(পূর্ব প্রকাশের পর)
-মিয়া ভাই, আপনে যে কথাগুলো বলছেন বা যে দলিল দিছেন আমরা তো লেহা পড়া জানি না। আমরা হেইডা কেমতে জানমু সেইটা সত্য না মিথ্যা?
আমি
চাচা মিয়ার দিকে দৃষ্টি
আকর্ষণ করলাম-তিনি কি
বলেন এ ব্যাপারে।
কিন্ত্তু
অতি আশ্চর্য্য হয়ে লক্ষ্য করলাম
তিনি এ ব্যাপারে কোন
প্রকার মন্তব্য করছেন না। তিনি
নীরব শ্রোতার মতো কেবলই শুনে
যাচ্ছেন। আশে পাশে বসে
থাকা লোকগুলো কেমন যেন হা
হয়ে গেল। আমার বুঝতে
বাকী রইল না -এই
সহজ সরল মানুষগুলো যে
বিশ্বাসকে লালন করে যাচ্ছে
তাতে বিন্দুমাত্র হলেও সেখানে একটা
বড়ো রকমের আঘাত করছে।
তারা বুঝতে পারছে না
কি বলবে? কিন্ত্তু আমাদের
প্রত্যেকেরই উচিত নিজের ধর্ম
সর্ম্পকে ভালোভাবে জানা। মসজিদের ইমাম
সাহেবদের দ্বারা কিংবা পীর-ফকিরদের দ্বারা যে ধর্ম
প্রচারিত হচ্ছে সেটা কতটুকু
সত্য? সে যা বলছে
তা কি তার বানানো
কথা নাকি পুঁথি পাঠের
মতোই তোতা পাখির মতো
বুলি উওড়ানো? পুস্তকে যা লিখা হয়
বা প্রচারিত হয়-প্রচলিত কথায়
অনেকটাই তাদের তথা প্রকাশকের
কথা। যেমন আমরা যখন
স্কুলে পড়তাম তখন আমাদের
এইম ইন লাইফ নামক
রচনা ইংরেজীতে পড়ানো হতো। সেটা
আমরা মুখস্ত করে পরীক্ষার
খাতায় লিখে দিলেই আমাদের
নম্বর প্রদান করা হতো।
কোন স্কুলের ইংরেজী ২য় পত্র
যেটা পাঠ্য করা হতো-সেখানে দেখা গেল
লেখক তার নিজের এইম
ইন লাইফ লিখেছে। তার
ইচ্ছে সে ডাক্তার হবে।
অথচ যে আর্টস বা
কমার্সের ছাত্র সেও পড়ছে
মাই এইম ইন লাইফ
ইজ এ ডক্টর। আবার
দেখা গেল সাইন্স যে
পড়ছে তার ইংরেজী পাঠ্য
পুস্তকে লিখিত আছে - মাই
এইম ইন লাইফ ইজ
এ টিচার। বিষয়টা কি
দাঁড়ালো? দাঁড়ালো আমরা সবাই এক
প্রকার তোতা পাখি। বুলি
উওড়ানো তোতা।
-মিয়া ভাই, আপনে যে কথাগুলো বলছেন বা যে দলিল দিছেন আমরা তো লেহা পড়া জানি না। আমরা হেইডা কেমতে জানমু সেইটা সত্য না মিথ্যা?
-চাচা
মিয়া, জানার জন্য পড়তে
হয় ইসলামের ইতিহাস। সেই ইতিহাসও বড়ো
করুণ ইতিহাস। আমাদের দুর্ভাগ্য হলো
এসব বিষয় নিয়ে আমরা
মাথা ঘামাই না। ধর্ম
বলতে আমরা বুঝি বাপ-দাদারা যেভাবে চলে
আসছে যেমন নামায পড়া,
রোজা রাখা, হজ্জ করা
যাকাত দেয়া, কুরবাণী করা
আর দুই ঈদে এবং
জুম্মার দিন জামাতের সাথে
নামায আদায় করা। কিন্ত্তু
ঐসব নিয়ে চিন্তা করার
আমাদের সময় কোথায়?
-ভাইজান
আপনে আসলে ঐ ঘটনা
বর্ণনা করে আমাদের কি
বুঝাতে চাইছেন? জিব্রাইল ফেরেস্তা বা নামুস নামক
যার কথা উল্লেখ করেছেন-সেটা কি আসলেই
ভিত্তিহীন?
দেখলাম
চাচা মিয়া যখন কথা
বলা শুরু করছেন তখন
অনেকেই এখন আস্তে আস্তে
সরব হচ্ছেন। এটা একটা ভালো
লক্ষণ। কোন গোঁড়ামি দেখা
যাচ্ছে না। তারা যেহেতু
বিষয়টি জানতে চাচ্ছে সেক্ষেত্রে
তাদের সাথে অালোচনা করা
যায়। আমি বললামঃ
-আমি
যেই ঘটনার কথা বলেছি
সেগুলি কি আপনারা মনোযোগ
সহকারে শুনেছেন? যদি শুনে থাকেন
তো সেখানে দেখতে পাবেন
মহানবীর চরিত্রকে খাটো করার জন্য
খ্রীস্টান পাদ্রী ওয়াকারা বিন
নাওফেল এর কাছে নিয়ে
যাওয়া হয়েছে। কারণ তিনি
আরবী ও ইবরানী ভাষায়
ইঞ্জিল লিখতেন। তার মানে ওহীর
ব্যাপারে ওয়াকারা বিন নাওফেল ছিলেন
একজন বিজ্ঞ ব্যক্তি(?) ।
আবার তিনি আফসোস করে
বলছেনঃ তিনি যদি সে
সময় বেঁচে থাকতেন,তাহলে
তাহাকে সাহায্য করতে পারতেন। তার
মানে কি দাঁড়ালো? প্রথমে
তাকে স্বপ্ন দেখানো হলো।
যে স্বপ্নটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। সেই
স্বপ্নে আদৃষ্ট হয়ে তিনি
হেরাগুহায় ধ্যানের আশ্রয় নিলেন। কারণ
হিসেবে বলা হলো - সে
সময় কোন ধর্মই প্রচলিত
ছিল না। এই ঘটনাটার
বর্ণনাকারী এমন একজনের কথা
রেফারেন্স দিয়ে তুলে ধরেছেন
যে আপনি সে ব্যাপারে
কোন প্রশ্নই তুলতে সাহস পাবেন
না। তিনি হলেন হযরত
আয়েশা সিদ্দিকা (রাহঃ)। যাকে
বলা হয় উম্মুল মোমেনিন।
অথচ হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর উপর
তখন ইসলাম জারী ছিল।
যেমন সুরা আনআম ১৬১
আয়াতঃ "কুল ইন্নি না
হাদানি রাব্বি ইলা সিরাতিল
মু্স্তাকিম, দ্বীনা কিইয়ামান মিল্লাতা
ইব্রাহিমা হানিফান ওয়া মা কানা
মিনাল মুশরিকিনা।" অর্থঃ বলুন আমার
প্রতি পালক আমাকে হেদায়েত
করিয়াছেন সরল পথে। যাহা
প্রতিষ্ঠিত ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ এবং তিনি মোশরেক
ছিলেন না। এই আয়াত
দ্বারা প্রমানিত হয় যে হযরত
মুহাম্মদ (সাঃ) কে আল্লাহ
পাক রাব্বুল আলামিন কোন নতুন
ধর্মাদর্শ দেন নাই। তাকে
যে ধর্ম দেয়া হয়েছে
তা পূর্বের ইব্রাহীম খলিলুল্লাহকে দেওয়া সেই পুরাতন
ধর্ম। তথা ইসলাম।
-তাইলে
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) রে আল্লাহয়
দুন্ন্যাইতে কেন পাডাইছে?
কোন
একজন প্রশ্ন করলো।
-আল্লাহ
পাক রাসুল(সাঃ) কে
দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন এই
জন্য যে - "ইন্নামা বুইছতু লিউতামমিমাল আখলাক"
। অর্থঃ নিশ্চয়ই
আমি প্রেরিত হয়েছি স্বভাবের গুণসমুহকে
উৎকৃষ্টরুপে ফুটিয়ে তোলার জন্য।
তাহলে আপনাকে জানতে হবে
স্বভাব কি? যা ফুটিয়ে
তোলার জন্য রাসুলের আগমণ?
এসমন্ধে আল্লাহ পাক বলেছেনঃ"
ফেতরাতাল্লাহিল্লাতি ফাতারান্নাছা আলায়হা, লা তাবদিলা-লি-খালাক্বিল্লাহ, জালিকা দীনুল ক্কাইয়ুমু
ওয়ালা কিন্না আকছারান্নাছে লাইয়ালামুন।"
অর্থঃ আল্লাহর যে স্বভাব, সে
স্বভাবেরই উপর মানুষকে সৃষ্টি
করা হয়েছে। আল্লাহর এই
সৃষ্টিতে কোনই পরিবর্তন নেই।
উহাই স্হায়ী ধর্ম। কিন্ত্তু
অধিকাংশ মানুষ তা বুঝে
না [সুরা রুম ৪
রুকু, আয়াত ৩০]।
উক্ত বাণী হতে বুঝা
যায় যে, আল্লাহর স্বভাবেই
মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে।
তাতে কিছুমাত্র ও পরিবর্তন করা
হয়নি। সুতরাং আল্লাহর এই
স্বভাব একটুও বিকৃত না
করে নিজের মধ্যে পরিপূর্ণরুপে
ফুটিয়ে তোলাই মানুষের ধর্ম।
তাহলে ধর্ম কি? ধর্ম
শব্দটি ধৃ ধাতু হতে
এসেছে। যার অর্থ ধারণ
করা। যা এই বিশ্বজগতকে
ধারণ করে রেখেছে তাই
ধর্ম। ধর্মের শাব্দিক অর্থ
স্বভাব বা প্রকৃতি। যেমনঃ
আগুনের ধর্ম দহন করা।
আল্লাহ অন্যস্হানে বলেছেনঃ" ছিবগাতাল্লাহি ওয়ামান আহসানু মিনাল্লাহি
ছিবগাতান।" অর্থঃ " আমরা আল্লাহর রংঙে
রন্ঞ্জিত । আল্লাহ
হতে রঞ্জিত অপেক্ষা কে
উৎকৃষ্ট? [সুরা বাকারা ১৬
রুকু আয়াত ১৩৮]।
আমরা আল্লাহর রংঙে রন্ঞ্জিত হওয়ার
অর্থ আল্লাহর স্বভাব হওয়া এবং
যিনি আল্লাহর স্বভাবে স্বভাব গঠন করেছে
তিনিই সর্বোৎকৃষ্ট। আল্লাহর এই পরিপুর্ণ গুণরাজি
আল্লাহ মানুষের মধ্যে আমানত রুপেই
অর্পণ করেছেন। যেহেতু আল্লাহ বলেছেনঃ"
ইন্না আরাধনাল আমানতা আলাছছামাওয়াতে ওয়াল
আরধে ওয়াল জেবালে, ফাআবাইনা
ওয়া আইয়াহমিলনাহা ওয়া আশফাক্কনা মিনহা
ওয়া হামালাহাল ইনসানু ইন্নাহু কানা
জালুমান জাহুলা [সুরা আযাব ৯রুকু
আয়াত ৭২]"। অর্থঃ
নিশ্চয়ই আমি আকাশ পৃথিবী
ও পর্বতের নিকট আমানত উপস্থিত
করেছিলাম। কিন্ত্তু উহা গ্রহণ করতে
অস্বীকার করেছিল এবং ভীত
হয়েছিল। অথচ মানুষ ইহা
গ্রহণ করেছিল। নিশ্চয়ই সে অত্যাচারী অনভিজ্ঞ
ছিল।
আমানত
হলো গচ্ছিত বস্তু। কোন
বস্তু যথা সময়ে ফিরিয়ে
দেবার চুক্তিতে গচ্ছিত রাখার নামই
আমানত। গচ্ছিত বস্তু যথাসময়ে
সঠিকভাবে ফিরিয়ে না দিলে
সে মানুষ বেইমান বলে
ধিকৃত হয়। মানবাত্মা আল্লাহ
হতে আগত। আল্লাহ মানবদেহে
নিজ রুহ ফুঁকে দিয়েছেন।
আমরা জানি প্রত্যেক বস্তু
তার মুল বস্তুর গুণে
গুণাণ্বিত থাকে। এই গুণরাজি
বিকৃত না করাই মানব
ধর্ম।
মহানবী
সেই ধর্ম কিভাবে পালন
করতে হয় তা দেখানোর
জন্যই দুনিয়াতে এসেছিলেন। আর হেরা গুহায়
ধ্যান করে তার রবকে
দর্শন করেছিলেন। সেই রবই তাকে
শিক্ষা দিয়েছিল। সুরা আলাকে তাই
বর্ণিত হয়েছে।
কারণ
সুরা আলাকে বলা হয়েছেঃ
১.
ইকরা বিসমি রাব্বিকাল লাজি
খালাক। অর্থঃ পড় পরদার
সহিত যাহা তোমার প্রভুরুপে
আছে এবং যাহা সৃষ্টি
করে।
২.
খালাকাল ইনসানা মিন আলাক।
অর্থঃ (এইরুপে) ইনসান সৃষিট হইয়াছে
আলাকা হইতে।
৩.
ইকরা ওয়ারাব্বুকাল আকরাম। অর্থঃ (হে
ইনসান) ক্কাফ শক্তির অনুশীলন
কর এবং তোমার রব
প্রতিষ্ঠিতভাবে (বা পরম) সম্মানিত।
৪.
আল্লাজি আল্লামাবিল কলম। অর্থঃ যিনি
(তোমাকে) শিক্ষাদান করেন কলম দ্বারা।
৫.
আল্লামাল ইনসানা মা লামইযালাম।
অর্থঃ শিক্ষা দেন আল
ইনসানকে যাহা সে জানে
না।
তাই
রবের দর্শনের ব্যাপারটিকে আড়াল করার জন্যই
এই গল্প তৈরী করেছিল।
আর রেফারেন্স হিসাবে হযরত আয়েশা(রাঃ)-কে কেন
তুলে ধরা হলো তা
জানতে হলে আপনাকে ইতিহাস
জানতে হবে। জানতে হবে
গাদীরে খুমের ঘটনাবলী এবং
জংগে জামালের ঘটনা ও রাসুলের
ওফাতের পূর্বাপর ঘটনাবলী। তাহলেই
মুল বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
আমার কথা শুনে সবাই চুপ মেরে গেল। নেহায়েত চাচা মিয়া বললো
-বাবা আমরা মুর্খ শুর্খ মানুষ। আমাগো বাপ-দাদারা যা কইছে তাই বিশ্বাস করছি। মসজিদের হুজুরগো কইতে হুনছি। এহন আপনে যা কইলেন হেইডাতো বাবা আমরা কেওই হুনি নাই। আর কি জানি গাদিরে খুমের কতা কইলেন হেডাতো বাজান আমরা জানি না। তয় আপনে হাছা না মিছা কইছেন আমরা তাও জানি না।
-চাচা মিয়া। এমন অনেক ঘটনাই আছে যা আমরা জানি না। আমাদের না জানার কারণেই সত্যটা সবসময় আড়াল থেকেই যাচ্ছে। সেই সত্যটা প্রকাশ করার জন্যই ইয়াজীদী ইসলামের পাশাপাশি মুহাম্মদী ইসলাম টিকে আছে। আর এ কারণেই আওলাদে রাসুল হযরত ইমাম হোসাইন (আঃ) স্বপরিবারে কারবালায় শহীদ হয়েছেন। "ইসলাম জিন্দা হেতাহ্যায় হার কারবালাকে বাদ।"
তো চাচা অনেক কথা বললাম। মনে কিছু করবেন না। আমি তাহলে আজকের মতো আসি।
-বাবা তুমি কই থাকো? আর তোমার কাছে ঐ গাদীরে খুমের ঘটনাটা ও রসুলের ওফাতের ঘটনাটা জানতে চাইছিলাম? যদি আমাগো কইতা, তাইলে আরো কিছু জানতে পারতাম।
-আমি থাকি ঢাকা। আর অনেক সময়ইতো বসলাম। এখন আর বসতে ইচ্ছে করছে না। তাই চলে যেতে চাইছি। অনেকদুর হেটে আসছিতো। তাই ক্লান্ত।
-ঠিক আছে বাবা। যাও। আবার যুদি এইহানে আহো তয় আমার বাইত্তে কিন্ত্তু আসবা। আমার নাম আফজাল শেখ। আফজাল শেখের বাড়ীর কতা কইলে সবাই দেহাইয়া দিব।
চাচা মিয়া আমার হাতদুটো জড়িয়ে ধরে আছে।তার থেকে বিদায় নিয়ে এবং দোকানের পাওনা মিটিয়ে দিয়ে এই ভরদুপুরে হাঁটা শুরু করলাম। হয়তো একটা অজানা স্হানকে জেনে ফেলেছি। তাই আর সেটা ভালো লাগছে না। চলে যেতে মন চাইছে অজানা কোন দুর গন্তব্যে। যার ঠিকানা কেউ জানে না।
আমার কথা শুনে সবাই চুপ মেরে গেল। নেহায়েত চাচা মিয়া বললো
-বাবা আমরা মুর্খ শুর্খ মানুষ। আমাগো বাপ-দাদারা যা কইছে তাই বিশ্বাস করছি। মসজিদের হুজুরগো কইতে হুনছি। এহন আপনে যা কইলেন হেইডাতো বাবা আমরা কেওই হুনি নাই। আর কি জানি গাদিরে খুমের কতা কইলেন হেডাতো বাজান আমরা জানি না। তয় আপনে হাছা না মিছা কইছেন আমরা তাও জানি না।
-চাচা মিয়া। এমন অনেক ঘটনাই আছে যা আমরা জানি না। আমাদের না জানার কারণেই সত্যটা সবসময় আড়াল থেকেই যাচ্ছে। সেই সত্যটা প্রকাশ করার জন্যই ইয়াজীদী ইসলামের পাশাপাশি মুহাম্মদী ইসলাম টিকে আছে। আর এ কারণেই আওলাদে রাসুল হযরত ইমাম হোসাইন (আঃ) স্বপরিবারে কারবালায় শহীদ হয়েছেন। "ইসলাম জিন্দা হেতাহ্যায় হার কারবালাকে বাদ।"
তো চাচা অনেক কথা বললাম। মনে কিছু করবেন না। আমি তাহলে আজকের মতো আসি।
-বাবা তুমি কই থাকো? আর তোমার কাছে ঐ গাদীরে খুমের ঘটনাটা ও রসুলের ওফাতের ঘটনাটা জানতে চাইছিলাম? যদি আমাগো কইতা, তাইলে আরো কিছু জানতে পারতাম।
-আমি থাকি ঢাকা। আর অনেক সময়ইতো বসলাম। এখন আর বসতে ইচ্ছে করছে না। তাই চলে যেতে চাইছি। অনেকদুর হেটে আসছিতো। তাই ক্লান্ত।
-ঠিক আছে বাবা। যাও। আবার যুদি এইহানে আহো তয় আমার বাইত্তে কিন্ত্তু আসবা। আমার নাম আফজাল শেখ। আফজাল শেখের বাড়ীর কতা কইলে সবাই দেহাইয়া দিব।
চাচা মিয়া আমার হাতদুটো জড়িয়ে ধরে আছে।তার থেকে বিদায় নিয়ে এবং দোকানের পাওনা মিটিয়ে দিয়ে এই ভরদুপুরে হাঁটা শুরু করলাম। হয়তো একটা অজানা স্হানকে জেনে ফেলেছি। তাই আর সেটা ভালো লাগছে না। চলে যেতে মন চাইছে অজানা কোন দুর গন্তব্যে। যার ঠিকানা কেউ জানে না।