পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১৬

মনা পাগলার মৌনতা........এবং শেষ পর্ব

(পুর্ব প্রকাশের পর)

অাজহারের সম্ববিৎ ফিরে এল মনার অন্য আরেকটি কথায়। মনা বলছেঃ

মানব দেহ আধ্যাত্মবাদের এক অপরিসীম ভান্ডার। এই দেহের মধ্যেই আছে সবকিছু। গুরু ধইর‌্যা না জানলে এবং সাধন পদ্ধতি না জাইন্যা সাধন করলে হিতে বিপরীত অইতে পারে। কারণ আধ্যাত্মবাদ কোন ছেলেখেলা নয়। এইডা কোন মামুলী ব্যাপার না। দেহসাধনের লিগ্যা গুরু ধইর‌্যা দেহের লতিফা, মোকাম-মন্ঞ্জিলগুলি চিইন্ন্যা তারপর হেইডা সাধন ভজন করণ লাগে। সুফীবাদের সাধন অনেক কঠিন ব্যাপার। সুফীবাদের সাধন পদ্ধতি অইলোঃ তাজকিয়ায়ে নফস...নফসের পরিশুদ্ধতা অর্জন। আর মান আরাফার সাধন ভজন অন্য জিনিস। মান আরাফার সাধনও দেহের জন্য গুরুত্বপুর্ণ। আপনে যুদি আপনের দেহডার মইদ্যে যে লতিফা (অালোককেন্দ্র) গুলি আছে হেইগুলি চিনবার চান, মোকাম (ঘর বা স্থান) গুলি দেখবার চান, তাইলেই সাধনের প্রয়োজন অয়। আর যুদি মনে করেন দরকার নাই, তাইলে আপনে যে ইবাদত বন্দেগী করবেন, হেইডা অইবো অন্ধের মতন। মাইনে নিরাকার আল্লাহর ইবাদত। নিরাকার মাইলে ন আকার। আকারহীন। ভাইরে, নিরাকার আল্লাহও রবরুপে আপনেরে সাহাইয্য করবো সহায়তা করবো। কোন কমতি অইবো না। কিন্ত্তু আপনে হের দীদার লাব করতে পারবেন না। যেম্ তে আইছেন, হেম্ তেই যাইবেন গা। যুগ যুগ ধইর‌্যা আইবেন আর যাইবেন।

-কিন্ত্তু নিরাকার আল্লাহতো কোরআনেই উল্লেখ আছে...

-ভাইরে আছে। এইডা প্রাথমিক জ্ঞান। তারপর বিশেষ জ্ঞান। বিশেষ রাস্তা..ওয়া জায়ালনা মিনকুম শিঁরাতাও ওয়া মিনহাজ একটা শরীয়ত তথা আইন-কানুন আর একটা অইলো মিনহাজ বিশেষ পথ। এই বিশেষ পথটাই অইলো তরীকত..তরক থিক্ক্যা তরীকত। আর শেষে তে হরফ থাকায় হেইডা দিয়া বুঝায় তৌহিদ মাইনে একত্ববাদের রাস্তা....লা মওজুদা ইল্লাল্লাহ...আল্লাহ ছাড়া কিছুই নাই সবই আল্লাহ। আল্লাহু কুল্লিশাইয়িন মুহিত। তার মাইনে অইলো...জগতটাই আল্লাহময়...
ভাইরে এই দেহডা পন্ঞ্চ উপাদান দিয়া আল্লাহয় বানাইছে। হেইগুলি কি কি? হেইগুলি অইলোঃ আব আতশ বাত খাক ও নুর। এইগুলি অইল এক একটা আল্লাহ। সৃষ্টির উপাদানগুলিতো আল্লাহর বাইরে নয়। আল্লাহর মইদ্যেই। যুদি বাইরে থিক্ক্যা আনতো, তাইলে না হয় বুঝতাম আল্লাহর রাজ্যের বাইরেও আরেকটা জগত আছে। আল্লাহর বাইরে কোন জগতের অস্তিত্ব নাই। যুদি না থাকে তাইলে হেই উপাদানগুলিও আল্লাহর। নামরুপ ধইর‌্যা ভিন্ন নামকরণ করা অইছে। এইগুলিরে কয় ফকিরি ভাষায় পন্ঞ্জ অযুদ। পাক পান্ঞ্জাতন। পাক মাইনে পবিত্র। অযুদ মানে দেহ। পন্ঞ্জ অযুদ মানে পাঁচটা পবিত্র দেহ। তন মানেও দেহ। তাইলে পন্ঞ্চ দেহ লইয়্যা পাক পান্ঞ্জাতন। মুহাম্মদ,আলী, ফাতেমা হাসান, হোসাইন।
এইগুলি লইয়্যাই আল্লাহর পরিবার। কোরআনে হেগো লইয়্যাই নাহনু তথা আমরা শব্দটা ব্যবহার অইছে। সৃষ্টির সাথে সম্পর্কিত যত আয়াতই আছে সব জায়গাই নাহনু ব্যবহার অইছে। কিন্ত্তু একত্ববাদের ক্ষেত্রে অানা শব্দ ব্যবহার করছে। এই তৌহিদে শুধুই তিনিই। এই জগতটারে কয় হুইয়াত বা তিনিত্ব.......অাইনিয়াত থেকেই হুইয়াত আমিত্ব থিক্ক্যা তুমিত্ব..
আলিফ লাম মিম...অানা লতিফা মুনজিল আমি তুমি সে....

আজহার মনা পাগলার কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গেল। কি বলবে-কিছুই বুঝতে পারছে না। সে তো এই কথা নতুন শুনছে। কখনো পড়েওনি কিংবা চিন্তাও করেনি। আর চিন্তা করার অবকাশ কোথায়? চার পাশ থেকে যে ভাবে টিভি চ্যানেল হচ্ছে আর প্রতিটি চ্যানেলের মধ্যে ধর্মবিশারদরা যেভাবে এই মাজার পন্থিদের গালাগাল করছে তাতে মনা যে সত্য বলছে না মিথ্যা বলছে তা যাচাই বাছাই করাও মুশকিল। মুলতঃ টিভি চ্যানেলের ধর্মীয় বক্তৃতা বিবৃতি শুনে মানুষ জন বিভ্রান্তে পতিত হবে সহজেই। কারটা বিশ্বাস করবে? শহরের অনেকেরই পক্ষে সম্ভব হয় না কোরআন পড়া কিংবা হাদীছ শরীফ দেখা। সত্য-মিথ্যা যাচাই বাছাই করার সুযোগ কোথায়? তারা ধরেই নিয়েছে মোল্লারা যা বলছে তা সবই সত্য।

রাত অনেক গভীর হয়েছে...শুধু কথা বলতে বলতেই ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে তারা। চারদিকে কেমন সুসান নীরবতা নেমে এসেছে। এর মধ্যে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক আর দুর থেকে ভেসে আসা শেয়ালের ডাক...মাঝে মাঝে দু চারটা কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ সম্পুর্ণ পরিবেশটাকে করে তুলেছে মায়াময়..সেই মায়াময় পরিবেশটা তাদেরকে শেখাচ্ছে কিছুটা উপলব্দি করার ক্ষমতা...কে তৈরী করলো এই মায়াময় পরিবেশ....কে তাদের শিখিয়েছে...ভোরের আলোয় বিকশিত হবার সাথে সাথে রাতের এই পরিবেশটা তৈরী করা...এম্মনিতেই বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা বিধৌত পরিবেশ পরিশেষে রাতের আবেশ...একটা ঘুম ঘুম ভাব এম্মনিতেই চলে এসেছে...আজহার বললো

-মনা ভাই চলুন ঘুমিয়ে পড়ি...সকালে আবার শুরু করা যাবে

-কিরে ভাই কইলেন হারা রাইত কতা কইবেন....আর এহন দেহি ঘুমাইতে কইতাছেন...আসল কতা তো এহনও কই নাই...

-ভাইরে আপনের আসল কথা শুননের ইচ্ছা থাকলেও আর পারছি না...ক্লান্তিতে ঘুম চলে আসছে...পরে আবার শুরু করা যাবে।

আজহার মনা পাগলার বিছানা ঠিক করে দিয়ে ঘুমাতে চলে গেল। আর মনা তার বিছানায় শুয়ে ভাবছে তার গুরুর কথা.....তার ধ্যানের কথা....
"হারিয়ে আপন করিবে ধ্যান
মিলিবে আপন সোনারই বরন।।
অনন্ত জীবন পাইবে আপন
মরন কখন হবেনা তোমায়।।"

মনা তার সর্বস্ব অর্পণ করার কথা চিন্তা করে ধ্যানের গভীরে হারিয়ে যেতে চাইছে...

মিনকালকুল বিকাল কুল ইলাইকাল কুল ইয়া কুল্লুল কুল। হে সবের সব তোমাতেই সব। তুমিই সব তোমার দিকেই সব।
মনা যখন ধ্যানের গভীরে হারিয়ে গেল ঠিক তখনই মনা দেখলো তার পাশে তারই মতো দেখতে অবিকল চেহারার কেউ একজন তার পাশেই বসে আছে। তা দেখে মনা সজোরে চিৎকার করে উঠলো....ওরে বাবারে....

রবিবার, ২২ মে, ২০১৬

মনা পাগলার মৌনতা...এবং সপ্তম পর্ব

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)

মনা এবং আজহার বেশ নিশ্চুপ হয়ে আছে। এদিকে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতের আঁধারে তলিয়ে যাচ্ছে সময়। চারিদিকে সুসান নীরবতা। আর ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। একচিলতে হ্যারিকেনের আলোয় পরিবেশটাকে কেমন যেন অচেনা করে তুলেছে। মনা তার পোটলা থেকে একটা ছবি বের করলো। তারপর সেটার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইল একদৃষ্টিতে। কোন দিকেই তার দৃষ্টি যাচ্ছে না। সেই দৃষ্টিতে দেখা গেল একচিলতে বারিধারা। সিক্ত এ বারিধারা তার কপোল বেয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে। আজহার এ দৃশ্য দেখে অভিভুত হয়ে পড়লো। কিয়ের সে নিরাকারের চিন্তা করবে..পাগলের এ প্রেম দেখে আজহার আত্মহারা হয়ে গেল। সে মনাকে জড়িয়ে ধরে বললোঃ

-ভাই এইটা কার ছবি?

মনা চোখ মুছতে মুছতে বললোঃ

-আমার গুরুর ছবি।

আজহার কিছুক্ষণ ছবিটির দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু বললো না। সে ভেতর বাড়ির দিকে চলে গেল। আর মনা সেই মনোরম পরিবেশে গুরুর ছবির ধ্যান করতে মনোনিবেশ করলো। কতোক্ষণ এভাবে ছিল-সে খেয়াল নেই। তাকে আজহার ডাকলো

-মনা ভাই..ও মনা ভাই...

-জ্বি...

-খাবেন। চলেন। আগে খেয়ে নেই। তারপর আবার বসা যাবে। 

মনা তার জিনিসপত্রগুলো গুচ্ছিয়ে রাখলো। তারপর একটা পাত্রে পানি দিয়ে নিজের হাতটা ভালোভাবে পরিস্কার করে ধুইলো। এরপর সে ও আজহার একসাথে খেতে বসলো। রমিজ একটা বলে করে ভাত নিয়ে এসেছে। সাথে একটা বাটিতে ঢেরসভাজি, ডিম ভাজা এবং ডাল নিয়ে এসেছে। রমিজ ভাত দিতে দিতে বললোঃ

-দাদা, তোরা কি সারারাত কথা কবি?

-বলতে পারি। ক্যান তোর কি কোন সমস্যা আছে?

-নাহ্। আমারও শুনতে ইচ্ছে করে। 

-তোর শোনার দরকার নেই। ব্যাস আর দিস না। মনা ভাইরে দে...

রমিজ মনার প্লেটটা নিয়ে তাতে ভাত তরকারি দিতে লাগলো। ভাত বেশি দেখে মনা...হা..হা...করে উঠলো। 

-আরে সর্বনাশ। ভাত আরো কমাইয়্যা দেও। 

মনা, আজহার আর রমিজ খাবার শেষ করে প্লেটগুলো গুছগাছ করে উঠিয়ে রাখলো। তারপর সেগুলো ভেতর বাড়িতে নিয়ে গেল। আসার সময় রমিজ চা নিয়ে এল। সেই গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে মনা আজহারের দিকে তাকিয়ে বললো

-বাই কি সত্যই সারারাইত কতা কইবেন?

-বলবো না মানে? দেখেন না কি করি...

-পারবেন তো

মনা হেসে বললো। তারপর দুজন আবার আয়েশ করে বসে পুর্বের কথায় ফিরে গেল। রাতের পরিবেশের সাথে তাদের কথা-বার্তার পরিবেশ এমনটাই মানিয়ে গেল যে আজহারের মনে হলো সে যেন এমন একটা পরিবেশের জন্যই অপেক্ষা করছিল। যার কাছ থেকে কিছু জানতে পারবে। যে জানাতে পারবে। অন্যদিকে মনার মনে হচ্ছিল তাকে এমন করে কেউ কখনো ডেকে আদর যত্ন করে খাওয়ায়নি..এমন আরামদায়ক বিছানায় ঘুমাতে পারবে...সেটা ছিল তার কাছে স্বপ্নের চেয়েও বেশি কল্পনাতীত। সে ভাবতেই পারছে না..দয়াময় কি খেলা খেলতে চাচ্ছে তার সাথে..

-কি চিন্তা করলারে ভাই...কিছুইতো কইল্যা না...

-আসলে চিন্তা কইর‌্যা কোন দিক-নির্দেশনা পাচ্ছি না...কোরআন মতে একবার মনে হয় সে নিরাকার। আবার মনে হয় সে আকার..

-আসলে তুমি এইভাবে চিন্তা কইর‌্যা কোনদিনও সঠিক নির্দেশনা পাইবা না...একটা বীজের কথা চিন্তা কর। এই বীজের উৎপত্তি অইলো কোথা থিক্ক্যা? কেমতে আইলো এই বীজের উপাদান? কৈ থিক্ক্যা ওর উপাদানগুলি পাইলো? এই দুনিয়ার কথাই ধরো না....অনেকেই কয় পন্ঞ্চ উপাদানে এই দুনিইয়্যা সৃষ্টি...এই উপাদানগুলি আল্লাহয় পাইলো কোইথিক্ক্যা? হেইডা চিন্তা করছো?

-হুম...সবকিছুই আল্লাহর মধ্যেই ছিল...

-কেমতে ছিল...

-সেটাতো বলতে পারবো না...সেটা তো বলা কারো পক্ষে সম্ভবপর না...

-তাই? তাইলে একটা হাদিছ হোনো। হাদিছে বলতাছে আবিদারা নামক এক সাহাবা একবার রাসুলপাকরে কইলোঃ "ইয়া রাসুল্লাহ (সাঃ) সৃষ্টির পুর্বে আল্লাহ পাক কোথায় আছিল? উত্তরে মহানবী (সাঃ) কইলোঃ সৃষ্টির শুরুতে আল্লাহ পাক আল-আমা নামক একটা কুয়ায় (অন্ধাকারাচ্ছন্ন কুয়াশা) কুচ্ঝটিকারুপে ছিলেন।" তাইলে নবী কইলো কেমতে? হেয় যদি আল্লাহর পরে সৃষ্টি অয়, তাইলে তারতো সৃষ্টির আগের কতা জাননের কতা না? আবার ধরেন আল্লাহ যহন আদমরে বানাইছে হেইসময়তো মহানবী (সাঃ)-র জন্মও অয় নাই। তাইলে কেমতে কইলোঃ "আমি তহনও নবী ছিলাম যহন আদম মাটি ও পানির মইদ্যে মিশ্রিত ছিল।" আবার আল্লাহ পাক নিজেই কইতাছেঃ"কুনতু কানজাম মাখফিয়ান ফা আহবাবতু আনউরাফা ফা খালাকতুল খালক।" আমি অন্ধকারাচ্ছন্ন একটা কুপে গুপ্তছিলাম। নিজেরে প্রকাশের ইচ্ছায় সৃষ্টি করলাম।

-মনা ভাই..আপনে যে কথাগুলো হাছিস হিসেবে বলছেন, সেটার উৎস কোথায়? অর্থাৎ কোথা থেকে বলছেন? আপনি কি কারো কাছ থেকে শুনে বলছেন? না কোন বই পুস্তকে পেয়েছেন?

-বই পুস্তকেও পাইছি আবার মাইনশের কাছ থিক্ক্যাও হুনছি। আপনে যদি বিশ্বাস না করেন তাইলে আমি আপনেরে দেহাই ।আমার কাছে প্রমাণ আছে। এই দেহেন...মনা একটি বই আজহারের দিকে বাড়িয়ে দেয়

আজহার বইটা হাতে নেয়। বইটির নাম সুফীবাদ ও চার তরীকার পীর। লেখক এম.খলিলুল্লাহ। অনেক পুরোনো বই। পাওয়া যাবে কি-না সন্দেহ। কারণ বইটির আর কোন প্রকাশনা বের হয়েছে বলে জানা নেই। মনা বইয়ের ভাজ করা পৃষ্ঠাটা আজহারের দিকে এগিয়ে দিতেই দেখে...৩৯নং পৃষ্ঠায় মনা যা বলেছে তা ঠিকই উল্লেখ করা আছে। পার্থক্য হলো মনা বলেছে চলিত ভাষায় অর্থাৎ তার কথিত ভাষায় আর বইয়ে আছে সাধুভাষায়।

-ঠিক আছে। আসলে আমিতো তেমন জানি না। তাছাড়া ধর্মের ব্যাপারে আমার জানার আগ্রহ আছে। কিন্ত্তু পুরোপুরি জানিনা। তাই মাঝে মাঝে কারো দেখা পেলে কথা বলতে ইচ্ছে করে। জানতে ইচ্ছে করে সত্য কিছু...

-তাইলে তো আপনের কাছে গভীর কতা কওন যাইবো না..আপনে তো বুজবার পারবেন না...তহন আবার আমার ঝামেলা অইবো..

-না না একেবারেই যে জানি না...তা না। কিছু না কিছুতো জানিই...আর যা জানি তা আপনের মতো অত চিন্তা করে দেখি নাই...তাই হয়তো বুঝতে কষ্ট না হলেও চিন্তা করছি...ভাবছি.....বীজের কথা বলছিলেন

-আইচ্ছা বীজের কতা বলছিলাম...বীজটা কি? একটু ভাইব্যা দেহেনতো...এই একটা লাউয়ের বিচির কতাই ধরেন না...এই বিচির মইধ্যে কতো অগণিত লাউ প্রচ্ছন্নভাবে আছে..হেইডা কি কেউ গইন্ন্যা কইতে পারবো? মানুষের বীজের কথাই ধরেন না...একটা বীজের মইধ্যে অগণিত মানুষ...একটা মানুষের মইধ্যে কি আছে? তার মইধ্যে আল্লাহ আছে। আছে ছয় লতিফা...আছে... মোকাম..মন্ঞ্জিল...আছে আকল...নকল...অারো কতো কি?

মনার মুখে একথা শুনে আজহার একেবারেই হা হয়ে গেল। সে কখনো মানববীজ সর্ম্পকে এভাবে ভাবেনি। আজহার এই বীজের গভীরের কথা শুনে আবারো অপলক দৃষ্টিতে মনার দিকে তাকিয়ে রইলো।
(চলবে)

শনিবার, ২১ মে, ২০১৬

মনা পাগলার মৌনতা....এবং ষষ্ঠ পর্ব

(পুর্ব প্রকাশের পর)

অামি আমার ছুরতে আমার বন্ধুকে দেখলাম
না বন্ধুকে নয়, স্বয়ং আল্লাহকেই দেখলাম।।

দেহেন নিজের ছুরতে নিজেরে দেহা মানে হক্করে দেহা। রবরে দেহা। রব আপনের ভিতরে প্রচ্ছন্ন অবস্থায় ঢাকা পইড়্যা আছে। হেরে জাগাইয়্যা তুলেন। উমের মুরগী দেকছেন? উমের মুরগী কি করে? কতোগুলি ডিমরে লইয়্যা উম দেয়। হেই উমে ডিম থিক্কা বাচ্চা বাইর অয়। ঠিক হেই রকম কইর‌্যা কলবের জিকির করেন। তাইলে দেকবেন কলবের ভিতর যে বইয়্যা রইছে, হেয় বাহির অইয়্যা আইব। হের কতা আপনে হুনতে পারবেন। হেয় কতা কয়। হেরে ডাইক্যা বাইর কইর‌্যা আনেন। হের পর হেয় আইয়্যা আপনের সামনে খাড়াইব। হেয় যেই ছুরত লইয়্যা খাড়াইব, হেইডাই আহসান ছুরত। হাদিছে আছে না "কুলুবুল মোমিনীনা আরশু আল্লাহ"। মোমিনের কলব আল্লাহ পাকের আসন। মোমিন কেডা? মোমিন অইলো হেই ব্যাক্তি যে আল্লাহ পাকের ইবাদত বন্দেগী করতে করতে আল্লাহওয়ালা অইয়্যা যায়। হাদিছে কুদছিতে আছেঃ
"লা ইয়ালো আবদী ইয়াতাকাররাবু ইলাইয়া বিন মাওয়াফিল হাত্তা উহিববোহু ফা ইযা আহবাবতুহু কুনতু সামউহুল লাজি ইয়াস মাউবিহী ওয়া বাসারুললাজী ইউবসেরুবিহী ওয়া ইয়াদুহুল লাতি ইউবতেশু বিহা ওয়া রিজলুহুল লাতি ইয়ামশী বিহা।" মানি অইলো আল্লাহ তার নিজ জবানে কইতাছেঃ যহন আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত কইর‌্যা আমার নৈকট্য লাব করে তহন আমি তারে ভালোবাসি আর আমি তারে ভালোবাইস্যা তহন আমি হের কান অই যেইডা দিয়া হে হুনে তার চোক অইয়্যা যাই যেইডা দিয়া হে দেহে। আর হের আত অই যেডা দিয়া সে ধরে। হের পা অইয়্যা যাই যেইডা দিয়া হে হাঁটাহাঁটি করে। তার মানি অইলো মানুষের মইদ্যে আর হের মইদ্যে কোন পার্থক্য থাকে না। মানুষ হের গুণাবলী অর্জন কইর‌্যা ক্ষণিকের জন্য অইলেও আল্লাহময় অইয়্যা যায়। বুঝবার পারছেন। হেরে দেহা আর আল্লাহরে দেহার মইদ্যে কোন পার্থক্য থাকে না। হের চেহারাই আল্লাহর চেহারা। ফাছাম্মা ওয়াজহুল্লাহ। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) হেই গুণাবলী অর্জন কইর‌্যাই বলছিলঃ মানরানী ফাক্কাদ রায়াল হাক্কা। যে আমারে দেকলো হে আল্লারে দেকলো। 

সাধারণ মানুষের কাছে এইডা বিশ্বাস অইবার চায় না এই কারণে যে, হেরা একবার আকাশের দিকে চায় একবার গাছ গাছালি, পাখ পাখালির দিকে চায় আর মনে মনে চিন্তা করে, হেয় কেমতে আল্লাহ অয়? হেয়তো আমাগো মতোই দেকতে? হেয়তো বিয়া করছে। আল্লাহতো বিয়া শাদী করে নাই। তার কোন ছাওয়াল পাওয়ালও নাই। হেয় যদি আল্লাহ অয়, তাইলে সাত আসমানের উপরে যে, হে কেডা? তাছাড়া সুরা ইখলাসে তো আল্লাহ কইছেঃ কুল হু আল্লাহু আহাদ। আল্লাহু সামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইয়ুলাদ। ওয়া লাম ইয়্যাকুল্লাহু কুফু ওয়ান আহাদ। কও আল্লাহ আহাদ। আল্লাহ সামাদ। এইহানে আল্লাহ পাইলেন দুডা। একজন আহাদ। আরেকজন সামাদ আল্লাহ।

-মানে কি? আল্লাহতো এক। সে বহু হয় কিভাবে? আর আপনি যা বলছেনঃ আল্লাহ আহাদ এবং আল্লাহ সামাদ? এইটাতো পুরোপুরি শেরেক। আপনি আল্লাহকে ডিভাইডেড করার চেষ্টা করছেন। এটা মহাপাপ। আল্লাহ পাক বলেছেনঃ তিনি সব কিছু মাফ করবেন। কিন্ত্তু কেউ যদি তার সাখে শেরেক করে তাকে তিনি কোন মতেই মাপ করবেন না। কারণ শেরেক করা কবিরাহ গুণাহ...

-ভাই, আপনেগো লগে আর আমাগো লগে পার্থক্য অইলো এই জায়গায়। আপনেরা নিরাকার আল্লাহকে বিশ্বাস করেন কিন্ত্তু সাকার আল্লাহতে বিশ্বাস করেন না। অথচ হাদিছে আছেঃ আল্লাহ বলেনঃ হে মানুষ আমি অন্নহীন ছিলাম তোমরা আমারে অন্ন দেওনি। আমি বস্ত্রহীন ছিলাম তুমি আমারে বস্ত্র দেওনি। আমি পিপাসার্ত ছিলাম। তুমি আমারে পানি দেও নাই। মানুষ কয়ঃ হে আল্লাহ, তুমিতো নিরাকার। তুমারে কেমতে পানি খাওয়ামু? কেমতে ভাত খাওয়ামু? আর হেইডা হুইন্যা আল্লাহ কয়ঃ তুমি যুদি কোন পিপাসার্তকে পানি খাওয়াইতা তাইলে আমি খাইতাম। তুমি যুদি কোন ক্ষুদার্তকে খাদ্য দিতা তাইলে আমি খাইতাম। বাই, এইহানে দেহেন আপনে যারে নিরাকার কইতাছেন, হেয় কইতাছে কোন ক্ষুদার্থ মানুষরে খাওয়াইলে হেয় খাইতো। খাইলো মানুষ। কইলো আল্লাহ আমি খাই। এহন আপনে দেহেন নিরাকার আল্লাহ সাকার আল্লাহতে আইস্যা খাওয়া খাদ্য খাইলো মানুষের রুপ ধইর‌্যা। নিরাকারের তো কোন মুক নাই। খাইবো কেমতে? তারে খাইতে অইলে আকার ধইর‌্যাই খাইতে অইবো? কি কন আপনে?

-হুম। ব্যাপারটা একটু চিন্তার বিষয়...

-বাই, সব কিছুতেই চিন্তার বিষয়। আল্লাহ পাক বলছেনঃ চিন্তাশীলদের জন্য রয়েছে বিশেষ নিদর্শন।

আজহার মনার কথা শুনে কিছুটা চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। নিরাকার আল্লাহকে সকলেই বিশ্বাস করে। কিন্ত্তু বিপত্তি ঘটে সাকার আল্লাহ পাকের ক্ষেত্রে। কারণ ইসলাম ধর্মে নরোত্তরোপ করা নিষেধ। অর্থাৎ আল্লাহর হাত পা নাক মুখ চোখ ইত্যাদি আছে সেটা করা যাবে না। সেটা যদি করা নিষেধ হয় তাহলে যে হাদিছের কথা মনা বললো সেটার ব্যাখ্যা কি হতে পারে? অন্নহীনকে অন্নদান,বস্ত্রহীনকে বস্ত্রপ্রদান, পিপাসার্তকে পানি প্রদান করা এবং তা ব্যবহার করা কিভাবে সম্ভবপর? মানুষ খাইলে আল্লাহ বলে তাকে খাওয়ানো হলো। বস্ত্র দিলে বলা হলো আল্লাহকে দেওয়া হলো। কিন্ত্তু তিনিতো প্রয়োজনহীন। তার কোন কিছুরই অভাব নাই। তাহলে তিনি এ কথা কেন বললেন? এর ব্যাখা কি হতে পারে?

আজহারকে এভাবে চিন্তা করতে দেখে মনা মুচকি মুচকি হাসছে। 
(চলবে)

বুধবার, ১৮ মে, ২০১৬

মনা পাগলার মৌনতা.....এবং পঞ্চম পর্ব

(পুর্ব প্রকাশের পর)

লোকটি মনাকে শক্ত করে ধরে আছে। যেন মনা কোন দাগী আসামী। পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। মনা এক সময় একটু ক্ষেপে গিয়ে বললোঃ

-দুক্কু পাই। হাত ছারেন। আমি কি পলাইয়্যা যামু গা....

-ও সরি...আসলে আপনাকে দেখার পরই মনে হয়েছে আমি যেন আপনার মতো কারোর জন্য অপেক্ষা করেছিলাম।

-ভাইরে আমি সাধারণ পাগল মানুষ। আমারে লইয়্যা মাতামাতি করলে কোন লাব অইবো না। আমি কিছুই জানি না।

-যেটুকু জানেন, সেটুকুই আমার কাজে লাগবে। চলেন...ঐ যে আমাদের বাড়ী। 

মনাকে নিয়ে লোকটি তাদের বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হলো। এদিকে দিনমণি তখন ডুবে যাবার পালা। সকলের কাছে সে যেন বিদায় চাইছে। যাবার আগে দিনমণি পরিস্কার আকাশে কেমন একটা রক্তিম আভা ছড়িয়ে একটা মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছে । সেই রুপ এবং রসের আধারে মনা এবং সেই লোকটি যেন তার রস আস্বাদন করতে চাইছে। রাস্তায় বৃষ্টির পানিতে ভিজে কাদামাটিতে একাকার হয়ে গেছে। আর কাদার পরিমাণ এতোটাই বেশি যে হাঁটা চলা করা মুশকিল। তারপরও তারা পা টিপে টিপে বাড়ীর কাছাকাছি আসতে আসতে সন্ধ্যা নেমে গেছে। চারদিকে গাছ-গাছালি আর পাখ-পাখালির ডাক। তার উপর জোনাকী পোকার আলো। কেমন যেন একটা মনকাড়া ভাব এনে দেয়। লোকটি একটি দরোজার সামনে কড়া নেড়ে জোরে ডাক দিলঃ

-রমিজ..এই রমিজ..দরজা খোল..
ওপাশ হতে একটা কিশোর দরজাটা খুলে দিল। দ্যাখে তার দাদার সাথে একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে। ময়লা জামা-কাপড় পড়া। গায়ের রং জং ধরা কেমন যেন কালো-ধুসর বর্ণের। মাথায় কেমন উসকো খুসকো চুল। মাথা চুলকাচ্ছে।  ঐ লোকটিকে দেখে রমিজ তার দাদাকে জিগ্যেস করেঃ

-দাদা তোর সাথে কেরে?

-তুই চিনবি না। তুই এককাজ কর। ঘরটা ভালো করে গুছিয়ে দে। আর আমাদের বালতিতে করে পানি দে। হাত পা ধুতে হবে।

রমিজ মাথা নিচু করে পানি আনতে যায়। কিছুক্ষণ পর একটা বালতিতে করে পানি নিয়ে আসলো। তারপর মনাকে বললো হাত পা ধোয়ার জন্য। মনা ভালো করে হাত পা ধুয়ে জামার আস্তিনে হাত মুখ মুছলো। তা দেখে রমিজ খিল খিল করে হেসে উঠলো। তারপর একটা গামছা এগিয়ে দিল। মনা সেটা নিল না। সে ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। ঠিক সেই সময় মনা দেখতে পেল একজন মধ্যবয়স্ক মহিলা হেরিকেনের আলো হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে শাড়ির আঁচল কামড়ে ধরে আছে। মহিলাটি বেশ পরিস্কার। তার পরনে হাল্কা লাল পেড়ে সাদা শাড়ি। তারপর সে ডাকলোঃ 

-বাবা আজহার, তুমি আইছো? তোমার সাথে ঐটা কে?

-ও তুমি চিনবে না, মা। 

-একটা অচেনা মানুষকে এই ভর সন্ধ্যেবেলা ঘরে নিয়ে এলি,বাবা?

-মা, তুমি ভয় পেয় না। সে খারাপ লোক না। বিজ্ঞের মতো কথা বলে। আবার গানও জানে। আজকে ওর কথা সারারাত শুনবো বলে নিয়ে এসেছি। প্লীজ মা, তুমি কিছু বলো না...

-তোর যা খুশি কর। কিন্ত্তু এমন একটা লোককে এই বাড়িতে আশ্রয় দেয়াটা কি ঠিক? তুই তো আমার কথা শুনবি না, তোর যা ইচ্ছা কর.....

এ কথা বলে মহিলাটি ভেতর বাড়ি চলে গেল। মনা দাড়িয়ে দাড়িয়ে সবকিছু শুনলো। মনার ইচ্ছে করছিল ঐ মুহুর্তে সে এই স্থান ত্যাগ করে। দিন হলে হয়তো ঠিকই করতো...কিন্ত্তু এই সন্ধ্যা বেলা সে কোথায় যাবে..কার কাছে যাবে...কেউতো তাকে কাছে রাখতেই চাইছে না। কেমন যেন দুর দুর করে তাড়িয়ে দিতে পারলেই যেন বাঁচে....মনা সেই মুহুর্তে জেনে নিল ঐ লোকটির নাম আজহার। আজহার ভাই ভালো লোক। তার ভেতর সে সত্যের ঝিলিক দেখতে পেয়েছিল। সেই সত্যের পরশটা পাবার জন্যই সে আজহারের সাথে এসেছে। 

-কি ব্যাপার মনা ভাই? আপনি দাঁড়িয়ে রইলেন কেন? ভেতরে আসুন।

মনা সম্ববিত ফিরে পেয়ে আস্তে করে ঘরের ভেতর প্রবেশ করলো। টেবিলের উপর হারিকেন জ্বলছে। সেই আলোয় চারপাশটা পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। যেখানে টেবিলটা রাখা তার পাশেই একটি বড়ো খাট আছে। দরজার ওপাশটায় আরেকটা খাট আছে। সেই খাটের পাশেরই ছোট একটা জানালা। মনা সেখানে আয়েশ করে বসলো। একটু পরেই একটা ট্রেতে করে রমিজ আদা চা আর মুড়ি নিয়ে এল। তারপর তার দিকে চায়ের পেয়ালাটা এগিয়ে দিল। একমুঠ মুড়ি মুখে পুড়ে আজহার চিবুতে চিবুতে বললোঃ 

-মনা ভাই, আজকে কিন্ত্তু আপনাকে ঘুমাতে দেব না। দরকার হলে সকালে ঘুমাবেন। থাকবেন আমার এখানে। কোন সমস্যা নেই। বাড়ীতে আমি মা আর আমার ছোট ভাই ছাড়া আর কেউ নেই। কাজেই কোন ঝামেলা নেই। বুঝতে পারছেন তো?

-ভাইরে পারছিতো। কিন্ত্তু আমার কাছে কি জানতে চাও হেইডাইতো জানি না...মনা চায়ে চুমুক দিতে দিতে বললো।

-আসছি সেই কথায়। তার আগে খেয়ে নেই..

চা শেষ করে আজহার মনার পাশে এসে হেলান দিয়ে বসলো। অন্যপাশে মনা বসলো। তারপর আজহার মনাকে প্রশ্ন করলোঃ

- আমার জানার আগ্রহ সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি সর্ম্পকে এবং তার নিজের সর্ম্পকে।

সেই কথা শুনে মনা বললোঃ

-সৃষ্টিকর্তা সর্ম্পকে পরিস্কার ধারণা তুমি পাইবা না। তুমি যেইটা পাইবা সেইটা হইলো একটা ধারণা। এই ধারণা অনেকটা অনুমান নির্ভর। সঠিক ধারণা তুমি তখনই পাইবা যহন দেখবা তোমার আর তার মাঝে কোন পার্থক্য নাই। তুমি তোমার নিজের মতোই তারে পাইবা। ধর একটা আয়না। হেই আয়নায় যুদি তুমি তোমারে দেহ..তাইলে কি দেকবা? তোমারে দেকবা? তাই না? কেমতে দেকবা? দেকবা হেইডা তোমার মতোই কিন্ত্তু উল্টা। কিন্ত্তু হেইডা যুদি তোমার সামনে আইস্যা দাঁড়ায়, তাইলে কিন্ত্তু উল্টা দেকবা না। দেকবা ভাবদি। মানি তোমার মতোই। তুমিও যা হেও তা। দুডার মইদ্যে কোন পার্থক্য নাই...

-তার মানে আমি অায়নায় যে ছবিটা আমার দেখছি, ঠিক সেইরুপ অবয়ব আমার ভেতরেই একটা অস্তিত্ব আছে। সেই অস্তিত্বটাই যদি আয়নায় দেখি তাহলে দেখবো আমার মতোই কিন্ত্তু উল্টা। আর সেটা যখন আমার সামনে এসে দাড়াবে, তখন সেটা দেখতে আমার মতোই হবে.....হাউ স্ট্রেন্ঞ্জ...হাউ ক্যান ইট পসিবল...

-বাই রে পসিবল টসিবল বুঝি না...অনেক অলি আউলিয়ারা তাই দেকছে। তাগো কালাম যুদি তুমি পড়, তাইলে দেকবা হেইহানে পরিস্কার কইর‌্যা হেরা বলতাছে...

বাহার সু জ্বালুয়া.ই দিলদার.ই.দিদাম
বাহার চিজ ই.জামাল.ই.ইয়ার দিদাম। ।

না দিদাম হাইচ.ই.জামাল.ই.ইয়ার দিদাম
পুর ইজ ওয়াই কুচা ও বাজার দিদাম।।

ছো খুদরা বিন গারাম দিদাম হামুন সাত
জামাল.ই.খুদ.জামাল.ই.ইয়ার দিদাম।।

নামায ই জাহিদান মেহরাব ও মিনবার
নামায ই আশকান বার দার দিদাম।।

জো এইাক জুররা রাসিদ আজ গায়িব এ হাফিজ
হামা আকাল ও খিরাদ বিকার দিদাম।।

[সুত্রঃ হাফিজ সিরাজি]

(চলবে)

মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০১৬

মনা পাগলার মৌনতা.....এবং চতুর্থ পর্ব

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)

গানের কথাগুলো ভারি সুন্দর এবং গভীর অর্থবহ। কতো সুন্দর করে সর্বেশ্বরবাদ ব্যক্ত করেছেন। পুরো গানটা শুনতে পারলে বেশ ভালো লাগতো। আচ্ছা আপনি কি পুরো গানটি জানেন?
মনা পাগলাকে লক্ষ্য করে লোকটি জানতে চাইলো। মনা কৌতুহলী বললোঃ

-জানি। হুনবেন..

-শোনান...

-মনা বেশ আবেগ নিয়ে গজলটা শুরু করলোঃ

আয় মেরে মাওলা তু ছবছে আলা
তুহি হ্যায় আফজাল তুহি হ্যায় আহসান
অনাদি অনন্ত ছেফাত তোমারি
তুমহিছে পয়দা হ্যায় ছারে জাহান।।
জমি জমামে মকি মকামে
হর এক জাগামে তোমারি জ্বালুয়া।
কুদরতকা তেরি নাহি কেনারা
ছবহি হ্যায় শাযদার ছবহি হ্যায় হয়রান।।
কাহিঁতু গুল হ্যায় কাহিঁতু বুলবুল
কাহিতু গুন্ঞ্জা কাহি চেমন হ্যায়।
কাহিতু আশেক কাহিতু মাশুক
প্রেমে উচাটন গহিন কানন হ্যায়।।
রুপ তোমহারা প্রেমে ছারাপা
জগত ছমন্দর কি এক লহর হ্যায়।।
হুর পরীপর জ্বালুয়া তোমহারা
প্রেমিকগণ রুপে জ্বালাতন।
তুহি হ্যায় হিন্দু তুহি মুসলমান
তুহি বুৎখানা তুহি হ্যায় কাবা
তোমহারা পুজন তোমহারা ভজন
সবার হৃদে তব সিংহাসন।।
মাশুক সেজে জগত মাঝে
জ্বালাও আশেক হাজারে হাজার।
আপহিত আশেক আপহিত মাশুক
রহস্য ভেদে হও অকারণ।।
তুহি হ্যায় আপকর তুহি হ্যায় বেদিল
তুহি হ্যায় চিশতী তুহি শাহাপীর।
তুহি বাবা শাহ মাহে দিলারা
আজব নিরালা হ্যায় তেরা চলন।।


গজলটা শেষ হতেই মনার চোখে কেন যেন জল আসতে চাইছে। যখন সে গাইলোঃ
মাশুক সেজে জগত মাঝে
জ্বালাও আশেক হাজারে হাজার।
আপহিত আশেক আপহিত মাশুক
রহস্য ভেদে হও অকারণ।।

মাশুক অর্থাৎ প্রেমিকা সেজে তুমি জগতের মাঝে হাজার হাজার আশেক অর্থাৎ প্রেমিককে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খাড় করে দিচ্ছ। আবার তুমিই আশেক তথা তুমিই প্রেমিক তুমিই প্রেমিকা। রহস্যটা অকারণে ভেদ কর। তার মানে কি? মনা যে প্রেমে জ্বলে পুড়ে ছাড় খাক হয়ে যাচ্ছে-সেটাই কি সে? আর সেটা যদি সে-ই হয়, তাহলে মনাটা কে? এর উত্তর মনার জানা নেই। মনা চোখ মুছতে মুছতে লোকটির দিকে তাকালো। দেখলো ঐলোকটিও মনার দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর মনার হাত ধরে বললোঃ

-চলুন আমার সাথে।

-কই যামু?

-আমার বাসায়। আজকে আপনি আমার সাথে থাকবেন। তারপর রাত-ভর অনেক কথা বলবো। অনেক কিছু জানার আছে। চলুন

এ কথা বলেই সে মনার হাত ধরে হিড় হিড় করে টেনে নিয়ে চললো।

(চলবে)

সোমবার, ১৬ মে, ২০১৬

একনাদীদ - দ্বিতীয় পর্ব



সেজদায়ে তাজিমি এবং কিছু প্রাসংগিক কথা
সেজদায়ে তাজিমি-শব্দটি দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। একটি হলো সেজদা এবং অপরটি তাজিম প্রশ্ন হলো সিজদা  বলতে কি বুঝায় ? এবং অপরটি হলো তাজিম  বলতে কি বুঝায়? দুটির ফয়সালা না হলে সেজদায়ে তাজিমি  সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পাওয়া কঠিন। সিজদাহর অাভিধানিক অর্থ হলো-বিনয়তা নম্রতা প্রকাশ করা তাজিম শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো-সম্মান করা।
সুতরাং সেজদায়ে তাজিমি হলো-সম্মানের সহিত বিনয়তা নম্রতা প্রকাশ করা।
সেজদার প্রকারভেদ
) সেজদায়ে এবাদত - শুধুমাত্র আল্লাহ পাকের উদ্দেশ্যে নির্ধারিত।
) সেজাদায়ে তাযিম - সম্মানসূচক সেজদা কামেল পীর অর্থাৎ ওলী আল্লাহদের জন্য আদায় করা হয়।
) সেজদায়ে তেলায়াত - কোরআন মজিদে সেজদার আয়াত পাঠ করার পর তা আদায় করা হয়।
) সেজদায়ে সাহু - নামাযের মধ্যে ভুল-ভ্রান্তি হলে তা শুদ্ধ করার জন্য আদায় করা হয়।
) সেজদায়ে শোকরানা - আল্লাহর অবদানের উপর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য আদায় করা হয়।

আমাদের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে সেজদাহ তাযিম।

সেজদায়ে তাজিম কার জন্য আদায় করা য়ঃ
সেজদায়ে তাজিম অর্থাৎশ্রদ্ধার সেজদাহ কার জন্য আদায় করা হয়? যার হৃদয়ে আল্লাহর আরশ স্থাপিত।
হাদিস শরীফে আছে "কুলুবুল মো'মেনীনা আরশুআল্লাহ" র্থ- মু'মেন ব্যক্তির ক্কলব আল্লাহ পাকের আরশ। মু'মেন ব্যক্তি কারা? যারা আল্লাহ পাকের আরেফ বিল্লাহ অর্থাৎ সুফী সাধক, অলি আউলিয়া, পীর মাশায়েখগন।হাদিছে কুদছিতে আরো বলা হয়েছেঃ-"লা য়াযালো আবদী য়াতাকাররাবু ইলাইয়া বিন মাওয়াফিল হাত্তা উহিববোহু ফা ইযা আহবাব তুহু কুনতু সামউহুল লাযি ইয়াস মাউ বিহী ওয়া বাসারুহুল লাযী ইউবসেরু বিহী ওয়া ইয়াদুহুল লাতী ইউবতেশু বিহা ওয়া রিজলুহুল লাতী ইয়ামশী বিহা।"
র্থ- "যখন আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য অন্বেষণ করে তখন আমি তাকে ভালোবাসি আর আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দ্বারা সে শ্রবণ করে এবং তার চোখ হয়ে যাই যা দ্বারা সে দেখে। আর তার হাত হয়ে যাই যা দ্বারা সে ধরে বা স্পর্শ করে। তার পা হয়ে যাই যা দ্বারা সে চলাফেরা করে।"
অর্থাৎ আল্লাহর অযুদ (অস্তিত্ব) তার মধ্যে প্রস্ফুটিত হয়। আর যার মধ্যে আল্লাহ পাকের অস্তিত্ব প্রস্ফুটিত হয় একমাত্র তিনিই সেজদায়ে তাজিমি পাবার যোগ্য। এই সেজদার মধ্যে কোন শর্ত নেই।

পবিত্র কুরআনের আলোকে সিজদায়ে তাজিমির আয়াতসমুহঃ

. "ওয়ালা কাদ খালাকনাকুম সুম্মা সাওয়ার না কুম সুম্মা কুলনালিল মালায়েকাতিস জুদুলে আদামা ফাসাযাদু ইল্লা ইবলিস লা ইয়া কুমমিনাস সাজদীন " - সুরা আরাফ আয়াত-
র্থঃ এবং নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করলাম। আবার আমি ফেরেস্তাদেরকে বললাম যে, তোমরা আদমকে সেজদা কর। তখন তারা সেজদা করল। ইবলিস সে সেজদা করেনি।

. " কালা মা মানায়াকা আল্লা তাসজুদা ইজ আমার তুকা কালা আনা খায়রুম মিনহু খালাক তানি নারিন ওয়া খালাক তাহু মিন তীন।" - সুরা আরাফ আয়াত-২২
র্থঃ আল্লাহ তায়ালা বললেন, তোমাকে কোন জিনিস বাধা প্রদান করলো যে তুমি আদমকে সেজদা করনি। যখন আমি তোমাকে আদেশ করলাম। সে (শয়তান) বলল, আমি তার চেয়ে উত্তম তুমি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছ আর তাকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছ।

. "ফা ইজা সাওয়াইতুহু ওয়া নাফাকতু ফিহে মের রুহি ফা কাউলাহু সাজদীন।"- সুরা হাজর আয়াত-২৯
র্থঃযখন আমি তাকে সম্পূর্ণভাবে তৈরী করব এবং তার মধ্যে আমার আত্মা ফুকে দিব। তখন তোমরা সকলেই (ফেরেস্তা) তার (আদম) সম্মুখে সেজদায় পড়ে যাবে।

. " ফা সাজাদাল মালায়ে কাতু কুল্লু হুম আজ মাউন।" - সুরা হাজর আয়াত-৩৩
র্থঃঅত:পর সমস্ত ফেরেস্তা সেজদা করলো।

. "ইল্লা ইবলিসু আবা আইয়া কুনা মা আস সাজেদিন" - সুরা হাজর আয়াত-৩১
র্থঃ ইবলিশ ব্যতিত সে সেজদাকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকার করল।

. " কালা ইয়া ইবলিসো মালাকা আললা তাকুনা মা আস সাজেদীন।" -সুরা হাজর আয়াত-৩২
র্থঃ তিনি বললেন হে ইবলিশ কি ব্যাপার তুমি সেজদাকারীদের অর্ন্তভুক্ত হও নি।

."কালালাম আকুন লে আস জুদা লে বাশারিন খালাক তাহু মিন সালসালিন মিন হামায়িন মাসনুন।" -সুরা হাজর আয়াত-৩৩
র্থঃ  সে বলল আমি এমন মানুষকে সেজদা করবো না। যাকে তুমি কালো ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছো।

. "ওয়া ইজ কুল না লিল মালায়ে কাতিস জুদুলে আদামা ফাসাজাদু ইল্লা ইবলিস আবা।" - সুরা তোহা আয়াত-১১৬
র্থঃ আর যখন আমি ফেরেস্তাদেরকে বললাম যে, আদমকে সেজদা কর। তখন সকলেই সেজদা করলো। কিন্ত্তু ইবলিশ ব্যতীত সে অস্বীকার করল।

. "ফা ইজা সাওয়াইতুহু ওয়া নাফাকতু ফিহে মের রুহী ফাকাউ লাহু সাজেদীন।"
র্থঃযখন আমি তাকে সুন্দরভাবে সম্পূর্ণরুপে তৈরী করবো এবং নিজের আত্মা ফুকে দিব তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যাবে।

১০. "ফাসাজাদাল মালায়েকাতু কুল্লুহুম আজ মাউন ইল্লা ইবলিস ইস্তাক বারা ওয়া কানা মিনাল কাফেরীন।" সুরা সোয়াদ আয়াত-৭৩ ৭৪
র্থঃ তখন সমস্ত ফেরেস্তা সেজদা করলো কিন্ত্তু ইবলিশ ব্যতীত। সে অহংকার করলো এবং কাফিরদের অর্ন্তভুক্ত হলো।

১১."কালা ইয়া ইবলিসো মা মানায়াকা আন তাসজুদা লেমা খালাকতু বে ইয়া দাইয়া আস তাকবারতা আম কুনতা মিনাল আলিন।" সুরা সোয়াদ আয়াত-৭৫, সুরা সোয়াদ আয়াত-৭২
র্থঃ বললেন যে, ইবলিশ তোমাকে কোন জিনিস তাকে সিজদা করতে বাধা দিল যাকে আমি নিজের দুই হাত দ্বারা তৈরী করেছি? তুমি কি অহংকার করছো? বা তুমি কি আলিনদের(বড়লোক) মধ্যে নিজেকে গণ্য কর?

১২. "ওয়া ইজ কুলনা লিল মালায়ে কাতিস জুদুলে আদামা ফাসাজাদু ইল্লা ইবলিস কানা মিনাল জ্বিন্নে ফা ফাসাকা আন আমরে রাব্বেহী।" সুরা কাহাফ আয়াত-৫০
র্থঃএবং যখন আমি ফেরেস্তাদেরকে বললাম যে আদমকে সেজদা কর। তখন সকলেই সেজদা করল। ইবলিশ ব্যতীত। সে বলল আমি কি? তাকে সেজদা করবো? যাকে তুমি মাটি দ্বারা তৈরী করেছ।

১৪."ওয়া ইজ কুলনা লিল মালায়ে কাতিস জুদু লে আদামা ফাসাজাদু ইল্লা ইবলিশ আবা ওয়াস্তাক বারা ওয়া কানা মিনাল কাফেরীন।" সুরা বাকারা আয়াত-৩৪
র্থঃ এবং যখন আমি ফেরেস্তাদেরকে নির্দেশ দিলাম তোমরা আদমকে সেজদা কর। তখন সকলেই সেজদা করল ইবলিস ব্যতীত। সে অমান্যকারী হলো এবং অহংকার করল কাফির হয়ে গেল।

১৫." ওয়া রাফায়া আবা ওয়াই হে আলাল আরশে ওয়া খাররু লাহু সুজ্জুদান।" সুরা ইউসুফ আয়াত-১০০
র্থঃ হযরত ইউসুফ (:) নিজের পিতা-মাতাকে সিংহাসনে বসাইলেন এবং সকলেই ইউসুফের (:) শ্রদ্ধার জন্য তার সামনে সেজদায় পড়ে গেলেন।

১৬."ইয কালা ইউসুফো লে আবিহে ইয়া আবাতে ইন্নি রা আই তো আহাদা আশারা কাউ কাবান ওয়াশ শামসা ওয়াল কামারা রা আইতু হুম লী সাজেদীন।" সুরা ইউসুফ আয়াত-
র্থঃ যখন ইউসুফ (:) নিজের পিতাকে বললেন যে, আব্বাজান আমি এগারটি তারকা এবং সূর্য চন্দ্রকে দেখলাম যে, তারা সকলেই আমাকে সেজদা করছে।

উপরোক্ত আয়াতসমুহ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় - সেজদার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্ত্তু "তাজিম" কথাটির উল্লেখ নেই। এই তাজিম কথাটি কটি বেদাত তথা নব্য সংযোজন। কেননা যেখানে স্পষ্ট সেজদা কথাটি উল্লেখ আছে সেখানে তাজিমি সেজদা কথাটি স্পষ্ট কোরআন বিরোধী  একটি কথা

প্রশ্ন উঠতে পারে যে সেটা যদি ইবাদতের জন্য সেজদা হতো তাহলে ইবলিস অবশ্যই তা পালন করতো। যেহেতু সেটি ইবাদতের জন্য নয় সেহেতু ইবলিশ সেটা মানতে দ্বিধা করেছে। সে সেজদা দেয়নি। এটাতো ইবলিশের কথা। আল্লাহ পাক আদেশ করেছেন সেজদা দাও। সেটা ইবাদতের জন্য না সম্মান প্রদর্শন করার জন্য সেটা তার ইচ্ছাধীন কেননা আল্লাহর আদেশ পালন করা ফরজ। আর ফরজ কথাটির অর্থ হলো অবশ্যই পালনীয়। আদেশ যেহেতু আল্লাহর সেহেতু তা অমান্য করা অপরাধ। আর সে অপরাধে ইবলিশ অপরাধী। যারা তা মানবে না তারাও ঐ একই অপরাধে অপরাধী।
[ বিঃদ্রঃ হাকীকাতে সেজদা.এ.তাজিমী অনেক গুরুত্ব বহন করে। শরীয়তের জ্ঞান দিয়ে বিচার করলে তা অবশ্যই একটি শেরেক। কিন্ত্তু চিশতীয়া খান্দানভুক্ত অনেক অনেক বিখ্যাত অলী আউলিয়াগণ এ সিজদাহ করে আসছেন এবং করে যাবেন। এ ব্যাপারে বিশৃংখলাসৃষ্টিকারীরা অবশ্যই ঐ ইবলিসের অনুসারী। যিনি প্রথম থেকেই এর বিরোধীতা করে আসছেন। আর কেউ যদি এ ব্যাপারে কোন আপত্তি তোলে, তাহলে যার বিরুদ্ধে আপত্তি তোলা হয়েছে-এ দুয়ের মধ্যে সুধী পাঠকবর্গ জ্ঞানের আলোকে ধরতে পারবেন কে ফেরেস্তার দলে আর কে ইবলিশের দলে? ]