(পূর্ব প্রকাশের পর)
ঘুম হতে উঠে আমি আর দেরী করলাম না। মাহিনকে না জানিয়ে আমি সরাসরি সুফী সাহেবের খানকায় উপস্থিত হলাম। তিনি খানকাতেই অবস্থান করছিলেন। তিনি আমাকে দেখে স্মিতহাস্যে বললেন
-কেমন আছো মিয়া?
-জ্বী ভালো। আপনি ভালো আছেন তো?
-তোমাকে দেখে খুব পেরেশান মনে হচ্ছে? কি ব্যাপার?
তার কথা শুনে অামি কোন কথা না লুকিয়ে কালকে রাতের সমস্ত ঘটনা আদ্যপান্ত খুলে বললাম। আমার কথা শুনে তিনি শুধু হাসলেন। তার হাসি দেখে আমি বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম কি-না জানি না-আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম তার পরণে সেই পোষাক যেটা আমি গতরাতে স্বপ্নযোগে দেখে ছিলাম। আমি কোন কিছু না ভেবে সরাসরি তার কাছে জানতে চাইলাম সেই কথাটা যেটা তিনি বলেছিলেন। আমার প্রশ্ন শুনে তিনি বললেনঃ
ঘুম হতে উঠে আমি আর দেরী করলাম না। মাহিনকে না জানিয়ে আমি সরাসরি সুফী সাহেবের খানকায় উপস্থিত হলাম। তিনি খানকাতেই অবস্থান করছিলেন। তিনি আমাকে দেখে স্মিতহাস্যে বললেন
-কেমন আছো মিয়া?
-জ্বী ভালো। আপনি ভালো আছেন তো?
-তোমাকে দেখে খুব পেরেশান মনে হচ্ছে? কি ব্যাপার?
তার কথা শুনে অামি কোন কথা না লুকিয়ে কালকে রাতের সমস্ত ঘটনা আদ্যপান্ত খুলে বললাম। আমার কথা শুনে তিনি শুধু হাসলেন। তার হাসি দেখে আমি বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম কি-না জানি না-আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম তার পরণে সেই পোষাক যেটা আমি গতরাতে স্বপ্নযোগে দেখে ছিলাম। আমি কোন কিছু না ভেবে সরাসরি তার কাছে জানতে চাইলাম সেই কথাটা যেটা তিনি বলেছিলেন। আমার প্রশ্ন শুনে তিনি বললেনঃ
লা-ইলাহা পড় কলেমা শেরকে দুই ছাড়িরে
ইল্লাল্লাহু মুখে বল মাহমুদাতে যাইরে
রঙ্গে রঙ্গ মিশাইলে খোদা কার নহে ভীন।।
লা অর্থ শুণ্যাবস্থা। ইলাহা অর্থ উপাস্য। উপাস্য হিসাবে অধিকাংশই নারী ইলাহকেই নিতে বেশি আগ্রহী হইয়া থাকে। পুরুষ ইলাহকে কেহ নিতে রাজী নহেন। নারী ইলাহ হইল-বস্তুমোহে আকৃষ্ট উপাস্য। আর পুরুষ ইলাহ হইল মোহ শুণ্যতা। র্নিমোহ বা র্নিলোভ। মনে যখন মহাশুন্যভাব বিরাজ করে তখন তা মোহশুন্য থাকে। কলেমার লা-ইলাহা বলতে যে শিরিক তথা অংশিদারীত্ব আছে তা ছাড়িয়া পড়িতে হইবে। এরপর ইল্লাল্লাহু বলতে হবে মাহমুদাতে যাইয়া। অর্থাৎ মোকামে মাহমুদা হইল সাধনা জগতের শ্রেষ্ঠতম স্থান। সেই স্থানে পৌঁছিয়া ইল্লাল্লাহু বলতে হবে। অর্থাৎ ইল্লা=ব্যতীত আল্লাহ=প্রতিষ্ঠিত ইলাহ। আর্দ ও সামা। সৃষ্টির ও মনের কেন্দ্রবিন্দুটিই হইলেন আল্লাহ। হু=তিনিত্ব। যে তিনিত্ব তোমার রংগে মিশে আছে সেই রংগে যখন তুমি ফানা হইয়া যাইবা তখন তুমি খোদা হইতে পৃথক নহে।
শুন মিয়া, কলেমা তৈয়ব্যা " লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ " হইলো পবিত্র বাক্য। এর হাক্কিকাত অনেক গভীরে। পুরো বাক্যটির মধ্যে যে শব্দগুলো রয়েছে সেইগুলো যদি বিশ্লেষণ করা হয় তাহলে কি দাঁড়ায়? লা+ইলাহা+ইল্লাল্লাহ+হু+মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ।
ইল্লাল্লাহু মুখে বল মাহমুদাতে যাইরে
রঙ্গে রঙ্গ মিশাইলে খোদা কার নহে ভীন।।
লা অর্থ শুণ্যাবস্থা। ইলাহা অর্থ উপাস্য। উপাস্য হিসাবে অধিকাংশই নারী ইলাহকেই নিতে বেশি আগ্রহী হইয়া থাকে। পুরুষ ইলাহকে কেহ নিতে রাজী নহেন। নারী ইলাহ হইল-বস্তুমোহে আকৃষ্ট উপাস্য। আর পুরুষ ইলাহ হইল মোহ শুণ্যতা। র্নিমোহ বা র্নিলোভ। মনে যখন মহাশুন্যভাব বিরাজ করে তখন তা মোহশুন্য থাকে। কলেমার লা-ইলাহা বলতে যে শিরিক তথা অংশিদারীত্ব আছে তা ছাড়িয়া পড়িতে হইবে। এরপর ইল্লাল্লাহু বলতে হবে মাহমুদাতে যাইয়া। অর্থাৎ মোকামে মাহমুদা হইল সাধনা জগতের শ্রেষ্ঠতম স্থান। সেই স্থানে পৌঁছিয়া ইল্লাল্লাহু বলতে হবে। অর্থাৎ ইল্লা=ব্যতীত আল্লাহ=প্রতিষ্ঠিত ইলাহ। আর্দ ও সামা। সৃষ্টির ও মনের কেন্দ্রবিন্দুটিই হইলেন আল্লাহ। হু=তিনিত্ব। যে তিনিত্ব তোমার রংগে মিশে আছে সেই রংগে যখন তুমি ফানা হইয়া যাইবা তখন তুমি খোদা হইতে পৃথক নহে।
শুন মিয়া, কলেমা তৈয়ব্যা " লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ " হইলো পবিত্র বাক্য। এর হাক্কিকাত অনেক গভীরে। পুরো বাক্যটির মধ্যে যে শব্দগুলো রয়েছে সেইগুলো যদি বিশ্লেষণ করা হয় তাহলে কি দাঁড়ায়? লা+ইলাহা+ইল্লাল্লাহ+হু+মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ।
লা
অর্থ নাই বা নাস্তি
অর্থাৎ মহাশুণ্য অবস্থা।
ইলাহ
অর্থ উপাস্য। যার উপাসনা করা
হয়। উপ+আসন। উপ
অর্থ নিকটে আর আসন
অর্থ বসা।
ইল্লা
অর্থ ব্যতীত। ছাড়া।
আল্লাহ=আল + ইলাহ। প্রতিষ্ঠিত
ইলাহ। আর্দ ও সামা।
সৃষ্টির ও মনের কেন্দ্রবিন্দুটিই
হইলেন আল্লাহ।
হু=তিনিত্ব বা নামপুরুষ। সর্বনাম
পদ।
মোহাম্মাদুর
রাসুল্লাহ= মোহাম্মদ আল্লাহর রাসুল। কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার
যে পদ্ধতি তাহা যিনি
নিজের জীবনে পদ্ধতিস্থ করিয়াছেন
তিনিই রসুল। কোরানের পরিভাষাগত
অর্থে আল্লাহর প্রতিনিধি অথবা কোন নবীর
মনোনীত প্রতিনিধি নবীর প্রতিনিধিত্ব করা
আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করার শামিল। হা্ক্কীকাতে
নুরী মোহাম্মদী হচ্ছে- Divine character and
qualities attained in the person of a Muhammad is Noore Muhammad i. যে কোন একজন
মোহাম্মদ দ্বারা অর্জিত স্বর্গীয়
চরিত্র এবং গুণাবলীকেই "নুরে
মুহাম্মদী" বলে। আল্লাহর আপন
চরিত্রই সৃষ্টির মধ্যে মহা গুরুর
অভিব্যক্তিরুপে যুগে যুগে যে
সকল বিকাশ হইয়া থাকে
তাহাই নুরে মুহাম্মদী। নুরে
মোহাম্মদী বিকাশ লাভের জন্যই
সমগ্র সৃষ্টির প্রয়োজন হইয়াছে। বুঝছো নি মিয়া? তিনি আবার বলা শুরু করলেনঃ
মোহাম্মদ মোস্তফা জানে আপে খোদা নিরন্ঞ্জন
খোদে খোদাতায়ালা জানে মোস্তফা কেমন জন।
মোহাম্মদ মোস্তফা জানে আপে খোদা নিরন্ঞ্জন
খোদে খোদাতায়ালা জানে মোস্তফা কেমন জন।
আল্লাহ
তাহার যাত (ওয়াজুদুল-মুতলাক)
হইতে পর্যায়ক্রমে সিফাতে (গুণাবলী) ভুষিত হইয়া নিজেকে
প্রকাশ করিয়াছেন। এই প্রকাশকে তানাযুলাত
(অবতরণ) বলা হয়। অসংখ্য
সৃষ্টির মধ্যেও তাই তাহার
স্বত্তার একত্ত্ব বিদ্যমান। ওয়াজুদুল-মুতলাক্ক স্তরের অর্ন্তমুখী স্বরুপাবস্থাকে
'আমা' (অন্ধকারময়-কুহেলিকা) বলা হয় এবং
বর্হিমুখী স্বরুপাবস্থাকে 'আহাদিয়াত' বলা হয়। হাদীছে
কুদসীতে আছেঃ কুনতু ক্কানযাম
মাগফিয়ান ফা আহবাবতু আন
ওয়ারাফা, ফা খালাক্কতুল খালক্ক
(অর্থাৎ আমি গুপ্ত ধনভান্ডার
ছিলাম। আমার ইচ্ছা হইল-নিজেকে প্রকাশ করিব।
তাই সৃষ্টি করিয়াছি)।
কিভাবে?
ওয়াহদাত
বা হাক্কীকাতে মুহাম্মদীয়ার মাধ্যমে প্রকাশিত হইয়া অতঃপর সৃষ্টির
ভিতর দিয়া প্রকাশিত হইয়াছেন। রাসুলুল্লাহ
বলিয়াছেনঃ" আউয়ালু খালাক্কাল্লাহু নুরী।
আনা মিন নুরুল্লাহি ওয়া
কুল্লু শাইইম মিন নুরী
(অর্থাৎ সর্বপ্রথম আল্লা আমার নুর
সৃষ্টি করেন। আমি আল্লাহর
নুর হইতে এবং বিশ্বজগৎ
আমার নুর হইতে )।
ওয়াহদাত
পর্যায়ে দুইটি অবস্থা বিদ্যমান
থাকেঃ হু-ইয়াত (তিনিত্ব)
এবং আনি-ইয়াত(আমিত্ব)। স্রষ্টা
যখন সকল ব্যক্তিস্বত্তার শৃংখল
হইতে মুক্ত হইয়া একটি
নির্দিষ্ট সত্ত্বামুখী হইয়া গভীর ধ্যানমগ্ন
থাকেন তখনই এই স্তর
আসে এবং যিক্কর-কালে
হু শব্দে ইহাই ব্যক্ত
হইয়া থাকে। মাখলুক্কের সামনে
স্রষ্টা যখন নিজ সত্ত্বার
দিকে ইঙ্গিত করেন, তখন
'আনিইয়াত' স্তর প্রকাশ পায়। আনিইয়াত হইলঃনিজ রুপ প্রকাশের অভিব্যক্তি।
এরপর আসে ওয়াহদিয়াত।সৃষ্টির
সকল স্তরই আল্লাহর একত্বের
বিভিন্ন প্রকাশ। এই ওয়াহদিয়াত স্তরে
আল্লার যাতপাকে যখন প্রধানগুণাবলী যথা
হায়াত, আক্কল,কুদরত,ইরাদাত,সামায়াত,বাসারাত এবং কালাম বর্তে
তখন তাহাকে লাহুত (ঐশ্বীত্ব)
মাকাম বলে। এরপর যখন
উহাতে কর্মক্ষম গুণাবলী যথাঃ সৃষ্টিকরা, জীবিত
করা, মারিয়া ফেলা ইত্যাদি
বর্তে তখন উহাকে জাবারুত
(ক্ষমতা) মোকাম বলে। আত্মার
জগতে যখন এই জাবারুত-শক্তি প্রকাশিত হয়
তখন তাহাকে 'আলমে মালাকুত' (ফেরেস্তার
জগৎ) এবং বস্তু জগতে
যখন ইহা প্রকাশ পায়
তখন ইহাকে আলমে-নাসুত
(সৃষ্ট জগত) বলে। তাহলে দেখা যাইতেছে যে, রুহ তিন প্রকার। রুহে হায়ওয়ানী(জীবাত্মা) বা নফসের জগত, রুহে ইনসানী(মানবাত্মা), রুহে কুদ্দুস(বিশ্ব আত্মা)। মৃত্যুর পর জীবাত্মা বিলুপ্ত হয় কিন্ত্তু মানবাত্মা বিশ্ব আত্মার নিকট ফিরিয়া গিয়া মিলিতে চেষ্টা করে। মানবাত্মা বিশ্ব আত্মার সিফাত, যদ্বারা তাহার যাত প্রকাশিত। ইহা মানবের নিকট আমানত স্বরুপ গচ্ছিত আছে। এই সিফাতের মাধ্যমেই আল্লাহর যাতে মিশিতে হয়। সিফাতই আল্লাহর আকৃতির রুপ। যেমন আকৃতিবিহীন তড়িতের গুণই তাপ ও আলো। ঐশীগুণ হারাইয়া মানবাত্মা বিশ্বআত্মায় মিলিতে না পারিলে প্রেতাত্মা হয়। ইহাই 'আযাবুল কবর'। মানুষের মধ্যে আল্লাহ নিজ আত্মার অংশ সিফাত রুপে দিয়াছেন যেন মানুষ তাহার প্রেমাসক্ত হইয়া তাহাতে ফানা হয়। মানবাত্মাকে পুষ্ট করার জন্যই ইবাদত। আল্লাহ নিজ রুপের প্রশংসাকারী হইবার জন্য মানুষের মধ্যে প্রবিষ্ট আছেন। ইহাই প্রেম। এইজন্য ইবাদতে প্রেমই দরকার।
(চলবে....)