“আত্মমোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ”
ভগবান শিব
বলেছেন
মানব
জীবনের
লক্ষ্য
ও
আদর্শ
হল-“আত্মমোক্ষার্থং
জগদ্ধিতায় চ”। মানুষ যা-ই করুক না
কেন,
তা
করা
উচিত
আত্মমোক্ষের জন্যে-
তার
নিজের
মোক্ষের জন্যে,
আর
করা
উচিত
জগতের
কল্যাণের জন্যে,
সমস্ত
বিশ্বের উন্নতির জন্যে।
এটাই
তার
ধর্ম।
তাই
যে
কর্ম
তার
আত্মমোক্ষের সহায়ক
নয়
বা
যে
কর্মের
দ্বারা
অপরের
কল্যাণ
হয়
না,
জগতের
হিত
হয়
না,
তা
ধর্ম
নয়।
মহান
দার্শনিক তথা
ধর্মগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী বলেছেন
যে,
‘মানব
ব্জীবন
একটা
আদর্শের ধারা
প্রবাহ,
একটা
ব্রত’। তাই মানুষের এই
দু’টো কাজই করা
উচিত
অর্থাৎ
মানুষের ব্রত
এই
দু’টো কাজ।
‘আত্মমোক্ষার্থং’। এই পৃথিবীর সব
কিছুই
চলমান,
বিশ্বের সব
কিছুই
চলে
চলেছে।
একে
চলতেই
হবে।
কেউ
যদি
বলে,
‘আমি
চলব
না’,
তবুও
সে
স্থির
থাকতে
পারে
না,
পতনের
দিকে
চলতে
হবে। তার
মনের
কামনা-বাসনা, ষড়রিপু-অষ্টপাশ তাকে
পিছনের
দিকে,
পতনের
দিকে
ছুটিয়ে
নিয়ে
যাবে।
সেই
জন্যে
মানুষের উচিত
সামনের
দিকে
এগিয়ে
চলা,
তা
না
হলে
পিছনের
দিকে
চলতে
হবে।
কারণ
পৃথিবীর কোন
কিছুই
স্থানু
বা
স্থির
নয়,
সব
কিছুই
চলে
চলেছে,
সব
কিছুই
চলমান।
যদি
কেউ
উপরের
দিকে
না
যায়
তাহলে
তাকে
নীচের
দিকে
যেতে
হবে।
তাই
‘আত্মমোক্ষার্থং’।
যে
যা-ই করুক না
কেন
তা
মোক্ষের জন্যে
করতে
হবে।
মোক্ষ
মানে
চিরকালীন মুক্তি।
তারপর ‘জগদ্ধিতায় চ’। মানুষ সব
কিছুই
তার
নিজের
আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্যে,
নিজের
মুক্তির জন্যে
করছে-
এটা
ভাল
কথা;
কিন্তু
মানুষ
কী
স্বার্থপর? সে
সব
কিছু
তার
নিজের
নিজের
মুক্তির জন্যে
করবে,
অন্যের
জন্যে
কিছুই
করবে
না,
এটা
কী
ঠিক?
মানুষ
তো
তাহলে
স্বার্থপর হয়ে
গেল।
আমরা
এই
জগতে,
সমাজে
সকলে
একে
অপরের
কাছে
ঋণী।
জন্ম
থেকেই
আমরা
পিতা-মাতা, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, সমাজ
তথা
জীব
জগতের
সাহায্য-সহযোগিতায় বেঁচে
থাকি।
আমরা
খাদ্যের জন্যে,
পোষাকের জন্যে,
জীবনের
নিরাপত্তার জন্যে,
উন্নতির জন্যে,
নিজের
সুখ
ভোগের
জন্যে
অপরের
সাহায্য গ্রহণ
করি।
তাই
আমাদের
অস্তিত্ব, আমাদের
উন্নতি
একে
অপরের
সাহায্য-সহযোগিতায় হয়ে
থাকে।
আমরা
সবাই
একে
অপরের
কাছে
ঋণী।
এই
ঋণ
শোধ
না
করতে
পারলে
কোন
মানুষের মুক্তি
বা
মোক্ষ
হতে
পারে
না।
একমাত্র জগতের
সেবার
মাধ্যমেই এই
ঋণ
পরিশোধ
হতে
পারে।
তাই
নিজের
মুক্তির জন্যে
কোন
কিছু
করার
সঙ্গে
সঙ্গে
অন্যের
সেবাও
করতে
হবে।
সেবা চার
প্রকারেরঃ শূদ্রোচিত সেবা,
ক্ষত্রিয়োচিত সেবা,
বৈশ্যোচিত সেবা
ও
বিপ্রোচিত সেবা।
শূদ্রোচিত সেবাঃ
শূদ্রোচিত সেবা
হল
শরীর
দিয়ে
কারো
সেবা
করা।
শারীরিক সেবা,
অসুস্থকে সেবা
করা।
শূদ্রের যে
সেবা
তা
শূদ্রোচিত সেবা।
ক্ষত্রিয়োচিত সেবাঃ ক্ষত্রিয়োচিত সেবা হ’ল নিরাপত্তা দেওয়া, দুর্বলদের সাহায্য করা।
বৈশ্যোচিত সেবাঃ বৈশ্যোচিত সেবা হ’ল আর্থিক ভাবে কারো সেবা করা। ক্ষুধার্তকে অন্ন দান, ত্রাণকার্য , দরিদ্র নারায়ণের সেবা তথা প্রয়োজনে কাউকে সাহায্য করা।
বিপ্রোচিত সেবাঃ বিপ্রোচিত সেবা হ’ল নীতি-শিক্ষা দেওয়া, শিক্ষাদান, আদর্শের প্রচার, ধর্ম প্রচার।
ক্ষত্রিয়োচিত সেবাঃ ক্ষত্রিয়োচিত সেবা হ’ল নিরাপত্তা দেওয়া, দুর্বলদের সাহায্য করা।
বৈশ্যোচিত সেবাঃ বৈশ্যোচিত সেবা হ’ল আর্থিক ভাবে কারো সেবা করা। ক্ষুধার্তকে অন্ন দান, ত্রাণকার্য , দরিদ্র নারায়ণের সেবা তথা প্রয়োজনে কাউকে সাহায্য করা।
বিপ্রোচিত সেবাঃ বিপ্রোচিত সেবা হ’ল নীতি-শিক্ষা দেওয়া, শিক্ষাদান, আদর্শের প্রচার, ধর্ম প্রচার।
যদিও সব
সেবাই
সমান
মানের-
কিন্তু
বিপ্রোচিত সেবা
চিরকালীন আর
বাকী
তিন
ধরণের
সেবা-
শূদ্রোচিত, ক্ষত্রিয়োচিত ও
বৈশ্যোচিত সেবাই
ক্ষণকালিক। এদের
গুরুত্ব কিন্তু
কম
নয়,
শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক স্বভাবের। একজন
ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে
সর্বোত্তম সেবা-
তাকে
খাওয়ানো। এই
সেবা
চিরন্তন প্রকৃতির না
হলেও
সেই
সময়ে
সেটি
সবচেয়ে
মূল্যবান। কেউ
হয়তো
ক্ষুধার্ত, সে
কাঁদছে,
মরতে
বসেছে,
তখন
তাকে
ধর্ম
কথা
না
শুনিয়ে
খেতে
দিতে
হবে।
এর
তাৎক্ষণিক গুরুত্ব আছে।
কিন্তু
বিপ্রোচিত সেবার
গুরুত্ব চিরন্তন। তাই
একে
সর্বোত্তম সেবা
বলা
হয়।
এই চার
প্রকারের সেবাই
‘হিতের’
মধ্যে
পড়ে।
তাই
বলা
হয়েছে
‘জগদ্ধিতায় চ’। ‘জগৎ’ মানে
পৃথিবী,
‘হিত’
মানে
কল্যাণমূলক সেবা।
যা
কিছু
মানুষ
করুক
না
কেন
তা
নিজের
মুক্তির জন্যে
করবে-
‘আত্মমোক্ষার্থং’।
তারপর
‘জগদ্ধিতায় চ’-
জগতের
হিতের
জন্যে
করবে।
শূদ্রোচিত, ক্ষত্রিয়োচিত, বৈশ্যোচিত বা
বিপ্রোচিত- এই
চার
প্রকারের সেবাই
হিতের
মধ্যে
পড়ে।
কিন্তু
মানুষকে মনে
রাখতে
হবে
যে
বিপ্রোচিত সেবা
চিরকালিক। একজন
ভাল
মানুষকে এই
নীতি
মেনে
চলতে
হবে
অর্থাৎ
তার
জীবন
হবে
আত্মমোক্ষ ও
জগত
হিতের
জন্যে-
এটাই
ভগবান
শিবের
শিক্ষা।
[তথ্যসুত্র সংগ্রহ : দি নিউজ]
[তথ্যসুত্র সংগ্রহ : দি নিউজ]