পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০১৬

সাঁইয়ের এনাটমী ও মনা পাগলার অদ্ভুত হাসি-পর্ব পন্ঞ্চম

(পুর্ব প্রকাশের পর)

মনা অবাক বিষ্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলো সকলেই পিরপতন নীরবতা নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে তাদের দিকে তাকিয়ে বলা শুরু করলোঃ

আমি আপনেগো কাছে যেই কতা কমু, আপনেরা তা সিরিয়াসভাবে নিয়েন না। বিষয়ডা চিন্তা কইর‌্যা দেকপেন। যুদি চিন্তা করেন, তাইলে হয়তো সত্যডারে জানতে পারবেন। দেহেন আল্লাহ পাক যহন আদমের সৃষ্টি শেষ করলেন, হেই সময় আল্লাহ পাক হগগল ফেরেস্তাগো ডাইক্যা কইছিলঃ

"ফা ইজা সাওয়াইতুহু ওয়া নাফাকতু ফিহে মের রুহি ফা কাউলাহু সাজেদীন "- যখন আমি তাকে (আদম) সম্পুর্ণভাবে তৈরী করবো এবং তার মধ্যে আমার আত্মা ফুঁকে দিব, তখন তোমরা সকলেই (ফেরেস্তা) তার (আদম) সম্মুখে সেজদায় পড়ে যাবে। সুরা হাজর আয়াত-২৯। এই রুহটা হইলো জাননের বিষয়। এই রুহটা এই জগতের না। বাইরে থিক্ক্যা আসা কোন একটা শক্তি যেই শক্তির বলে জীব চলাফেরা করে। এই শক্তির অন্য নাম হইলো ঈসায়ী শক্তি।

হুনেন আমরা হগ্গলেই কই আল্লাহু আকবর। আল্লাহ সর্বশক্তিমান। আল্লাহ শব্দের মাইনে টা কি? আল্লাহ শব্দটারে যুদি ভালো কইর‌্যা লক্ষ্য করেন দেকবেন হেই হানে আল(আলিফ লাম) + লাহ(লাম হে) অর্থাৎ দুইডা লাম আছে। তার আগে আছে আলিফ এবং শেষে আছে হু। আল+ইলাহ+হু=আল্লাহু। আল মানে অইলো সবকিছু । যা কিছু আছে সবকিছু। ইলাহ হইলো উপাস্য বিষয় অর্থাৎ যারে উপাসনা করা হয়। আর হু মানে অইলো তিনি। তার মাইনে অইলো সার্বজনীন উপাস্য যিনি/তিনি। এই তিনিই অইলো জাননের বিষয় যেইডারে কয় রুহ। এইডা ছাড়া কোন শক্তিই কার্যকরী অয় না। হেরলাইগ্গ্যাই কয় সর্বশক্তিমান। সর্বশক্তির আধারই তিনি। তিনি ছাড়া আর কিছুই নাই। সবজায়গায়ই হের উপস্থিতি। হেরে সন্ত্তুষ্ট করণের লিগ্গ্যাই ইবাদত করন লাগে। তার বন্দেগী করন লাগে। সবচেয়ে বড় কথা অইলো কোরানে এই সর্ম্পকে খুবই কম আয়াত আছে। এইডা বড় আচানক বিষয়। হেয় হের বর্ণনাটা বেশি করে নাই। কারণডা কি?
মনা যখন এ কথা বলে সকলের দিকে তাকালেন তখন মনসুর বললোঃ

-ভাই, আফনে যে কইলেন যা কিছু আছে সবই হের। অর্থাৎ আল্লাহর। তাইলে তো ভাই আল্লাহ ছাড়া কিছুই নাই। যেই উপাদানগুলি দেহি হেইডাওতো আল্লাহর। আবার কইছেন - হেয় যেই শক্তি লইয়্যা কাজ করে হেই শক্তিরে কয় ঈসায়ী শক্তি। তাইলে তো দেহি কাম কাইজ যা আছে সবই হেয় করে। হের শক্তি ছাড়া কাম করমু কেমতে? পাপের কামওতো তাইলে হেই করে (নাউযুবিল্লাহ!)। হের শক্তি দিয়াইতো বেহেস্ত দোযক তৈরী। তাইলে হেয় কারে শাস্তি দিব? যুদি শাস্তি দেয় তাইলে হেয়তো হেরেই শাস্তি দেয়? আমরা কারা? বিষয়ডা কি বুজাইতে পারলাম কি-না জানি না। 

-ভাই, আপনের যে কতা হেইডা গুরুত্বপুর্ণ কতা। যা কিছু আছে সবইতো হের। হেয় ছাড়া জগতে কিছুই নাই। আল মাশরিকু ওয়াল মাগরিবু ফা আইনামাতুয়াল্লু ফা ছাম্মা ওয়াজহুল্লাহ। পুর্ব-পশ্চিম অতঃপর তুমি যে দিকে তাকাও হেই দিকেই আল্লাহর চেহারা। আবার কইছেঃ নাহনু আকরাবু ফি হাবলিল ওয়ারিদ। আমরা তোমার শাহরগের নিকটে। দেহেন ভাই, আপনে যদি ভালো কইর‌্যা বুঝবার চেষ্টা করেন তা্‌ইলে দেকবেন আদম এবং শয়তান ও ফেরেস্তাগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লিগ্গ্যা যহন প্রতিযোগিতা অয় তখন আল্লাহর যেই শক্তি  কাজ করছিল হেইডারে কয় রব। রব মানে পালন কর্তা। অর্থাৎ আদমের পালন কর্তা অইয়্যাা হেয় আদমরে কিছু শিক্ষা দীক্ষা দিছিল। যেইডা কুরআনে আছেঃ সুরা বাকারার মইধ্যে। তাইলে হের জ্ঞান লইয়া আপনে পৃথিবীতে আইছেন শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার লইয়্যা। আশরাফুল মাখলূকাত অইয়্যা। হেই শ্রেষ্ঠত্ব আপনে বজায় রাখতে পারছেন নি, হেইডা কি হেয় বিচার করবো না? হেয়তো আপনের সাথেই আছে। হেরে লইয়্যা আপনে আকাম-কুকাম করবেন আর কইবেন হেয়ও করছে, হেইডা অইবো না। হেয় আপনের লগেই থাক্ক্যাইয়াই দেকতাছে আপনে কি করেন? আপনেরে কয় নফস। নফস নামে আত্মা। আর এই আত্মা অর্থাৎ কি-না আপনের যে দেহডা এইডা পাঁচটা উপাদান দ্বারা তৈরী। এলমে তাসাউফের ভাষায় হেই উপাদানগুলিরেই কয় আল্লাহ। তাইলে আল্লাহ একজন না। পাঁচ জন। এই পাঁচজনকে লইয়্যাই কোরআনে নাহনু কইছে। এই নাহনু মানে এগোরে অয় পাক পান্ঞ্জাতন। পাক মানে পবিত্র। তন মানে দেহ। পাক পান্ঞ্জাতন মানে পাঁচটা পবিত্র দেহ। যাগো ফকিরি ভাষায় কয়-ওয়াযেবুল ওযুদ, মোমতেনালেওযুদ, মোমকেনাল ওযুদ,আরেফল ওযুদ এবং অহেদাল ওযুদ। মানি অইলো মাটি,পানি,আগুন,বাতাস ও আকাশ। এই পন্ঞ্জভুতই অইলো সমগ্র সৃষ্টির মুল উৎস। এ্যাগোরে লইয়্যাই আল্লাহর পরিবার। হেই পরিবারের প্রধানরে কয় খালেক। মানে সৃষ্টিকর্তা। বাড়ীর মইদ্যে যে প্রধান থাহে হেরে কয় কর্তা। এই দেহঘরের মইদ্যে হেয় অইলো অচিন পাখি। কারণ দেহ মানে উপাদানগুলি জগতের রং রুপ দেইক্যা হেরে ভুইল্ল্যা গেছে গা। তারে চিনে না দেইক্ক্যাই হেরে অচিন পাখি কয়। কিন্ত্তু যারা মোমিন তারা হেরে চিনতে পারে। দেকতে পারে। হের আকার আছে। প্রকার আছে। হের অস্তিত্ব টের পাওন যায়। হেয় থাকে অন্তরের মণিকোঠায়। সুরা নুরের মইধ্যে হের বর্ণনা আছে।
(চলবে)

[ বিঃদ্রঃ আমার লেখাটি বিশেষ করে তরীকতপন্থীদের জন্য প্রযোজ্য। বেমুরীদ তথা যারা তরীকত নেননি বা যারা সাধারণ জ্ঞানের কিংবা ভাষা জ্ঞানে জ্ঞানী তারাও দয়া করে বিষয়টি নিয়ে মাতামাতি না করলে খুশি হবো। এছাড়া মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রীরা অথবা যারা আরবী লাইনে লেখা পড়া করেছেন, তারাও এ লেখাটি দয়া করে এড়িয়ে চলবেন। এ নিয়ে কোন প্রকার বাহুল্য কিংবা তর্ক-বিতর্ক করার ইচ্ছা বা আকাংখ্যা আমার নেই। আপনাদের সকলকেই ধন্যবাদ। ভুল ভ্রান্তি মানুষই করে। মনা পাগলা আপনাদের মতোই মানুষ। তারও ভুল হতে পারে। পাগলের প্রলাপ কেবল মাত্র পাগলদের জন্যই প্রযোজ্য। কোন সুষ্থ্য মানুষের জন্য প্রযোজ্য নয়। ]