স্বাধিষ্ঠান
চক্রঃ
এই
দ্বিতীয় চক্রে রয়েছে ৬টি
বৃত্তি। এই বৃত্তিগুলি সবই
নিম্নস্তরের যা প্রায়ই মানুষকে
অধোগতির পথে পরিচালিত করে।
এটাকে যৌনচক্রও বলা হয়। কারণ,
এই চক্র মানুষের যৌন
অনুভূতি ও যৌন গ্রন্থিগুলির
(শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয়) সঙ্গে
যুক্ত। এই চক্রের বৃত্তিগুলি
হ’ল-
১।প্রশ্রয়
(Indulgence)-কোন
কিছুর প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি।
শুধু যৌন আসক্তি নয়,
যে কোন প্রকার বস্তুর
প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি। যেমন খাবারের প্রত
আসক্তি, মদ, গাঁজা, হেরোইন,
জুয়ার প্রত আসক্তি বা
টি.ভি-সিনেমা ইত্যাদির
প্রতি আসক্তি।
২।অবজ্ঞা
(Disdain)- অন্যের
গুণের যথাযথ মূল্য না
দেওয়া। তাকে ছোট করে
দেখা। যেমন আজকাল দেখা
যায় তথাকথিত উচ্চশ্রেণীর লোকেরা নিম্নশ্রেণীর লোকেদের
প্রতি অবজ্ঞার ভাব পোষণ করে।
৩।মূর্চ্ছা
(Psychic stupor)- একটা
মানসিক বিহবলতা বা জড়তার ভাব।
এই অবস্থায় মস্তিষ্ক ঠিকমত কাজ করতে
পারে না। Dr. Edward Bachএই বৃত্তির দ্বারা
প্রভাবিত লোকেদের সম্পর্কে যথার্থ বলেছেন যে,
এরা কোন কাজই মনোযোগের
সঙ্গে করতে পারে না।
সব সময় যেন কোন
কিছুর দ্বারা সন্মোহিত হয়ে
রয়েছে, স্বপ্নের জগতে ঘুরছে, উদাস
দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে
আছে। এই ধরণের লোকেরা
জীবনে সব সময় উদাসীন
থাকে,ফলে ভাল বা
মন্দ কোন খবরই তাদের
মনে কোন প্রভাব বিস্তার
করতে পারে না। কখনও
কখনও তাদের মধ্যে মুর্চ্ছা
যাবার প্রবণতাও দেখা যায়।
৪।অবিশ্বাস
(Lack of confidence)- নিজের
প্রতি বা অন্যের প্রতি
বিশ্বাস হারানো। এই বৃত্তির প্রভাবে
মানুষ অপরকে এমনকি নিজেকেও
বিশ্বাস করতে পারে না।
সব সময় একটা সন্দেহের
ভাব তার মনে জাগতে
থাকে। যাদের মধ্যে এই
বৃত্তি প্রবলভাবে কাজ করে তারা
তাদের আত্মবিশ্বাস ও আত্মসন্মানবোধও হারিয়ে
ফেলে। আর সব সময়
একটা হীনন্মন্যতায় ভুগতে থাকে। আত্মবিশ্বাসের
অভাবে তারা কোন কাজেই
হাত দিতে পারে না,
ভাবে এ কাজ আমি
কোন মতেই করতে পারবো
না। তাই এরা জীবনে
কোন কাজই করতে পারে
না।
৫।সর্বনাশ
(Fear of annihilation or terror)- চরম
ভয়, সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবার
ভয়। স্বাধিষ্ঠান চক্র থেকেই এই
ভয়টা জাগে। আর এই
চক্র মানুষের রেচন অঙ্গকে নিয়ন্ত্রণ
করে তাই দেখা যায়
অতিরিক্ত ভয়ের ফলে- যেমন
যুদ্ধে মৃত্যুর পূর্বে অনেক সৈনিকেরা
অনিচ্ছাকৃত ভাবে মুত্রত্যাগ করে
ফেলে।
৬।ক্রূরতা
(Cruelty)- নিষ্ঠুর
হৃদয়হীনতা, অন্যের দুঃখ-কষ্ট
দেখে উল্লসিত হওয়া। অন্যের দুঃখ-দুর্দশার কারণ হওয়া। এরা
অন্যকে কষ্ট দিয়ে পৈশাচিক
আনন্দ অনুভব করে। ইতিহাসে
দেখা গেছে অনেক রাজাই
অন্যের ওপর অত্যাচার করে
উল্লসিত হতো। আর আজকালকার
দিনেও অনেকে বিভৎস খুন,
দাঙ্গা, রাহাজানি করে বা এই
ধরণের ছবি দেখে মজা
পায়। এই সব ক্ষেত্রে
মন ক্রূরতা বৃত্তির দ্বারাই প্রভাবিত হয়ে থাকে।
এই
মূলাধার ও স্বাধিষ্ঠান চক্রের
সঙ্গে গোনাডস্(Gonads)গ্রন্থিগুলি অর্থাৎ শুক্রাশয়(Testes) বা
ডিম্বাশয়(Ovaries) সম্পর্কিত।
*ছেলেমেয়েদের কর্তব্যপরায়ণতা বাড়বে ও
*বৌদ্ধিক বিকাশ হবে।
ছেলেমেয়েদের ১৫ থেকে ১৭ বৎসর বয়সে গোনাডস্ যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী সক্রিয় হয় তবে তাদের মধ্যে,-
*বিচারশীল মানসিকতা তৈরী হবে,
*স্বাধীন চিন্তাধারা জাগবে,
*বিশ্বভ্রাতৃত্ব বোধের ভাবনা জাগবে।
আর স্বাভাবিকের চেয়ে কম সক্রিয় হলে তাদের মধ্যে জাগবে,-
*ক্রূরতা, দয়াহীনতা।
*তারা হবে অসামাজিক, ভাবজড়তায় আবদ্ধ।
*তারা হারিয়ে ফেলবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ভাবজড়তার বিরুদ্ধে লড়াই করার নৈতিক সাহস।
মৎস্যেন্দ্রাসন,
শলভাসন, যোগমুদ্রা, গোমুখাসন, জানুশিরাসন ও আম্ভসীমুদ্রা নিয়মিত
অভ্যাস এই গ্রন্থিগুলির ত্রুটি
দূর করতে সাহায্য করে।
[তথ্য সুত্র সংগ্রহ: দি নিউজ]
[তথ্য সুত্র সংগ্রহ: দি নিউজ]