পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৫

হযরত শাহ্ খাজা শরফ উদ্দিন চিশতী (রহঃ) - মহান এই ওলীর জীবনী

বর্তমান হাইকোর্ট মাজার শরীফ
যাবৎকাল বিভিন্ন সুত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে সুনিশ্চিতভাবে জানা গেছে যে, ওলী--বাংলা হযরত খাজা শরফুদ্দিন চিশতী বেহেস্তী (রহঃ) সুলতানুল হিন্দ খাজা গরীব উন নেওয়াজ হযরত খাজা মইনুদ্দিন হাসান চিশতী (রহঃ) এর ২য় পুত্র ছিলেন হযরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহঃ) এর ২য় স্ত্রী হযরত বিবি ইসমত - এর গর্ভে হযরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহঃ) এর ঔরসে ৬২৮ হিজরী মোতাবেক ১২৩০ খৃষ্টাব্দে আজমীর শরীফে জন্মগ্রহণ করেন

বিগত ৭৫০ বৎসর ব্যাপী লিখিত বিভিন্ন মালফুজাত, তাজকিরাত, মাকতুবাদ বিশেষ করে হযরত খাজা গরীব উন নেওয়াজ মইনুদ্দিন চিশতী (রহঃ) এর দ্বিতীয় প্রধান খলিফা হযরত হামিদউদ্দিন সাভালী (রহঃ) কর্তৃক ১২৫০ খ্রীষ্টা্ব্দ রচিত "সুরুবাস সুদুর" - তথ্য প্রদত্ত হয়েছে হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া (রহঃ) রচিত "ফাতেয়াইদুল ফুয়াদ" এবং তার খলিফা হযরত নাসিরউদ্দিন চেরাগী রচিত "খায়রুল মন্ঞ্জিলপুস্তকের বর্ণনায় এই বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে
ওলী--বাংলার পিতৃপ্রদত্ত প্রকৃত নাম ছিল খাজা হুসামউদ্দিন আবু সালেহ চিশতী (রহঃ) এবং জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা হযরত খাজা ফখরউদ্দিন আবুল খায়ের চিশতী (রহঃ) হযরত খাজা গরীব উন নেওয়াজ (রহঃ) এর ১ম স্ত্রী বিবি আমাতুল্লাহর গর্ভজাত একই মাতার গর্ভে তার একমাত্র ভগ্নী হযরত বিবি হাফেজা জামাল (রহঃ) জন্মগ্রহণ করেন। তার কনিষ্ঠভ্রাতা হযরত খাজা গিয়াস উদ্দিন আবু সাইয়েদ চিশতী (রহঃ) তার গর্ভধারিণী মাতা বিবি ইসমত এর গর্ভজাত ছিলেন। পিতৃকুলে এই ওলী মহান ওলী সাইয়েদ ছিলেন এবং বংশধারা পিতা হযরত খাজা গরীব উন নেওয়াজ (রহঃ) মাধ্যমে রাসুল কারীম (সাঃ) এর রক্তধারার সাথে সংমিশ্রিত ছিল।

ওলী বাংলার বৎসর বয়সকালে ৬ই রজব ৬৩৩ হিজরী মোতাবেক ১২৩৬ খ্রীষ্টাব্দে তাঁর পিতা হযরত খাজা গরীব উন নেওয়াজ (রহঃ) পর্দা নেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন) ফলে সে সময়ে যুবক বয়স্ক তার জেষ্ঠ্য ভ্রাতা হযরত খাজা ফকরউদ্দিন আবুল খাইর চিশতী (রহঃ) এর পরিচর্যায় তিনি লালিত পালিত হন। পরবর্তীকালে কিশোর বয়সে তিনি দিল্লীতে হযরত খাজা নিজামউদ্দিন আউলিয়া (রহঃ) এর হাতে বাইয়াত হন তার কাছে ইলমে মারেফাতের জ্ঞান অর্জন করেন। ক্রমে তিনি কঠোর সাধনা দ্বারা কামেলিয়াতের উচ্চ পর্যায়ে উপনীত হয়ে মহান রাব্বুল আলামিনের আবদালে পরিণত হন। হযরত খাজা মইনউদ্দিন চিশতী (রহঃ) ইন্তেকালের পর আজমীর শরীফ পুণরায় এর অভুতপূর্ব  হিন্দু রাজা পৃথিরাজ রায় এর পুত্রগণের দখলে চলে যায় আজমীর শরীফের মুসলমানগণ নির্যাতনের শিকার হন।
সময় ৬৬৩ হিজরী মোতাবেক ১২৬৫ খ্রীষ্টাব্দে তার জেষ্ঠ্যভ্রাতা খাজা ফখরউদ্দিন আবুল খাইর চিশতী (রহঃ) হিন্দু দুস্কৃতকারীদের সাথে যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। ভ্রাতার শাহাদাতে হযরত হুসামউদ্দিন খুবই মর্মাহত হন আজমীর শরীফ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সময় তার বয়স ছিল ৪৫ বৎসর। সময় একদা রাতে পিতা হযরত খাজা গরীব উন নেওয়াজ (রহঃ) এর নিকট হতে বাশারত লাভ করেন পুর্বদিকে দেশে গমণ করে দ্বীনের খেদমত করার নির্দ্দেশ লাভ করেন। এই অবস্থায় কাউকে কিছু না জানিয়ে একদা গভীর রাতে পদব্রজে দিল্লীর উদ্দেশ্য আজমীর শরীফ গমণ করেন। এই একই সময়ের কিছু পুর্বে হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ) বঙ্গ দেশে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে দিল্লীর হযরত নিজামউদ্দিন আউলিয়া (রহঃ) কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে ১২ জন আউলিয়া সহযোগে বঙ্গদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে বিভিন্নস্থানে আরো বহু আউলিয়া দরবেশ তার সঙ্গী হন।

হযরত হুসামউদ্দিন আজমীর শরীফ থেকে পড়ব্রজে দিল্লী আসেন এবং সেখানে সংবাদ পান যে, হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ) ১২ জন সংগী সহ পুর্বদিকে বংগ দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন এবং বর্তমানে সমরখন্দে অবস্থান করছেন। হযরত খাজা হুসামউদ্দিন পদব্রজে সমরখন্দে গিয়ে তাঁর সাথে যোগ দেন। আজমীর শরীফ হতে মুহাম্মদ শরীফ নামে অপর এক দরবেশ একই সময়ে হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ) এর সাথে যোগ দেন। হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ) এর এই কাফেলার সাথে হযরত হুশামউদ্দিন মুলতান, ইরান, আফগানস্থান, বিহার প্রভৃতি দেশ পদব্রজে পেরিয়ে বংগদেশের সপ্তগ্রামে এসে উপস্থিত হন। সপ্তগ্রাম তখন ছিল মুসলিম সুলতান শামস্ উদ দীন ফিরোজ শাহ্ এর রাজ্য লাখনৌর অন্তর্গত। শ্রীহট্ট তখন ছিলো অত্যাচারী হিন্দু রাজা গোড় গোবিন্দ এর অধীনে। সুলতান সামস উদ্দিনকে শ্রীহট্ট অভিযানে উপদেশ দিয়ে হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ) সুলতানের সেনাবাহিনীর সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দিনের বাহিনীর সাথে হুশামউদ্দিন শাহ্ জালাল (রহঃ) এর ৩৬০ জন ওলী দরবেশ হিজরী ৭০১ মোতাবেক ১৩০৩ খ্রীষ্টাব্দে বিজয়ীর বেশে শ্রীহট্টে প্রবেশ করেন। অতঃপর শ্রীহট্ট বা সিলেট হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ) এর সাথে তিনি বৎসর অবস্থান করেন তার সহবতে ফায়েজ বরকত লাভ করেন। এই সময় খাজা গরীব উন নাওয়াজ (রহঃ) এর পুত্র হিসাবে পরিচিতি প্রকাশ পেলে হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ) তাঁর নাম রাখলেন শরফউদ্দিন যার আরবী অর্থ হচ্ছে-বদলানো বা পাল্টানো। সেই থেকে হযরত হুসাম উদ্দিন চিশতী (রহঃ) হযরত খাজা শরফউদ্দিন চিশতী (রহঃ) নামে পরিচিত হন। হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ) এর জীবনী গ্রন্থ সমুহে তার সংগী ৩৬০ জন আউলিয়ার নামের তালিকায় তাঁর নাম এবং সাথী মোহাম্মদ শরীফ ওরফে শরীফ আজমেরী এর নাম অর্ন্তভুক্ত আছে। অতঃপর হিজরী ৭০৩ মোতাবেক ১৩০৫ খ্রীষ্টাব্দে তিনি হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ) এর নির্দেশে দ্বীন প্রচারের উদ্দেশ্যে শ্রীহট্ট থেকে দক্ষিণ বংগের দিকে নৌকা যোগে রওয়ানা হন। পথ্যিমধ্যে সোনারগাঁও অবস্থিত " হযরত শরফউদ্দিন আবু তাওয়ামা " প্রতিষ্ঠিত খানকা শরীফে কিছুকাল অবস্থান করে সুফী দরবেশদের পরামর্শে রমনা নামক গ্রামে অবস্থিত কালী মন্দিরের পাশে বসবাসকারী জনগণের নির্যাতনের বিরদ্ধে অঞ্চলে ইসলাস প্রচারে ইচ্ছুক হয়ে তিনি এলাকার উদ্দেশ্যে সোনারগাঁও থেকে নৌকা যোগে রওয়ানা হন। উক্ত নৌকার মাঝির জানা মতে তিনি উক্ত কালী মন্দিরের কাছাকাছি স্থানে আসার জন্য বুড়িগঙ্গা নদীর সাথে সংযুক্ত এক খাল পথের শেষপ্রান্তে এসে এক গভীর জঙ্গলাকীর্ণ কিন্ত্তু এক পায়ে অবতরণ করেন। স্থানটি নির্জন লোকালয় শুন্য হওয়ায় তার খুব পছন্দ হয় এখানেই তিনি অাস্তানা নেন। আজ যে স্থানে এই মাজার অবস্থিত। এটাই সেই ভীষণ জঙ্গলাকীণৃ স্থান এবং বয়োবৃদ্ধ যারা এখনো জীবিত আছেন তারা জানেন যে, মাজার মসজিদের এই জাতীয় ঈদগাহ মাঠটি ছিল একটি খালের শেষে মাথা এবং এই খালটি দিয়েই ওলী বাংলা এইস্থানে এস নৌকা থেকে অবতরণ করেন এবং এখনও সেই কালী মন্দির সোহরওয়ার্দী উদ্যানের ভিতর পুর্ণ প্রতিষ্ঠাক্রমে দাঁড়িয়ে আছে। খ্রীষ্টিয় দ্বাদশ শতাব্দীতে রমনা গ্রামটি সংখ্যালঘু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উপসানালয় "গুরুদুয়ারা নানকশাহী " প্রতিষ্ঠিত হয়। ১১০০ খ্রীষ্টাব্দে নেপালের বদ্রীনাথ যোশী মঠ এর শংকরাচার্য স্বামী গোলাপ গিরির নেতৃত্বে একদল তীর্থ দর্শনার্থী রমনা গ্রামে আগমণ করে তথায় আস্তানা গড়ে তোলে এবং কালি মাতার মন্দির প্রতিষ্ঠাকল্পে একটি কাঠঘর মন্দির নির্মাণ করেন ও তথায় কালি পুজা শুরু হয়। ক্রমে ক্রমে এই মন্দিরে কাপালিকদের প্রাধান্য বিস্তৃত হয় এবং তারা নরবলী যজ্ঞ দ্বারা স্থানীয় নিরীহ হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও অপরাপর বসবাসকারীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেন। এই কাপালিকদের তান্ডবে সনাতন ধর্মের সৌন্দর্য্য বিলীন হয়ে গেলে গৃহী হিন্দুরা বৌদ্ধ ও বামন্য ধর্মের দিকে ধাবিত হতে থাকে। এই অবস্থায় ওলী-এ-বাংলা এই স্থানে আস্তানা গড়ে তুলেন। এই সময় এই এলাকায় ছিল উৎকট তান্ত্রিক হিন্দু গুরুবাদের প্রভাব এবং সুরাপায়ী তান্ত্রিকবাদের এই পুরোহিতরা রমনার কালি মন্দিরে উৎসর্গ করতো নরবলী। ভয়ে উৎকন্ঠায় এই গ্রামীণ মানুষগুলি যখন অস্থির ছিল তখন মানব সেবার ব্রত নিয়ে এই মহান ওলীর কন্ঠে ধ্বনিত হলোঃ আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। এই উচ্চারণে সেরাতুল মোস্তাকীম স্পষ্ট হয়ে ওঠে পথভ্রষ্ট মানবকুলের সামনে। হিজরী ৭০৪ মোতাবেক ১৩০৬ খ্রীষ্টাব্দে ওলী-এ-বাংলা এখানকার আস্তানা থেকে দ্বীন প্রচারে লিপ্ত হন। তার চরিত্র মাধুর্য্য ও শ্রদ্ধেয় পুর্ণাত্মার পরিচয় পেয়ে হিন্দু জনগণ অচিরেই তার প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে এবং দীক্ষিত হতে থাকে ইসলামের দিকে। নিজের জীবিকা নির্বাহের দুঃচিন্তা না করে তিনি এই অন্ঞ্চলে ইসলামের বাণী প্রচার করতে থাকেন। শত শত হিন্দু তার হাতে ইসলাম গ্রহণ করে। কিন্ত্তু কায়েমী স্বার্খবাদী পুরোহিতরা নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করতে থাকে তবে ওলী-এ-বাংলার কঠোর সংগ্রামে তান্ত্রিকদের তন্ত্রমন্ত্র নিষ্ফল হয় এবং এমন এক অবস্থার সৃষ্টি হয় যে কালি মন্দিরের তান্ত্রিকেরা হয় ওলী-এ-বাংলার নিকট ইসলামের ছায়া সুশীতলে আশ্রয় নেয় অথবা এই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় খ্রীষ্টীয় ত্রয়োদশ শতকে এলাকার কালিমন্দিরটি বিরান হয়ে যায় ও তা বাদুর চামচিকার আশ্রয় স্থানে পরিণত হয়। ওলী-এ-বাংলার অবস্থানের কারণে এই অন্ঞ্চলে ধীরে ধীরে মুসলিম লোকালয় গড়ে ওঠে ও ওলী-এ-বাংলার নামের চিশতী পদবীর কারণে এলাকাটি চিশতীয়া মহল্লা নামে পরিচিত হয়ে উঠে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় এই এলাকায় চিশতীয়া মহল্লার ঘর-বাড়ী মসজিদ ও কবরস্থান ছিল। খাজা সাহেবের ইন্তেকালের পরবর্তীতে নানা কারণে ক্রমে ক্রমে তা বিরান হয়ে যায়। ৬০০ বৎসর পর ১৯০৫ সালে এই স্থানে পুর্ব বাংলা প্রদেশের বড়লাটের বাসগৃহ নিমার্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করে বৃটিশ সরকার এই এলাকার কবরস্থান নিঃচিহ্ন করে গভর্ণমেন্ট হাউস নির্মাণ করে যা আজকের পুরাতন হাইকোর্টভবনরুপে দাঁড়িয়ে আছে। উল্লেখ্য ওলী-এ-বাংলার ইন্তেকালের পরবর্তীতে স্বামী হরিচরণ গিরি রমনা গ্রামের ঐ কাঠঘর মন্দির ভেংগে পাকা মন্দির এর পত্তন করলে ভা্ওয়াল রাজ মহিষী রাণী বিলাশমণি দেবী তা পাকা অতুচ্চ শিখর মন্দিরে পরিণত করেন ও তথায় বিশুদ্ধ সনাতন ধর্মীয় আচার আচরণ প্রতিষ্ঠা করেন।

ওলী-এ-বাংলা নিজ জীবদ্দশায় ইসলাম প্রচারে যে সংগ্রাম করে গেছেন তারই ফলশ্রুতিতে রমনা ছাড়িয়ে ইসলামের মহান বাণী পৌছিয়ে যায় এই এলাকার পার্শ্ববর্তী সকল জনপদে। শত শত মানুষ ক্রমে ক্রমে তার সোহবতে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এবং ইসলাম প্রচারে তার কঠোর সাধনার কারণে তিনি ওলী-এ-বাংলা নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ৩৫০ বছর পর ১৬১০ খ্রীষ্টাব্দে যদিও ঢাকা শহর প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্ত্তু ইসলাম ধর্মের গোড়া পত্তন করেন তিনি ১৩০০ খ্রীষ্টাব্দে তার জীবদ্দশাকালে। বর্তমানের বাংলাদেশে ইসলামের যে জ্যোতি বহমান তা ওলী-এ-বাংলা হযরত খাজা শাহ্ শরফউদ্দিন চিশতী (রহঃ) এর দ্বীন প্রচারের শ্রমের ফসল। এই কারণেই তার মাজার এক পুণ্যময় স্থানে পরিণত হয়েছে। মহান এই ওলী শুধু যে অজ্ঞ পথহারা মানুষদের মাঝে ধর্মীয় বাণীই পৌছাতেন তা নয় বরং তাদের সামাজিক জীবনে ইসলামের সংহতির বীজ বপন করে দিতেন। ফলে এই এলাকায় ইসলামের দরজা দিনে দনে মজবুত ভিতপ্রাপ্ত হয় যা আজো আমাদের মাঝে বিকাশমান। তিনি দীর্ঘ ৩৪ বৎসর এই এলাকায় অবস্থান করে দ্বীনের খেদমত করেন। হিজরী ৭৩৮ মোতাবেক ১৩৪০ খ্রীষ্টাব্দে ওলী-এ-বাংলা ১১০ বৎসর বয়সে আল্লাহ পাকের সান্নিধ্যে গমণ করেন (ইন্নানিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তার ভক্ত আশেকান ও মুরীদগণ চিশতীয়া মহল্লার কবরস্থানের সন্নিকটে তার হুজরার মধ্যে তাকে দাফন করা হয়। আজ সেটাই ওলী-এ-বাংলা হযরত খাজা শাহ্ শরফউদ্দিন চিশতী (রহঃ) এর মাজার শরীফ। কালক্রমে তার মাজারে বিভিন্ন উন্নতি সাধিত হয়।