পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৮

আজব দরবার হ্যায় দরবারে খাজা

আরশে মোয়াল্লায় একটা মালা ঝুলছিল। তাতে লেখা ছিলঃ 
"লান্ নাতুল্লাহে আলা ইবলিশাছাহ্"। অর্থাৎ ইবলিছের উপর আল্লাহ্ তায়া'র অভিশাপৎ বর্ষিত হোক। 

হযরত আজাজিল (আঃ) আল্লাহ্ পাকের কাছে আরজ করলেনঃ "হে মহান প্রভু! এই ইবলিছটা কে? যার উপর তোমার অভিশাপৎ বর্ষিত হোক" বলে লিখে রেখেছো? 
মহান প্রভু বললেনঃ সময় হলেই তুমি তা দেখতে পাবে। হযরত আজাজিল (আঃ) আরো একবার জোরে শোরে বললেনঃ "লান্ নাতুল্লাহে আলা ইবলিশ ছাহ্"।

কিছুদিন পর যখন মহান প্রভু হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করে তাকে সিজদাহ্ করার জন্য আদেশ দিলেন, তখন হযরত আযাযিল (আঃ) সিজদাহ করা থেকে বিরত রইলেন।  মহান প্রভু দয়াময় আল্লাহ পাক তাকে জিগ্যাসা করলেনঃ 

"তুমি কেন আদম (আঃ) কে সিজদাহ করলে না? কিসে তোমাকে বিরত রাখলো?"
হযরত আযাযিল (আঃ) উত্তর করলেনঃ "সে মাটির তৈরী আর আমি আগুনের।" 
মহান প্রভু তাকে বললেনঃ "দুর হ! হে ইবলিশ।"
এ কথা বলার সাথে সাথেই হযরত আযাযিলের গলায় আরশে মোয়াল্লায় ঝুলে থাকা সেই লান্নতের মালাটি খসে পড়লো। এবং ইবলিশের গলায় তা ঝুলে রইলো। এই মালাটি কেয়ামত দিবস পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। 

ঠিক তদ্রুপ, বারাহিগুনি দরবার শরীফের মুল ফটকে লেখা আছেঃ " দরবারে খাজা"। বারাহিগুণী দরবার শরীফ।
অর্থাৎ এই দরবারটি খাজার দরবার। অর্থাৎ মহান মুর্শিদ কেবলাহ্ হযরত খাজা শাহ্ পীর চিশতী (রহঃ) এর দরবার নয়। এই দরবারটি হযরত খাজা সুলতানুল হিন্দ খাজা গরীব নওয়াজ (রাজিঃ) এর দরবার। 

এই দরবারে যারা  জিয়ারত করেন এবং এখানে এসে বাইয়াত গ্রহণ করে ধন্য হন, তারাও সেই লেখাটি পড়ে থাকবেন। এবং পবিত্র ওরোছ শরীফে বর্ণিল ব্যানারে সজ্জিত  অনেক ব্যানারের ফাঁকে একটা বা দুটো ব্যানারে লেখা থাকেঃ

"আজব দরবার হ্যায় দরবারে খাজা
আজব সরকার হ্যায় সরকারে খাজা।।"

সেটিতেও আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে বৈ কি?  কিন্তু যেটি দৃষ্টি গোচর হয়নি সেটি হলো এর ইতিহাস। অর্থাৎ এর পেছনে বর্ণিত মুল বা প্রকৃত সত্যটি।

উল্লেখ্য যে, এই দরবার শরীফ অন্যান্য আট-দশটা দরবারের মতো নয়। এখানে আদব-কায়েদার বরখেলাফ হলেই মহান অলী-আউলিয়া, সুলতানুল হিন্দ খাজা গরীব নওয়াজ (রাজিঃ) এর হুকুম মোতাবেক তার উপর এমন এক বিপদাপদ কিংবা বালা-মুছিবাত আসবেই, যা তাকে দুনিয়া এবং আখিরাতের কল্যাণকামিতা থেকে দুরে রাখবে। কারণ, মাওলানা জালালউদ্দিন রুমী (রহাঃ) এর ভাষায়ঃ

"আয় খোদা জুইয়াম তাওফীকে আদব,
 বে আদব মাহরুম গাশত আয ফজলে রব। 

অর্থঃ হে খোদা তুমি দয়া করে, আমাকে আদব ভিক্ষা দাও। কেননা বে-আদব আল্লাহর রহমত হইতে বঞ্চিত থাকে। 

জালাল উদ্দিন রুমী আরো বলেনঃ
বে-আদব বা তা খোদরা দাশতে বদ বালকে আতেশ দারহামা আফাক যাক। 

অর্থঃ বে-আদব শুধু নিজেকেই ক্ষতি করে না বরং সে পৃথিবীতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।