পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৭

কবর ও মাজারঃ মনা পাগলার ভাবনা - দ্বিতীয় পর্ব

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)

মাথা খারাপের কথা শুনে মনা বিগড়ে যায়। সে বলেঃ

-মাওলানা সাব, মাতা তো আমার খারাপ অয় নাই। মাথা খারাপ হইছে তাগো, যারা কইতাছে অলি আউলিয়াদের মাজার জিয়ারত করা হারাম। তাদের মাজারে সালাম দেওন জায়েজ নাই। কোন মানত করা যাইবো না...অথচ কোরআনে বলতাছেঃ

"ওয়ালা-তাহ্সাবান্নাল্লাযীনা কূতিলূ ফী সাবীলিল্লা-হি আমওয়া-তা; বাল আহ্ইয়া উন ইন্দা রাব্বিহিম ইউরযাকূন (সূরা, আলে ইমরান আয়াত : ১৬৯)। অর্থঃ যারা আল্লাহর মহব্বতে জীবনকে উৎসর্গ করেছে; তাদেরকে মৃত মনে করো না, তারা বরং জীবিত, নিজের রবের নৈকট্যপ্রাপ্ত, নিজের রবের পক্ষ থেকে রিযিকও প্রাপ্ত। 

ওয়ালা-তাকুলূ লিমাই ইউক্বতালু ফী সাবীলিল্লা-হি আম্ওয়া-তা; বাল আহইয়া উওঁ ওয়ালা-কিললা -তাশ’উরূন (সূরা বাক্বারা, আয়াত : ১৫৪) অর্থঃ যারা আল্লাহর মহব্বতে জীবনকে উৎসর্গ করেছে; তাদেরকে মৃত মনে করো না, বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা জানো না।

"আলা ইন্না আওলিয়া আল্লা-হি লা-খাওফুন ‘আলাইহিম ওয়ালা-হুম ইয়াহ্‌য্বানূন। আল্লাযীনা আ-মানূ ওয়া কা-নূ ইয়াত্তাকূন। লাহুমুল্ বুশ্‌রা-ফিল্ হায়া-তিদ্ দুন্ইয়া ওয়াফিল্ আ-খিরাতি; লা-তাব্‌দিলা লিকালিমা-তিল্ লা-হি; যা-লিকা হুওয়াল্ ফাওযুল  ‘আজীম। (সূরা ইউনুস, আয়াত, ৬২-৬৪)"। সর্তক হও! জেনে রাখো, আল্লাহর বন্ধু অলি-আউলিয়াদের কোন ভয় নেই এবং তাঁরা চিন্তাযুক্তও হন না। যাঁরা বিশ্বাস করেন এবং সাবধানতা অবলম্বন করেন, তাঁদের জন্য ইহকাল ও পরকালের জীবনে সুসংবাদ আছে, আল্লাহর বাণীর কোন পরিবর্তন নেই, এটিই মহা সাফল্য।

-হারামজাদা কিয়ের লগে কি মিলাইতাছে? মনডা কয় দেই একটা কানাপট্রির মইদ্যে... 

-অহনতো দিবেনই...উচিত কতা কইলেই ফাল দেন।

-ওই তুই কি জানস..ক....খালি উল্টা-পাল্টা কইলেই মনে করছে হেয় সব পারে...পারঅইন্যার পো পারঅইন্ন্যা... 

মাওলানা সাহেবের ভেংচি কাটাটা মনার মনঃপুত হয়নি। মনা মনে মনে দুঃখিত হলেও নিজেকে সামলে নিয়ে বলতে লাগলোঃ

আমি যা কইছি কোরআনই তার দলিল। কোরআনে যা আছে, তাই কইছি। আপনে তো মাওলানা....আপনে কন যেই আয়াত গুলি কইছি তা-কি কোরআনের বাইরে...তাইলে আরো কই হুনেন......

এ কথা বলেই মনা বলতে শুরু করে দিয়েছে। সে বলছেঃ

ওয়ামাই ইউত্বি‘ইল্লা-হা ওয়ার রাসূলা ফাউলাইকা মা’আল্লাযীনা আন’আমাল্লা-হু আলাইহিম মিনান নবিয়্যীনা ওয়াছ্‌ছিদ্দীকিনা ওয়াশশুহাদাই ওয়াছ্ ছালিহীনা, ওয়া হাসুনা উলা-ইকা রাফীক্বা। (সূরা নিসা, আয়াত: ৬৯)

অর্থঃ সত্যবাদী, শহীদ ও সিদ্দীকগণ আল্লাহ ও রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আশেক। তাঁরা বেহেশতে নবী সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গী হবেন, তাঁরা কতই না সুন্দর।

হযরত আলী (আ.) ইরশাদ করেন যে, আমার অন্তরে ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, মাতা-পিতা এমনকি শীতল পানি অপেক্ষাও মহানবী সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসা অধিক প্রিয় (হাদিসঃ মাদারেজুন নবুয়্যত)। 
নিশ্চ ই আল্লাহর বন্ধুদের কোনো মৃত্যু নেই, বরং তাঁরা স্থানান্তরিত হয়, ধ্বংসশীল ইহজগৎ থেকে স্থায়ী পরজগতে (আল হাদিস)। নিশ্চ য়ই আমার বন্ধুগণ আমার জুব্বার অন্তরালে অবস্থান করেন। আমি এবং আমার আউলিয়াগণ ব্যতীত তাদের পরিচিতি সম্বন্ধে কেউ অবগত নয় (আল হাদিস)। 

আলা ইন্না আওলিয়া আল্লা-হি লা-খাওফুন ‘আলাইহিম ওয়ালা-হুম ইয়াহ্‌য্বানূন। আল্লাযীনা আ-মানূ ওয়া কা-নূ ইয়াত্তাকূন। লাহুমুল্ বুশ্‌রা-ফিল্ হায়া-তিদ্ দুন্ইয়া ওয়াফিল্ আ-খিরাতি; লা-তাব্‌দিলা লিকালিমা-তিল্ লা-হি; যা-লিকা হুওয়াল্ ফাওযুল  ‘আজীম। (সূরা ইউনুস, আয়াত, ৬২-৬৪)

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতা’লা সবাইকে সর্তক করে বলেন, সর্তক হও! জেনে রাখো, আল্লাহর বন্ধু অলি-আউলিয়াদের কোন ভয় নেই এবং তাঁরা চিন্তাযুক্তও হন না। যাঁরা বিশ্বাস করেন এবং সাবধানতা অবলম্বন করেন, তাঁদের জন্য ইহকাল ও পরকালের জীবনে সুসংবাদ আছে, আল্লাহর বাণীর কোন পরিবর্তন নেই, এটিই মহা সাফল্য।
(চলবে)