পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৬

সাঁইয়ের এনাটমী ও মনা পাগলার অদ্ভুত হাসি-শেষ পর্ব


(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)
এই পরমাত্মাকে ইসলামের পরিভাষায় কয় রুহ। রুহ সর্ম্পকে কোরআনে বেশ কিছু আয়াত আছে। এই বিষয়ে আলোচনা করনের আগে একটা কতা কইয়্যা লই। রুহ নামক বিষয় সর্ম্পকে ইহুদিরা নবীপাককে প্রশ্ন করেছিল। হেই প্রশ্ন হুইন্যা আল্লাহ পাক সাথে সাথে নবীর জবানে কয়ঃ কুল্লির রুহ মিন আমরি রাব্বি। বলুন, রুহ আমার রবের হুকুম। হুকুম মানে অইলো আদেশ। আদেশ দেওনের লিগ্যা জবান লাগে। মানে শব্দ উৎপত্তি করণের জন্য একটা যন্ত্র লাগে। যেইডারে কয় স্বরযন্ত্র। আমরা কই হলকুম মানে গলার উঁচু স্থান। হৃদয়ের মইধ্যে বুদ বুদ আকারে যে শব্দ অয় হেইডারে কয় কলুল্লাহ। নিজ দেহের মইদ্যে হেয় (রবরুপে) বইস্যা থাইক্যাই হেইহান থিক্কা হুকুম দিতাছে। জ্ঞানীগণ হেইডারে দেহনের লিগ্যাই তাগো (রবের) সাধন ভজন করে। হেইডা বুজনের লিগগ্যা কোরআন পরলে দেকবেন, বেশির ভাগই আদেশ নিষেধ করা বাইক্য। যেমনঃ তুমি কি দেখ না তোমাকে কি বস্তু থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে? দ্যাহেন - প্রশ্নডা কে কারে কইতাছে? কারে দেকতে কইতাছে? যে দেকতাছে হেয় কারে দেকতাছে? যখন বস্তুর সৃষ্টি হয় তারপরই কইতাছেঃ নাফাকতু ফিহে মির রুহি। আমি তোমার ভেতর রুহ ফুঁকে দিলাম। রুহডা ভিতরে প্রবেশ করণের লগেই বস্তুটি চৈতন্যপ্রাপ্ত হয়। হের আগে হেয় (বাীজ বা আত্মা) কিন্ত্তু ছিল মৃত। যহন রুহটা থাকে তহন জীবিত থাকে। তার মাইনে অইলো রুহরুপে সেই মহান জাত পাক মানবদেহের মইধ্যেই নিজেকে প্রকাশের লীলাভুমিরুপে সৃষ্টি কইর‌্যা নুরে মুহম্মদীর সৃষ্টির প্রকাশ বিকাশ দেকতাছে। নুরে মুহাম্মদীর মইধ্যেই রুহটা প্রচ্ছন্নরুপে বিরাজিত থাকে। হেই শক্তি লইয়্যাই হেয় মায়ের রেহেমে প্র্র্র্র্বেশের জন্য আবে হায়াতে সাঁতার কাটে। সুফীদের চিন্তা চেতনা হেই  শক্তিরে কেন্দ্র কইর‌্যা। আর বাউলরা করে ঐ সৃষ্টিরুপ মীনকে। পার্থক্য এইডাই। এই রুহডাই যখন সাধনার বলে বাইরে আহে তহন হেইডারে কয় হুর। নিজরুপে নিজকে দেহাই অইলো মুল সাধনা। সৃষ্টির মুল বিষয় অইলো নুর মুহাম্মদ। এই নুর মুহাম্মদ থিক্ক্যাই সকল কিছুর সৃষ্টি। আল্লাহ পাক বলতেছেন হেই নুর মুহাম্মদকে লক্ষ্য কইর‌্যাঃ যদি আমি আপনাকে সৃষ্টি না করতাম, তাইলে আমি কিছুই সৃষ্টি করতাম না। লাওলাকা লামা খালাকতুল আফলাক। আর এই নুর মুহাম্মদীরই পরিপুর্ণ প্রকাশ জাহিরী নবী মুহাম্মদ। নাবালক বাচ্চারে বুঝাইনলার লাইগ্যা একটা মেছাল লাগে। মেছাল না দিলে হেয় বুঝবার পারে না। নুর মুহাম্মদীর মেছাল অইলো জাহিরি নবী মুহাম্মদ। আর হের জবানেই পাইঃ আউয়ালু মা খালাক আল্লাহু নুরী অানামিন নুরুল্লাহি ওয়া কুল্লু শাইইমমিন নুরী। আল্লাহ পাক সর্বপরথম আমার নুর সৃষ্টি করছেন। আমি আল্লাহর নুর থিক্ক্যা আর সমস্ত মাখলুক আমার নুর থিক্ক্যা। সুফীগণের চিন্তা চেতনা বাউলগো চিন্তা চেতনার লগে মিলে না। বাউলরা যেইহানে শ্যাষ করে সুফীরা হেইহান থিক্ক্যা আরম্ভ করে। বাউলগো লগে সুফীগো কহনোই মিলে না। তাই বইল্যা সুফীরা কহনো বাউলগো গাইল্লায় (বকা-ঝকা করা ) না । হেরা কাউরে মারামারি ধরাধরির মইধ্যে নাই। যার যারডা লইয়্যা হেয় হেয় ব্যস্ত। অন্তরের মইধ্যে বাত্তি জ্বালানের লিগ্যা জিকির করণ লাগে। রেয়াজত, ধ্যান-সাধনা করণ লাগে। খালি পইড়্যা পইড়্যা মুখস্ত কইর‌্যা বিদ্যার জাহাজ অইলেই অইবো না। দেহের মইদ্যে বাত্তি জ্বালান সহজ কাজ না...বুঝবার পারছেন।

মনার কথা শুনে অনেকেই বাহবা দিতে লাগল। কেউ বা কিছুটা সন্দেহের চোখে দেখলো। কিন্ত্তু কেউ কিছু বললো না। কথা বলতে বলতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে টেরও পায়নি। মনা কেবল ভবার দিকে তাকিয়ে বললোঃ চল যাই। এই বলে তারা আবার হাটা শুরু করলো। কিন্ত্তু কি আশ্চর্য্য কেউ আর আগের মতো হাসছে না। কেমন যেন নির্লিপ্ত ভঙ্গীতে হাটছে। তাদের দিকে তাকিয়ে সরকার সাহেব মনে মনে বললেনঃ সকলকে এক পাল্লায় মাপা ঠিক না। কার ভেতর তিনি খেলা করছেন সেটা তিনিই ভালো জানেন।