় ১৭ বার উল্লেখ হয়েছে।
১৯. হজরত ইলিয়াস (আ.), দুটি সূরায় তিনবার উলি্লখিত হয়েছে।
২০. হজরত ইয়াসা (আ.), দুটি সূরায় দু’বার উল্লেখ হয়েছে।
২১. হজরত ইউনুস (আ.), দুটি সূরায় দু’বার উল্লেখ হয়েছে।
২২. হজরত জাকারিয়া (আ.), চারটি সূরায় সাতবার উল্লেখ হয়েছে।
২৩. হজরত ইয়াইয়া (আ.), চারটি সূরায় পাঁচবার উল্লেখ হয়েছে।
২৪. হজরত ঈসা (আ.), ১১টি সূরায় ২৫ বার উল্লেখ হয়েছে।
২৫. হজরত মুহাম্মাদ (সা.), চারটি সূরায় মাত্র চার জাগায় তাঁর নাম উল্লিখিত হয়েছে। অন্যান্য স্থানে তাঁর গুণবাচক নাম উলি্লখিত হয়েছে। অথবা আইয়ুহান নবী কিংবা আইয়ুহান রাসূল বলে সম্বোধন করা হয়েছে। এটা বিশ্বনবীর সম্মান ও মর্যাদার পরিচয় বহন করে।