পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৪

খাঁচা ও পাখির গল্প












১.
অর্থির আজ মন ভালো নেই। তার অনেক দিনের শখ সে একটি ময়না পাখি কিনবে। পাশের বাড়ীর তরুকে তার বাবা একটি ময়না পাখি কিনে দিয়েছে। পাখিটি কি সুন্দরভাবে কথা বলে। দেখলেই সালাম দেয়। কুশল জিগ্যেস করে। সে শুনেছে-ময়না পাখির ভোকাল কড অনেকটা মানুষের ভোকাল কডের কাছাকাছি।তরু দিদি বলেছে-ময়না পাখিকে কথা শেখালে সে কথা বলতে পারে।
প্রথমে তার বিশ্বাস হতে চায়নি। কিন্ত্তু সে যখন তা নিজের কানে শুনেছে তখন সে বিশ্বাস করেছে। সেই থেকেই সে বায়না ধরেছে। আম্মুকে বলেছে-আম্মু তুমি দিদির ময়না পাখিটি দেখেছো? কি সুন্দর কথা বলে।প্লীজ আম্মু তুমি বাবাকে বলে আমাকে একটা ময়না পাখি কিনে দাও না?
-ঠিক আছে। তোমার আব্বুকে বলে দেখি।
-না। তোমাকে দিতেই হবে।
-বলেছিতো। তোমার আব্বু বাসায় আসলে আমি বলবো।
তার একমাত্র মেয়ে। সব কিছুতেই বায়না ধরা তার স্বভাবগত হয়ে গেছে। এম্মনিতেই নানা টানাপোড়ন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তার পাঁচ সদস্যের সংসার। দুই ছেলে এক মেয়ে। মেয়েটিই বড়। দেখতে অনেকটা তার বাবার মতো হয়েছে।হালকা পাতলা গড়ন। গায়ের রং ফর্সা। সবে মাত্র ক্লাস টুতে পড়ে। এখনিই তার সবকিছুতেই বায়না। ছেলে দুটি ছোট। বড় ছেলেটিতো সারাদিন সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখে। ছোটটির বয়স মাত্র সাত মাস। সংসারের নানা ঝামেলায় মেয়েকে ঠিকমতো পড়াতে পারেননা। তার স্কুলের বিল্লাল স্যার তাকে পড়ায়। স্যার তাকে বলেছে-আপনার মেয়েটির মেধা ভাল। ওর প্রতি যত্ন নিয়েন। ভবিষ্যৎতে অনেক ভাল করবে। কিন্ত্তু টাকা-পয়সার অভাবে কোন কিছুই করতে পারছেন না।
চোখের কোণে কালো মেঘ কখন যে ভীড় করেছে তা টেরই পায়নি মিতু। চিন্তায় ছেদ পড়লো কলিং বেলের শব্দে। চোখ মুছতে মুছতে দরজাটা খুললেন। অর্থির আব্বু এসেছেন। হাতে মিষ্টির প্যাকেট। মেজাজটাও দেখা যাচ্ছে বেশ ফুরফুরে। মনে হয় বড় কোন কাজ পেয়েছেন।
-কি ব্যাপার? তোমার হাতে মিষ্টি?
রহিম সাহেব একটি কোম্পানিতে সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে কাজ করেন। আউট সোর্সিং করার চেষ্টা করছেন।এখনো সফল হননি। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।হাল ছাড়ার পাত্র তিনি নন।সব কিছুতেই দর্শন খোঁজার চেষ্টা তিনি করেন।সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে নিজেকে যতটা না জাহির করেন তার চেয়ে বেশি জাহির করেন দর্শন খোঁজায়। এ বিষয়টি মিতুর পছন্দ নয়। তাই প্রায়ই তার সাথে লেগে যায় এই একটি কারণে। এম্মনিতেই লোকটি বেশ।
-ভালো খবর আছে। যে কাজটির জন্য চেষ্টা করেছিলাম সেটা সফল হয়েছে। এবার আর ঠেকায় কে?
-হুম। প্রতিবারইতো একই কথা বলো। কাজের কাজ কিছুই হয় না। শুধু শুধু কথার ফুলঝুরি।
-না। এবার ঠিকই হবে। কোম্পানির সাথে কথা হয়েছে। এই দ্যাখো ডিড।
কতোগুলো কাগজ দেখিয়ে চেয়ারে বসে পড়লেন রহিম সাহেব। মিষ্টির প্যাকেটটি টেবিলের ওপর রেখেই তিনি তার মেয়েকে ডাকলেন।
-অর্থি । বাবার গলার আওয়াজ পেয়ে অর্থি দৌড়ে এসে বাবার কোলে গলা ধরে বসলো।
-বাবা। তুমি জানো আজ আমার পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। আমি পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়েছি। ৮৫০ নম্বর পেয়েছি।হুম।
অর্থি ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস টুতে উঠেছে। মেয়েকে আদর করতে করতে জিগ্যেস করলেন
-বলো তুমি কি চা্ও?
মোক্ষম সুযোগ পেয়ে অর্থি বলে উঠলো-আম্মুকে বলেছি। আম্মু তুমি কি বাবাকে বলোনি?
মিতু কথাটি বলতে চায়নি। কিন্ত্তু আজ তার স্বামীর মেজাজটা ভালো দেখে বলছে ইচ্ছে করছে।
-তোমার মেয়ে বায়না ধরেছে তাকে একটি ময়না পাখি কিনে দিতে হবে। পাশের বাড়ীর দিদিরা একটি ময়না পাখি কিনেছে। সেটি নাকি কথা বলতে পারে। তরু নাকি সেই ময়নাকে কথা শিখিয়েছে।তারও চাই।
-ঠিক আছে। কিনে দেব।
এত সহজেই যে রাজী হয়ে যাবে তা ভাবতেই পারেনি মিতু। মিষ্টির প্যাকেটটা হাতে নিয়ে সে রান্না ঘরের দিকে চলে যেতে যেতে বললো-তুমি পোষাক আশাক ছেড়ে ফ্রি হয়ে নাও। তোমাকে চা দিচ্ছি।
রহিম সাহেব হাত মুখ ধুতে ওয়াশরুমে যেতেই দেখতে পেলেন-তার ছোট ছেলেটি নিশ্চিতে ঘুমুচ্ছে। আর বড় ছেলেটি একটি বল নিয়ে খেলছে। তাকে সংগ দিচ্ছে তার মেয়েটি। দৃশ্যটি দেখতে পেয়ে তার খুবই ভালো লাগছে।
২.
রহিম সাহেবের মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল রিক্সায় করে কাঁটাবন যাওয়ার পথে জ্যাম দেখে। কিসের জ্যাম তা ঠিক বুঝতে পারছেন না। বিরক্ত হয়ে তিনি একটি সিগারেট ধরালেন। ফুস ফুস করে ধোঁয়া ছাড়ছেন আর চিন্তা করছেন-প্রতিদিন জ্যামে আমাদের কত ঘন্টা কর্মশ্রম বিনষ্ট হয়। এরই মধ্যে ফুরুত করে বাঁশির আ্ওয়াজ শুনতে পেলেন। ট্রাফিক পুলিশ হুইসেল দিচ্ছে। জ্যাম ছুটতেই রিক্সা আবার ছুটতে শুরু করছে। কাঁটাবনের ভিতরে প্রবেশ করতেই কেমন যেন একটা বোটকা গন্ধ তার নাকে এলো। প্রতিটি দোকানেই সাজানো আছে হরেক রকম একুইরিয়াম। সেই একুইরিয়ামে নানা প্রজাতির রংবেরং এর মাছ। মাছের খাদ্য। কোন কোন দোকানে আছে ছোট বড় দেশি বিদেশী কুকুর ছানা। গিনিপিগ।আবার কোন কোন দোকানে আছে নানা প্রজাতির পাখি।তিনি একটি দোকানের সামনে এসে রিক্সা থামালেন। ভাড়া চুকিয়ে দিয়েই দোকানে প্রবেশ করলেন। দোকানী তাকে দেখে হাসি হাসি মুখ নিয়ে জিগ্যেস করলেন
-কি নিবেন স্যার? দেশি ময়না। ঘুঘু,টিয়া....
ময়না পাখির কথা শুনতেই দোকানীর অন্য কোন কথা কানে যাচ্ছিল না। দোকানীকে জিগ্যেস করলেন
-দেখান দেখি আপনার ময়না?
দোকানী একটি ময়না পাখি এনে দেখালেন। ঠোঁট দুটি লাল-হলুদে মেশানো। পা দুটি হলুদ। গায়ের রং কালো। বলিষ্ট পাখা দুটি ঝাঁকিয়ে ঠোট দুটি বাঁকিয়ে কেমন করে যেন তাকালো। দেখতে বেশ। দাম জিগ্যেস করলেন।
দোকানী ময়নাটির দাম বললেন। শুনে তার ভিমরি খাবার মতো অবস্থা। কিন্ত্তু কি করবেন? তিনি মেয়েকে কথা দিয়েছেন। অগ্যতা তিনি দামাদামি করে ময়নাটি কিনলেন। ময়নার জন্য খাবার কিনেছেন। খাঁচাটির ভেতর ময়নাটি কেমন যেন ছটফট করতে লাগলো। নতুন মনিবকে বোধ করি তার পছন্দ হয়নি।
ময়নাটি হাতে নিয়ে একটি রিক্সা নিলেন। বাড়িতে এসে তিনি কলিং বেল টিপলেন। কলিংবেলের আ্ওয়াজ পেয়েই অর্থি দৌড়ে এসে দরজা খুলে দিল। অর্থি জানতো তার বাবা আজ তার জন্য একটি ময়না পাখি কিনতে গেছে। ময়না পাখি দেখেই অর্থি একটি চিৎকার দিল। সেই চেঁচামেচিতে মিতু তাড়াতাড়ি দৌড়ে এলেন। ছোট ছেলেটি কান্না জুড়ে দিল। কেমন যেন একটা উৎসব উৎসব ভাব বিরাজ করছে সারা বাড়ী জুড়ে।
রহিম সাহেব ময়নাটি খাঁচাসহ বাড়ীর ভেতরের বারান্দায় একটু উপরের দিকে টাংগিয়ে দিলেন। বেড রুম থেকে তিনি শুনতে পাচ্ছেন মেয়ের কথা।
এ্যাই ময়না তোর নাম কি? তোকে আমি অনেক কথা শেখাবো। আচ্ছা বলতো স্বরে অ.. স্বরে আ...না না ...শোন...
রহিম সাহেব খেয়াল করছেন ময়নাটি কথা বলাতো দুরের কথা-কেমন যেন কর্কশ কন্ঠে ডেকে উঠলো।ময়নাটি নিয়ে অর্থির মাতামাতি দেখতে ভালোই লাগছে তার। সে মিতুকে ডেকে চায়ের কথা বললেন।
বিছানায় হেলান দিয়ে বেশ অায়েশের ভংগিতে হারিয়ে গেলেন এক অজানা জগতে-নানান বিষয় তার মাথায় ঘুর ঘুর করছে।
এই যে কাঁটাবন। এই কাঁটা বনের মানেটা কি? এক কথায় প্রকাশ করলে হয় কাঁটাঘেরা যে বন=কাঁটাবন। অথবা কাঁটা দেয়া যে বন। আর সন্ধিবিচ্ছেদ করলে হয় কাঁটা+বন। আচ্ছা কাঁটা মানে কি? আর বন - তারই বা মানে কি? আর ময়না এবং খাঁচা এরই বা মানে কি? শুনেছি জগতে কোন কিছুই বিধাতা অযথা সৃষ্টি করেননি। তিনি শুনেছেন-জ্ঞানীদের জন্য তিনি রেখেছেন অনেক নির্দশন। তাহলে এই পাখিটি সৃষ্টি করারই বা মানে কি? খাঁচা দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে? আর কাঁটাবনে কেন এত পশু-পাখির দোকান? এই যে কুকুর - একটা কমন প্রাণী। সেটাতো পবিত্র ধর্ম গ্রন্থেও আছে। সুরা কাহাফে কিতমির নামক একটি কুকুরের কথা বলা হয়েছে। কেন? ভাবতে ভাবতে তিনি চলে গেলেন ভাব জগতে। নিজের মনেই তিনি ভাবতে লাগলেন - এসব কিছু।
ভাবতে ভাবতেই তিনি কাগজ কলম নিয়ে লিখতে বসলেন। লেখার শিরোনাম দিলেন- খাঁচা ও পাখি। তিনি লেখা শুরু করলেন-


খাঁচা ও পাখি
রাজধানীর কাঁটাবন এলাকায় গেলে আপনি দেখতে পাবেন-হরেক রকমের দোকান।অধিকাংশই পোষা প্রাণীর দোকান। তথা প্রতিটি দোকানেই দেখা যায় কেউ পাখি,কেউ কুকুর, কেউ বা মাছের দোকান নিয়ে বসে আছে। প্রতিটি প্রাণীকেই আপনি পোষ মানাতে পারবেন।যেমন ধরুন মাছের কথা।এখানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।যা আপনি একুইরিয়ামে রেখে ড্রইং রুমের শোভা বর্ধনের কাজ করতে পারবেন। অনেকেই তা করছে।আবার ধরুণ কুকুরের কথা।দেশী-বিদেশী কুকুরের ছানা পাওয়া যায়।এই সমস্ত ছানা পোনা কিনে অনেকেই তা পোষ মানিয়ে নিজের বাড়ীর নিশ্চিত নিরাপত্তার কাজটি করছেন।আবার ধরুন পাখির কথা। এখানে পাওয়া যায় চেনা-জানা অনেক প্রজাতির পাখি।সেই পাখি কিনে আপনি তা পোষ মানাতে পারবেন। সেটিও অনেকেই করছেন।কিন্ত্তু আপনি যদি এ অতি সাধারণ বিষয়টিকে একটু অন্যভাবে দেখার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি দেখতে পাবেন এ অতি সাধারণ বিষয়টিতেই রয়ে গেছে জীবনের বাস্তব দর্শন।
কাঁটাবন(Thorns)-ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে-“Life is not a bed of roses.” কিংবা ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন (Natural Selection) তত্ত্বে বলা হয়েছে- “প্রকৃতি তাদেরই নির্বাচন করে, যারা বিরুপ প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারে”।Survival for the fittest- এ পরীক্ষায় আপনি যদি হেরে যান তাহলে আপনি পুরস্কার হিসেবে পাবেন-নির্ঘাত মৃত্যূ।এ সুত্র ধরে আপনি নির্দ্ধিধায় বুঝতে পারেন-কাঁটাবন নামের স্বার্থকতা কোথায়?
খাঁচা(Cage)-রুপকার্থে খাঁচা হচ্ছে আমাদের এ দেহ পিন্ঞ্জর। দেহ পিন্ঞ্জর খাঁচার মতোই খাঁচ কাঁটা।এ খাঁচা হতে পারে কাঁচা বাশেঁর অথবা পাকা কাজের অর্থাৎ লোহার তৈরী।সোনার তৈরী খাঁচাও পাওয়া যায়। কিন্ত্তু অত্যাধিক দামী হওয়ায় এ খাঁচা সাধারণ্যের ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়।
কাঁচা বাঁশের খাঁচা হচ্ছে-সাধারণ মানুষের বক্ষপিন্ঞ্জর।পাকা কাজের খাঁচা হচ্ছে – গুরুর দীক্ষা প্রাপ্ত শিষ্যদের খাঁচা। আর সোনার খাঁচা হচ্ছে-গুরুদেবের বক্ষপিন্ঞ্জর।
পাখি(Bird)-রুপকার্থে পাখি হচ্ছে-প্রাণ।প্রাণশক্তি খাঁচার মধ্যেই সুরক্ষিত থাকে।মুল প্রাণশক্তি নিহিত থাকে হৃদমাঝারে।আর এ হৃদমন্দিরেই ঠাকুর-পুরোহিত হয়ে বসে আছেন তথা আসীন আছেন তিনি।
মাছ(Fish)- রুপকার্থে মৎস বলতে আমাদের দেহের অভ্যন্তরে আত্মা তথা দেহবীজকে বোঝায় তথা বীযই হচ্ছে মৎস।যাকে অনেকেই মীন বলে থাকেন। আরবী হরফ মীম দেখতে অনেকটা এই মীনের মতোই। তাই দেহভিত্তিক গানে এই মীনকে নিয়েই অনেক গান রচিত হয়েছে।
কুকুর(Dog)-কুকুর বলতে প্রভু ভক্ত প্রাণীকে বুঝায়।প্রাণীদের মধ্যে এই কুকুরই হচ্ছে মানব জাতির কাছে প্রথম পছন্দের প্রাণী।সুরা কাহাফে কিতমির নামে একটি কুকুরের কথা আমরা জানতে পারি। কাহাফ নামক সুরাতে কুকুরের অস্তিত্ব থাকার অর্থ হচ্ছে-কাহাফ অর্থ গুহা।এখানে মানব দেহের কথা বুঝানো হয়েছে।সেখানে কুকুর থাকার অর্থ হলো-পাহাড়ার ব্যবস্থা করা তথা সালাত(ধ্যান)করা।কোন অপরিচিত বস্তু দেহের মধ্যে তথা মনের মধ্যে প্রবেশ করলে মন-মস্তিষ্কে স্হায়ী ছাপ ফেলতে পারে।সালাত তথা ধ্যানের গভীরতা থেকে বস্ত্তুটির অবস্থান সনাক্ত করে সেটিকে উচ্ছেদ করতে হয়।তথা মনের মধ্যে তার ছাপ ফেলতে দেয়া যাবে না।মন থাকবে স্বচ্ছ আয়নার মতো।
বাস্তব জীবনেও আমরা দেখতে পাই যার বাড়ীতে কুকুর থাকে সেই কুকুরটি দিনে ঘুমায় আর রাতের বেলা প্রভুর বাড়ী পাহাড়া দেয়।অপরিচিত কারো অস্তিত্ব টের পেলেই সে তার প্রভুকে ডেকে সজাগ করে দেয়।কোরআন শরীফে বর্ণিত ঐ কুকুরটি হচ্ছে- ভক্ত সাধকগণ।যারা এই কুকুর স্বভাবের।
চা হাতে নিয়ে মিতু দেখতে পেলেন তার স্বামী কি যেন লিখে যাচ্ছে আপন মনে। তিনি বুঝতে পারলেন তার স্বামী হারিয়ে গেছে তাঁর নিজস্ব ভুবনে।মাঝে মাঝে খুব বিরক্ত লাগে। কিন্ত্তু কি করবেন? কোন কিছুতেই সে মানতে চাইছে না। স্রোতস্বিনী নদীকে যেমন বাঁধ দিয়ে রাখা যায় না। তেমনি মনকেও বাঁধ দিয়ে রাখা যায় না। শত চেষ্টা করেও যখন সফল হচ্ছে না তখন আর বাঁধা দিয়ে কি লাভ? চলুক না যে ভাবে চলছে। ক্ষতি কি? হয়তো সংসারে টানা পোড়ন আছে। সেই সাথে আছে ভালোবাসার এক অটুট বন্ধন। এ বন্ধনকে তিনি কোন মতেই ছিঁড়তে দেবেন না।ঔদিকে মেয়ের ময়না পাখি নিয়ে মাতামাতি,ভাই-বোনের খুনসুটি দেখতে পেয়ে কি এক অজানা মমতায় চোখে পানি এসে গেল। স্বামীকে ডেকে চায়ের কাপটি হাতে দিয়েই তিনি দ্রুত ছুটে গেলেন মেয়ের দিকে।