মেরাজ বিশ্বনবী
হযরত রাসুল (সাঃ)
এর জীবনে একটি
অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ
ও অনেক তাৎপর্যবহ
ঘটনা। রজব মাসের
২৭ তারিখ সোমবার
রাত্রের
শেষাংশে
আমাদের দয়াল রাসুল
(সাঃ) মেরাজে গিয়েছিলেন।
এই ব্যাপারে কোন মুসলমানের
মাঝেই কোন বিতর্ক
নেই। সেই মেরাজের
উল্লেখযোগ্য
একটি বিষয় ছিলো
আল্লাহ্
রাব্বুল
আলামীনের
দিদার লাভ। কিছুদিন
আগে অনলাইনে এক ব্যক্তির
মন্তব্য
চোখে পড়ল। তার
বক্তব্য
ছিল যে মেরাজে
গিয়ে রাসুল (সাঃ)
আল্লাহ্কে নয়
বরং জিব্রাইল ফেরেস্তাকে দেখেছিলেন। লেখাটা পরে
অবাক হলাম। এতকাল
জেনে আসলাম যে
রাসুল (সাঃ) মেরাজে
গিয়ে আল্লাহ্কে দেখেছিলেন
আর এখন শুনছি
যে তিনি আল্লাহ্
কে দেখেননি, জিব্রাইল্কে দেখেছিলেন। আমার বাসায়
বাংলা অনুবাদসহ একটি কোরআন
শরীফ আছে। সেখানেও
দেখলাম যে অনুবাদকারী
মেরাজ সঙ্ক্রান্ত ঐসব আয়াতের
অনুবাদ করার সময়
জিবরাঈল
ফেরেশতাকে ইঙ্গিত
করেছেন।
তারপর এই বিষয়টি
নিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা
করলাম এবং অবশেষে
যা জানতে পারলাম
তা হলো রাসুল
(সাঃ) মেরাজে গিয়ে
জিবরাঈল
(আঃ) কে নয়
বরং স্বয়ং আল্লাহ্
রাব্বুল
আলামীনকেই
দেখেছিলেন।
মেরাজের কিছু বিবরণ
আল-কোরানের সূরা আন
নাজমের প্রথম অংশে
বর্ণীত হয়েছে। মজার
ব্যাপার
হলো আল্লাহ্ এই সুরায়
মেরাজের
ঘটনা বর্ণনা করতে
গিয়ে সরাসরি “আল্লাহ্”এবং রাসুল
(সাঃ) এই নাম
দুটো উল্লেখ করেননি।
আর এটাকেই বিতর্ক
তৈরির অস্ত্র হিসেবে
ব্যবহার
করা হয়েছে। সূরা
আন নাজমের কয়েক্তি
আয়াত উল্লেখ করে
বিষয়টি বিস্তারিত
বললে সবার বুঝতে
সুবিধা হবে।
সূরা আন-নাজমের ৫
থেকে ৭ নং
আয়াতের আভিধানিক অর্থ হলোঃ
“তাকে শিক্ষা দান
করে এক শক্তিশালী
সত্তা। সহজাত শক্তি
সম্পন্ন
সে নিজ আকৃতিতে
প্রকাশ পেলো, ঊর্ধ্ব
দিগন্তে।” কিন্তু
অনুবাদকারী
অনুবাদ করতে গিয়ে
লিখেছে “তাকে শিক্ষা
দান করে এক
শক্তিশালী
ফেরেশতা।”
কিন্তু ঐ আয়াতের
কোথাও ফেরেশতা অথবা জিব্রাইল
(আঃ)- এই শব্দটাই
নাই।
সূরা আন
নাজমের ৮ থেকে
৯ নং আয়াতের
আভিধানিক
অর্থ হলোঃ
“অতঃপর সে তার
নিকটবর্তী
হলো, অতি নিকটবর্তী।
ফলে তাদের মধ্যে
২ ধনুকের ব্যবধান
রইল অথবা তারও
কম।” এই আয়াতের
কোথাও সরাসরি আল্লাহ্
বা রাসুল (সাঃ)
কথাটা উল্লেখ নাই।
কিন্তু যারা অনুবাদ
করেছেন তারা অনুবাদ
করার সময় “অতঃপর
সে তার নিকটবর্তী
হোল”, এই “সে”
এর যায়গায় ব্রাকেটে
লিখেছে অথবা সরাসরি
লিখেছে জিব্রাইল (আঃ)।
আর “তার” এর
যায়গায় লিখেছে রাসুল
(সাঃ) এর কথা।
এখন এই আয়াতের
প্রথম অংশে যখন
“সে” এর যায়গায়
জিব্রাইল
(আঃ) এর নাম
লিখা হয় তখন
যারা সাধারন মানুষ
এবং যাদের আরবী
ব্যাকরন
সম্পর্কে
ধারণা নেই তারা
কিন্তু এটাই ধরে
নিবে যে এই
আয়াতের আবিধানিক অর্থেই জিব্রাইল
শব্দটি এসেছে।
আবার এই
সুরার ১৩-১৪
নং আয়াতে বর্ণীত
হয়েছে, “নিশ্চয় তিনি
তাকে আরো একবার
দেখেছিলেন,
সিদরাতুল-মুন্তাহার (প্রান্তীয় কুলবৃক্ষের) নিকটে।”
এই আয়াতেরও আভিধানিক অর্থে কোথাও
সরাসরি আল্লাহ্ বা রাসুল
(সাঃ) কথাটা উল্লেখ
নাই। কিন্তু যারা
অনুবাদ করেছেন তারা
অনুবাদ করার সময়
“তাকে আরো একবার
দেখেছিলেন”-
এই “তাকে” এর
জায়গায় অথবা পাশে
ব্রাকেটে
লিখেছে জিব্রাইল (আঃ)।
আর এভাবেই মেরাজের
ঘটনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়কে বিতর্কিত করা হয়েছে।
এবার তাহলে
মূল আলোচনায় আসা যাক
যে রাসুল (সাঃ)
মেরাজে গিয়ে আসলে
কাকে দেখেছিলেন? আল্লাহ্
রাব্বুল
আলামীন নাকি জিবরাঈল
(আঃ)?
সূরা আন
নাজমের ৫ থেকে
১০ নং আয়াতের
আভিধানিক
অর্থ হলোঃ
“তাকে শিক্ষা দান
করে এক শক্তিশালী
সত্তা। সহজাত শক্তি
সম্পন্ন
সে নিজ আকৃতিতে
প্রকাশ পেলো, ঊর্ধ্ব
দিগন্তে।
অতঃপর সে তার
নিকটবর্তী
হোল, অতি নিকটবর্তী।
ফলে তাদের মধ্যে
২ ধনুকের ব্যবধান
রইল অথবা তারও
কম। তখন তিনি
তার বান্দার প্রতি যা
ওহী করার তা
ওহী করলেন।”
এখন দেখা
যাক যে এই
আয়াতের ব্যাখ্যায় হযরত হাসান
আল বসরী (রাঃ)
কি বলেছেন। বর্ণিত হাদিসটি
তফসিরের
কিতাব “তফসীরে হাসান
বসরী” এর ৫ম
খণ্ডে হযরত হাসান
আল বসরী (রাঃ)
হতে বর্ণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আল্লাহ্র বাণী
““তাকে শিক্ষা দান
করে এক শক্তিশালী
সত্তা।” হযরত হাসান
আল বসরী (রাঃ)
বলেন, যিনি স্বরূপে
দৃশ্যমান
হয়ে ওহী করেছিলেন
তিনি ছিলেন স্বয়ং
আল্লাহ্
তায়ালা।
আর শক্তি ও
ক্ষমতা আল্লাহ্ তালারই একটি
গুণ। অতঃপর হযরত
হাসান আল বসরী
(রাঃ) তিনবার কসম
করে বলেন, অবশ্যই
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মহান
প্রতিপালক
আল্লাহ্কে দেখেছেন।”
বর্ণিত হাদিসটি
তফসীরের
কিতাব তফসীরে দুররে
মানসুর এর ১৫
নং খণ্ডে
হযরত আনাস ইবনে
মালেক (রাঃ) হতে
বর্ণনা করা হয়েছে।
হযরত রাসুল (সাঃ)
এরশাদ করেন, “যখন
আমাকে আকাশে সায়ের
করানো হচ্ছিলো, তখন
মহামান্বিত
আল্লাহ্
আমার নিকটবর্তী হলেন। আর
সে সময় তিনি
আমার এতই নিকটবর্তী
হলেন যতখানি তীর
ধনুকের নিকটবর্তী হয়। অতঃপর
তিনি আরও নিকটে
এলেন।”
বর্ণিত হাদিসটি
তফসীরের
কিতাব “তফসীরে তাবারীর”
২৭ খণ্ডে হযরত
আবদুল্লাহ
ইবনে আব্বাস (রাঃ)
হতে বর্ণনা করা
হয়েছে। তিনি বলেন,
আল্লাহ্র বাণী,
“অতঃপর সে তার
নিকটবর্তী
হলো, অতি নিকটবর্তী।“
হযরত ইবনে আব্বাস
(রাঃ) বলেন, এ
বাণীর মর্ম হচ্ছে-মহান প্রতিপালক
আল্লাহ্
রাসুল (সাঃ) এর
অতি নিকটবর্তী হলেন।”
এখন প্রশ্ন
হলো যে আল্লাহ্
রাসুল (সাঃ) এর
এত নিকটবর্তী হওয়ার পরেও
কি তিনি আল্লাহ্কে দেখতে
পেলেন না!!
সূরা আন
নাজমের ১১ থেকে
১২ নং আয়াতের
আভিধানিক
অর্থ হলোঃ “যা
সে দেখেছে তার
অন্তঃকরণ
তা অস্বীকার করেনি। সে
যা দেখেছে তোমরা
কি সে বিষয়ে
তার সাথে বিতর্ক
করবে?”
এই আয়াতের
ব্যাখ্যায়
হযরত ইবনে আব্বাস
(রাঃ) বলেন, “যা
সে দেখেছে তার
অন্তঃকরণ
তা অস্বীকার করেনি।” - এই
বাণীর মর্ম হচ্ছে-হযরত মুহাম্মদ
(সাঃ) তার প্রতিপালক
আল্লাহ্কে দেখেছেন।
[তফসীরে তাবারীর ২৭ খণ্ড]
এই আয়াতের
ব্যাখ্যায়
হযরত রাবী (রাঃ)
বলেন, “যা সে
দেখেছে তার অন্তঃকরণ
তা অস্বীকার করেনি।” - এই
বাণীর মর্ম হচ্ছে-হযরত মুহাম্মদ
(সাঃ) তার প্রতিপালক
আল্লাহ্কে অন্তরচক্ষু
দিয়ে দেখেছেন। [তফসীরে তাবারীর
২৭ খণ্ড]
বর্ণিত হাদিসটি
তফসীরের
কিতাব “তফসীরে দুররে
মানসুর” এর
২৭ খণ্ডে হযরত
আবদুল্লাহ
ইবনে আব্বাস (রাঃ)
হতে বর্ণনা করা
হয়েছে। তিনি বলেন
যে, আল্লাহ্র রাসুল
(সাঃ) এরশাদ করেন,
“আমি আমার মহান
প্রতিপালক
আল্লাহ্কে অতি
উত্তম সুরতে দেখেছি।”
বর্ণিত হাদিসটি
তফসীরের
কিতাব “তফসীরে মাঝহারী”
এর ৯ম খণ্ডে
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস
(রাঃ) হতে বর্ণনা
করা হয়েছে। তিনি
বলেন, আল্লাহ্ হযরত ইব্রাহীম
(আঃ) কে সম্মানিত
করেছেন বন্ধুত্ত দান করে,
হযরত মুসা (আঃ)
কে সম্মানিত করেছেন তার
সাথে কথা বলে।
আর হযরত মুহাম্মদ
(সাঃ) কে সম্মানিত
করেছেন আপন দর্শন
দিয়ে।”
সূরা আন
নাজমের ১৩ থেকে
১৪ নং আয়াতের
আভিধানিক
অর্থ হলোঃ,
“নিশ্চয় সে তাকে
আরেকবার
দেখেছিল,
সিদরাতুল
মুন্তাহার
(প্রান্তীয়
কুলবৃক্ষের)
নিকটে।“
বর্ণিত হাদিসটি
তাফসীরের
কিতাব “তাফসীরে তাবারী” এর
২৭ খণ্ডের
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস
(রাঃ) হতে বর্ণনা
করা হয়েছে। তিনি
বলেন, আল্লাহ্র বাণী,
“নিশ্চয় তিনি {রাসুল
(সাঃ)} তাকে (আল্লাহ্কে)
আরো একবার দেখেছিলেন,
সিদরাতুল-মুন্তাহার নিকটে।” হযরত
ইবনে আব্বাস (রাঃ)
বলেন, এবার তিনি
স্বীয় প্রতিপালক আল্লাহ্কে আত্মার
চোখ (অন্তরচক্ষু) দিয়ে দেখেছেন।
আর এ কথা
শুনে এক ব্যক্তি
বলল, আল্লাহ্ কি বলেননি
যে, “দৃষ্টিসমূহ তাকে পরিবেষ্টন
করতে পারেনা, যদিও
তিনি সকল দৃষ্টিকে
পরিবেষ্টন
করে আছেন।” এ
কথা শুনে হযরত
ইকরামা (রাঃ) বল্লেন,
দেখা আর পরিবেষ্টন
করার অর্থ এক
নয়। তুমি কি
আকাশ দেখনা? লোকটি
বলল, হ্যা, দেখি।
তিনি বল্লেন, তুমি
কি আকাশের অন্তর্নিহিত
সবকিছু কি দেখ?
বর্ণিত হাদিসটি
তাফসীরের
কিতাব “তাফসীরে দুররে মানসুর”
এর ২৭ খণ্ডের তিরমিযীর
সুত্রে হযরত আব্দুল্লাহ
ইবনে আব্বাস (রাঃ)
হতে বর্ণনা করা
হয়েছে। তিনি বলেন,
আল্লাহ্র বাণী,
“নিশ্চয় তিনি
তাকে আরো
একবার দেখেছিলেন, সিদরাতুল-মুন্তাহার নিকটে।” হযরত
ইবনে আব্বাস (রাঃ)
বলেন, অবশ্যই হযরত
রাসুল (সাঃ) মহান
ও মহামান্বিত আল্লাহ্কে দেখেছেন।
সূরা বনী
ইসরাঈলের
১ম আয়াতে আল্লাহ্
বলেন, “পরম পবিত্র
ও মহিমাময় সত্তা তিনি,
যিনি স্বীয় বান্দাকে
(রাসুলকে)
রাত্রি বেলায় ভ্রমণ
করিয়েছিলেন
মসজিদে হারাম থেকে
মসজিদে আকসা পর্যান্ত।
যার চারপাশকে আমি করেছিলাম
বরকতময়,আর তা
এজন্য যে, আমি
তাকে দেখিয়েছি আমার
নিদর্শন
বা চেহারা। নিশ্চয়ই
তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।”
এখানে একটি
কথা উল্লেখ করা
প্রয়োজন
যে এই আয়াতের
এক যায়গায় “আয়াতুন”
শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে যার
আভিধানিক
অর্থ নিদর্শন। যার কারনে
অনেক অনুবাদে “আমি তাকে
দেখিয়েছি আমার
নিদর্শন”
কথাটি বলা হয়েছে।
কিন্তু সুফী সাধকদের
মতে এই নিদর্শন
বলতে যা বোঝানো
হয়েছে তা মুলত
আল্লাহ্র পবিত্র
চেহারা মোবারক।
মহান আল্লাহ্
পবিত্র কোরআনে তার
চেহারার
বর্ণনা দিতে গিয়ে
“ওয়াজহুন”
শব্দ ব্যবহার করে ১১
টি আয়াত নাজিল
করেছেন।
আরবী “ওয়াজহুন”
শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো
চেহারা।
আবার আল্লাহ্ “আয়াতুন” শব্দ
ব্যবহার
করে ৩টি আয়াত
নাজিল করেছেন। আরবী অভিধান
আল মুঞ্জিল এ “আয়াতুন”
শব্দের সমার্থক হিসেবে বলা
হয়েছে আলামাতুন (নিদর্শন), ছাখসুন
ইত্যাদি।
আবার আল মুরাদিফ
নামক অভিধানে “ছাখসুন” এর
সমার্থক
হিসেবে বলা হয়েছে
শরীর, অবয়ব, চেহারা।
সুতরাং এ “আয়াতুন”
শব্দ দ্বারা যেমন
নিদর্শনকে
বোঝানো হয়েছে তেমনি
কিছু জায়গায় এই
“আয়াতুন” শব্দ দ্বারা
আল্লাহ্র অবয়ব
বা চেহারাও বোঝানো হয়েছে।
আসলে কোরআনের কোন যায়গায়
কোন শব্দের কি
অর্থ ব্যবহৃত হবে তা
সেই সুফীসাধক মহামানবগণই ভালো বলতে
পারবেন যাদের সাথে
আল্লাহ্
ও রাসুল (সাঃ)
এর যোগাযোগ আছে। যেমন
মেরাজ সম্পর্কিত সূরা বনী
ইসরাঈলের
১ম আয়াতে আয়াতুন
বলতে আল্লাহ্ তার নিজ
চেহারার
কথাই উল্লেখ করেছেন।
সবচেয়ে বড়
কথা মেরাজের ঘটনায় দেখা
যায় যে জিবরাঈল
(আঃ) সিরাতুল মুন্তাহা পর্যন্ত রাসুল (সাঃ)
এর সাথে ছিলেন।
তারপর বাঁকি পথ
রাসুল (সাঃ) একাই
পরিভ্রমণ
করতে হয়েছে যেখানে
জিবরাঈল
(আঃ) এর যাবার
অনুমতি ছিলোনা। তাহলে এই
প্রশ্ন তোলাই যায়
যে আল্লাহ্র আরশে
গিয়ে রাসুল (সাঃ)
আল্লাহ্কে বাদ
দিয়ে জিবরাঈল (আঃ) কে
কিভাবে দেখেন যেখানে
জিবরাঈল
(আঃ) উপস্থিতই ছিলেন না।
যেই জিবরাঈল (আঃ) সকাল
বিকাল নিজেই রাসুল
(সাঃ) এর কাছে
আল্লাহ্র ওহী
নিয়ে ছুটে আসতেন,
সেই জিবরাঈলকে দেখার জন্য
রাসুল (সাঃ) নিজেই
ছুটে গেলেন সাত
আসমানের
উপর আর এই
কারনেই এই রাত
এত বরকতময় হলো।
তা কি হয়?
আসলে একটা
স্বার্থান্বেষী
মহল বেশ
কিছুদিন
যাবত কৌশলে ইসলামে
নানা বিভ্রান্তি ঢুকিয়ে দিচ্ছে
এবং নানা কৌশলে
বিভিন্ন
বিষয়কে বিতর্কিত করছে। তারই
ধারাবাহিকতায়
এই অপপ্রচার যে রাসুল
(সাঃ) মেরাজে গিয়ে
জিব্রাইল
(আঃ) কে দেখেছিলেন।
ইতিপূর্বে
ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী
(সাঃ) কে বেদাত
হিসেবে আখ্যা দেয়া
হয়েছে, লাইলাতুল
বরাতকে বিতর্কিত করা হয়েছে।
এবার লাইলাতুল মেরাজের পালা। আনুষ্ঠানিক
ভাবে হাদীস সংকলন
শুরু হয়েছিলো রাসুল (সাঃ)
এর ওফাতের প্রায়
১০০ বছর পরে।
তখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল ইয়াজিদ
পন্থি উমাইয়ারা, যারা ছিল
রাসুল (সাঃ) রেখে
যাওয়া মোহাম্মদী ইসলামের শত্রু। তাদের
শাসন আমলেই যেহেতু
আনুষ্ঠানিক
ভাবে হাদিস সংকলন
শুরু হয় তখন
বেশ কিছু জাল
হাদীস ঢুকে পরে।
রাসুল (সাঃ) এর
বানী ও অন্যান্য
সম্মানিত
সাহাবীদের
বানীকে বাদ দিয়ে
চক্রান্তকারীরা
সেইসব জাল হাদিসকে
পুজি করে এই
বিতর্কের
জন্ম দিচ্ছে। তবে
সন্তোষজনক
বিষয় হলো যে
মেরাজ নিয়ে এই
বিতর্ক সমাজে এখনও
খুব একটা বিস্তার
লাভ করেনি। অনলাইনে
সেই ব্যক্তির সাথে কথা
বলার আগে আমি
নিজেও এই বিতর্কের
বিষয়ে তেমন কিছুই
জানতাম না। আমার
এই লেখাটির উদ্দেশ্য হলো নতুন
করে কেও যদি
মেরাজ নিয়ে এই
বিতর্কের
সম্মুখিন
হন তাহলে যেন
কেও বিভ্রান্ত না হন।
পরিশেষে
একটি প্রশ্ন রেখে
শেষ করি। তা
হলো রাসুল (সাঃ)
যেই মহান সত্তা
আল্লাহ্
রাব্বুল
আলামীনকে
নিজে দেখলেন তিনি
তাহলে নিরাকার হন কিভাবে
লেখাটি লেখার
জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ
করা হয়েছে "তফসীরে সূফী
সম্রাট দেওয়ানবাগী" প্রথম খণ্ড
থেকে।
[ লেখকঃ তারেক ইমতিয়াজ। ]