পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০১৫

ভাবনার বিষয়-পর্ব এক

মনটা বিশেষ ভালো নেই। ইচ্ছে ছিল শাহ্ সাহেবের সাথে দেখা করবো। কিন্ত্তু তা আর হলো কই? পথে দেখা হলো মনা পাগলার সাথে। কি একটা নাম্বার দিয়ে বলে এটা জানলে না-কি একটা চরম সত্যকে জানা যাবে? সেই চরম সত্যটা কি-সেটা জানার জন্য মনটা আনচান করছে। নাম্বারটা মনে আছেঃ ০১২৩৫৭১২১৯৩২। কিন্ত্তু এর আগা মাথা কিছুই বুঝতে পারছি না। কি করি? চিন্তায় পড়ে গেলাম। হটাৎ মাহিনের কথা মনে হলো। ওর কথা মনে হওয়ায় খুশিতে প্রাণটা চনমন করে উঠলো। ভাবলাম ওকে সাথে নিয়ে যদি গবেষণা করি হয়তো সত্যটা উদ্ধার করা সহজ হবে। যেই ভাবা সেই কাজ।
মাহিনকে কল করলাম। পেয়েও গেলাম। ওপাশ হতে মাহিনের কন্ঠ ভেসে এল। বললোঃ
-কি রে কেমন আছিস? প্রতি উত্তরে জানালামঃ

-ভালো নেই।

-তার মানে?

-মানে আর কিছু না। দোস্ত তুই আমার এখানে চলে আয়। একটা বিষয় নিয়ে বড়ো চিন্তার মধ্যে আছি। দেরি করিস না। তাড়াতাড়ি চলে আয়।

-তাতো বুঝলাম। কিন্ত্তু কি নিয়ে এতো টেনশনে আছিস তাতো জানালি না?

-সেটা জেনে তোর কাজ নেই। তুই তাড়াতাড়ি চলে আয়।

-ঠিক আছে আসছি।

এই বলে মাহিন কলটা কেটে দিল। বুঝলাম কাজ হয়েছে। একটু রহস্য করায় ও হয়তো জানার আগ্রহে তাড়াতাড়ি চলে আসবে। আর আমার সত্যটাও জানা হবে। খুশিতে প্রাণটা নেচে উঠছে। আমি ওর অপেক্ষার প্রহর গুনতে লাগলাম। ওর বাসা আমার বাসা থেকে খুব একটা দুর না। আসতে যেতে আধ ঘন্টা লাগে। কিন্ত্তু এখন মনে হচ্ছে এই আধ ঘন্টা আমার জন্য আট ঘন্টার মতো। অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় না। বারান্দায় আমি ওর অপেক্ষায় থেকে একটা চেয়ারে বসে সিগারেট ধরিয়েছি। আর বসে বসে ভাবছি মনা পাগলার রসায়ন নিয়েঃ

মনা পাগলা। মন+না=মন্না নাকি ম+না=মনা। পাগলার সন্ধিবিচ্ছেদ কি হবে? পা+গল=পাগল নাকি প+আ+গ+অ+ল। বুঝতে পারছি না। তবে মনা পাগলা বলতে যেটা বুঝায় বা বুঝতে পারছি তাহলোঃ মনের পাগল। অর্থাৎ মনের বিকারগ্রস্থ কোন ব্যক্তি। কিন্ত্তু আসলেই কি সে বিকারগ্রস্থ? যে লোক এত গুছিয়ে বলতে পারে দিতে পারে ভাবনার খোরাক, সে কি করে বিকারগ্রস্থ হয়? আর যদি বিকারগ্রস্থই হয় তাহলে মনের মধ্যে উদিত প্রশ্নবানে সে জর্জরিত। চিন্তার রাজ্যে সে হারিয়ে যায়। কেননা একজন সুস্থ সবললোকের মনে তো এ ধরণের প্রশ্ন উথ্খাপিত হয় না। চিন্তা চেতনায় যে প্রভুর সান্নিধ্য লাভে ব্যাকুল সেই কি মনা পাগলা?
হটাৎ কলিং বেলের শব্দে আমার চিন্তা রাজ্যের ছন্দ পতন ঘটে। সিগারেটটা শেষ করে দরোজা খুলেই দেখি মাহিন হাসি মুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে বললোঃ-

-কি রে তোকে এত বিষন্ন লাগছে কেন? 

আমি বললামঃ

-ভেতরে আয়। তারপর বলছি। 

মাহিন ভেতরে ঢুকলো। তারপর জানতে চাইলো কি হয়েছে? অামি মাহিনকে আদ্যপান্ত খুলে বললাম। শুনে সে অট্রহাসিতে ফেটে পড়লো। ওর অট্রহাসি দেখে আমিও হেসে উঠলাম। হাসি থামিয়ে মাহিন বললোঃ

-কোন্ একটা পাগল তোকে কি বললো আর ওমনি তুই সেটাকে সিরিয়াস নিয়ে ভাবতে বসলি। শেষ মেশ তুই আমার শরণাপন্ন হলি যে কি-না কিছুই জানে না?

-এটা তোর ভুল ধারণা। তুই ক্ষেত্র বিশেষে আমার চেয়েও ভালোতো জানিস।

(চলবে)