পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০১৬

সাঁইয়ের এনাটমি ও মনা পাগলার অদ্ভুত হাসি -পর্ব দুই

(প্রথম পর্বের পর)

এছাড়া আরো আছেঃ

৪. "ওয়া আনজালঅ মেনাস সামায়ে মা-আন ফা-আখরাজনা বিহি আজওয়াজাম মেন নাবাতেন শাত্তা [সুরা তা-হা আয়াত ৫৩] অর্থঃ এবং আল্লাহ তিনিই - যিনি আসমান হইতে পানি বর্ষান এবং তদ্দ্বারা আমরা পয়দা করি জোড়ায় জোড়ায় উদ্ভিত-একটা আরেকটা হইতে আলাদা। এখানে জাওজ - একজোড়া বহুবচনে আজওয়াজ শব্দের তরজমা। এই শব্দটির মুল অর্থঃ যেখানে একজন আরেক জনের মিলিত সংগী মিলিতভাবে তৈরী করে জোড়া। এই জাওজ শব্দটি সাধারণত ব্যবহৃত হয় বিবাহিত দম্পত্তি কিংবা একজোড়া বুঝাতে।

৫. "ওয়া মেন কুল্লেস সামারাতে জায়ালা ফিহা জাওজায়নেসনায়নে.... " [সুরা রাদ আয়াত-৩] অর্থঃ এবং যে সমস্ত ফল(আল্লাহ) দিয়াছেন ৯জমিনের বুকে) তাহাদের দুইটিতে মিলিয়া একজোড়া। 

৬. ওয়াল্লাহু আনবাতাকুম মিনাল আরদে নাবাতান-সুম্মা ইউয়িদুকুম ফিহা ওয়া ইউখরেজুকুম ইখরাজান" [সুরা নুহ আয়াত ১৭ ও ১৮]। অর্থঃ বরং অাল্লাহ তোমাদিগকে উদ্ভুত করিয়াছেন ভুমি হইতে-উদ্ভিদের ন্যায়। অতঃপর তিনি উহাতে তোমাদিগকে ফিরাইয়া লইবেন এবং তিনি তোমাদিগকে সেখান হইতে বাহির করিবেন-এক(নতুন)জাত হিসাবে।

৭. "মিনহা খালাকনাকুম-ওয়া ফিহা নুয়ীদুকুম-ওয়া মিনহা নুখরেজুকুম তারাতান উখরা " [সুরা তা-হা আয়াত-৫৫]। অর্থঃ এই জমিন হইতেই আমরা তোমাদিগকে পগিঠিত করিয়াছি এবং ইহাতেই তোমাদিগকে ফিরাইয়া লইব এবং ইহা হইতেই তোমাদিগকে বাহির করিব অন্য সময়ে। এই আয়াতে মাটি থেকে মানুষের বিকাশের উপরে গুরুত্ব আারোপ করা হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় যে, আমরা পুনরায় এই মাটিতেই ফিরে যাব এবং সেই সাথে এখানে এই ধারণা দেওয়া হয়েছে যে অাল্লাহ শেষ বিচারের দিনে এই মাটি থেকেই আমাদের পুনরুখ্থান ঘটাইবেন।

সরকার সাহেব একের পর আয়াত পাঠ করে যাচ্ছেন। তা শুনে মনা পাগলা ও ভবা দুজনেই বেশ অবাক হয়ে গেল এবং হা করে সরকার সাহেবের দিকে তাকিয়ে রইল। আর সরকার সাহেব বেশ গুছিয়ে কোরআনে পাকের আয়াতের অর্থ সহ বর্ণনা করে যাচ্ছেন। তা শুনে আশে পাশের লোকজনের মধ্যে বেশ আগ্রহের সৃষ্টি হলো। তারা মনা ও ভবাকে নিয়ে এবং সরকার সাহেবকে নিয়ে মতিনের দোকানের ভেতর ঢুকে গেল। 

মতিন মিয়া সরকার সাহেবকে আগে থেকেই চিনতেন। সরকার সাহেব একটি স্কুলের ইসলামিয়াতের শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা শেষ করে তিনি এখন টিউশনী করে বেড়ান। তার এক মেয়ে ও দুই ছেলে। মেয়েটির বিয়ে দিয়েছেন এবং বড় সামিউল অষ্ট্রেলিয়াতে কমপিউটার সাইন্সে পড়া শোনা করছে। ছোটটিও সদ্য ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে বাইরে যাবার চেষ্টা করছে। মতিন সবাইকে চা দিয়েছে। মনা চায়ে চুমুক দিতে দিতে ভবাকে বললোঃ

-ভবা কি বুঝলি?

-তোতা পাখি। খালি কইতাছে। কইতে দে। দেখবি এক সময় সবই এক জায়গায় আইস্যা থাইম্ম্যা গেছে। তখন শুরু করিস...

-আমি ও তাই ভাবতাছি। দেহি কদ্দুর যাইতে পারে....

লোকজনের ভীড় ক্রমশ বাড়ছে। সবাই বেশ আগ্রহ বোধ করছে। আসলে প্রকৃত বিষয়টি জানার জন্য যেন সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তারা জানতে চায় কে জেতে? পাগলেরা না সরকার সাহেব? তারা ধরেই নিয়েছে এখানে একটা ছোট্ট খাট্ট বাহাছ হচ্ছে। অথচ কেউ বুঝতে চাইছে না আসলে কি নিয়ে কথা হচ্ছে? মানুষের মধ্যে আগ্রহবোধ কাজ করে কেবল কৌতুহল নিবারণের জন্য। কৌতুহল মিটে গেলে তারা আর সেটাকে মনে রাখে না।

চা শেষ করে সরকার সাহেব আবারো বলা শুরু করলেনঃ

"হুয়া আনাশাঅাকুম মিনাল আরদে...[সুরা হুদ অায়াত ৬১] অর্থঃ তিনিই অাল্লাহ তোমাদের উদ্ভব ঘটাইয়াছেন জমিন হইতে...

(চলবে)