পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৬

মনা পাগলার ঈশ্বর ভাবনা - প্রথম পর্ব

চৈত্রের খররৌদ্রে সুর্যস্নানের মতো ভিজছে মনা পাগলা। তাতে তার কোন বিকার নেই। সে কেবল হাঁটছে। হাতির ঝিলের পাশ দিয়ে ছুটে চলেছে। হন হন করে। তার হাটার ধরণ দেখে অনেকেই তার দিকে কৌতুহল দৃষ্টি নিয়ে তাকাচ্ছে। তাতে কি? সে তার আপন মহিমায় সমুজ্জল। সে কারো দিকেই ভালো করে তাকাচ্ছে না। নির্ভার দৃষ্টি নিয়ে সে হেঁটেই চলেছে। রাজ পথের পীচগুলো গলে স্যান্ডেলের সাথে লেগে যাচ্ছে। উত্তাপে পায়ের তালু হতে ব্রক্ষ্মতালু পর্যন্ত ধরে যায়। অধিকক্ষণ হাঁটলে হয়তো অনেকেরই হীটস্ট্রোক হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই ডাক্তারই অধিক পরিমাণে পানি পান করার কথা বলেছেন। পারলে লেবুর শরবত। তাতে শরীর তরতাজা থাকবে। কিন্ত্তু মনা পাগলা ডাক্তারের পরামর্শ থোড়াই কেয়ার করে। সে চলছে তার মতো করে।

তার হাটার ধরণ বলছে সে কোন একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে হাটছে। যেন তাকে এক্ষুণি যেতে হবে কোন মিটিংয়ে। কিন্ত্তু সে তো কোন অফিস করে না। তার কোন অফিস নেই। তাহলে এত তাড়া কিসের? সে হেঁটে হেঁটে নিকুন্ঞ্জের কাছে চলে এল। সেখানে দেখতে পেল-একটি পুলিশের ঘর রয়েছে। মুলতঃ সেটা হলো কমিউনিটি পুলিশ বক্স। সেখানে গার্ডরা বসে থাকে। ডিউটি দেয়। ডিউটি দেয়া কোন একজন পুলিশকে বলছেঃ

-ভাই, আপনেরে একটা কথা জিগাই?

-বলেন। ভদ্রভাবে ডিউটি অফিসারটি বললো।

-ভাই এই যে আপনেরা ডিউটি দেন তাতো আপনাদের সময় ভাগ করা থাকে। তাই না?

-জ্বি। সবার নাম এখানে লেখা আছে। কে কোন্ কোন্ সময় ডিউটি দেবে? সে অনুযায়ী তাদের ডিউটি দেয়া লাগে।

-আইচ্ছা ভাই, আল্লাহর ফেরেস্তাদেরওতো ডিউটি ভাগ কইর‌্যা দেওয়া আছে। তাই না?

- ঠিক বুঝলাম না আপনার কথা। আবার বলেন।

-মানে আল্লাহর অগণিত ফেরেস্তাদের মইধ্যে চাইরজন প্রধান ফেরেস্তা আছে। সেই ফেরেস্তাগো তো ডিউটি আল্লাহয় ভাগ কইর‌্যা দিছে। যেমন ধরেনঃ হযরত জিব্রাইল (আঃ)। ইনি আল্লাহ পাকের বাণী নবী-রসুলদের কাছে পৌঁছান। তারপর হযরত ইসরাফিল (আঃ)। ইনি শিংগা হাতে নিয়া বইস্যা আছেন। আল্লাহ পাকের হুকুমের অপেক্ষায়। আল্লাহ পাক হুকুম দিলে তিনি শিংগায় ফুঁ দিবেন। তাতে সমস্ত পৃথিবী ধ্বংস হইয়্যা যাইব। এরপর ধরেন হযরত আজরাইল (অাঃ)। তিনি আল্লাহর হুকুমে জীবের জান কবয করেন। তারপর হযরত মিকাইল (আঃ)। ইনি আল্লাহর হুকুমে বারি বর্ষণ করেন।

-এই সব তো আমরা ইসলাম ধর্ম শিক্ষা বইয়ে পড়েছি সেই স্কুল লা্ইফে।

-জ্বি। আমি সেইটারই কতা কইতাছি। অামিও পড়ছি স্কুলে। তো এখন দেখেন। এই চাইর জন ফেরেস্তাদের মইধ্যে সবচেয়ে ব্যস্ত ফেরেস্তা হচ্ছেন হযরত আজরাইল (আঃ)। তারপর হযরত মিকাইল (আঃ)। ঝড়-বৃষ্টি প্লাবন দিতে দিতে ক্লান্ত হইয়া আছেন। আর হযরত ইসরাফিল (আঃ) তো শিংগা হাতে লইয়্যা হাত ব্যাথা কইর‌্যা ফালাইতাছে। এই তিন ফেরেস্তাদের চেয়ে হযরত জিব্রাইল (আঃ) সবচেয়ে বেশি আরামে আছেন। তার কোন ডিউটি এখন আর নাই। 

-অই মিয়া এই সব কি আবোল তাবোল বলছেন? ধর্ম সর্ম্পকে আপনে কি জানেন? পুলিশের সাথে ফাইজল্যামি? বেশি চুদুর বুদুর করবি তো এমন প্যাদানি দিমু যে হোগার ছাল দিয়া ডুগডুগি বাজাইতে পারবি।

-ভাই আপনে এত রাইগ্যা জাইতাছেন কেন? আপনেই দেহেন হেই শ্যাষ নবী হযরত মুহাম্মদের পর আর কোন নবী-রসুল আর এই জগতে আসবে না। যদি না আহে তাইলে হযরত জিব্রাইল (আঃ) তো বেকার বইস্যা আছে। তাই না?

-হালারপো গেলি...ধর্ম লইয়্যা ফাইলামি....পুটকির মইদ্যে দিয়া এই লাডিডা ঢুকাইয়্যা দিলে দেখবি...তোর ফকিরি গেছে গ্যা....

মনা পাগলা ক্ষেপে দিয়ে বললোঃ

-দেন ভাই..লাডিডা হোগার মইদ্যে ঢুকাইয়্যা দেন। লইয়্যা যাই...

পুলিশটি ক্ষেপে গিয়ে মনা পাগলার পাছার মধ্যে কয়েক ঘা বসিয়ে দিল। ঠিক তক্ষুণি মনা পাগলা খেয়াল করলোঃ পুলিশটির নাম বশির। মনা পাগলা পাছায় হাত বুলাতে বুলাতে বলতে লাগলোঃ

-বশির মানে হইলো সুসংবাদ দাতা। আর সেই বশির আমারে কি সুসংবাদটাই না দিল...হেই সুসংবাদে পাছার মইদ্যে দাগ পইর‌্যা গেছে..কাউরে দেহনের উপায় নাই...

বশিরকে তেড়ে আসতে দেখে মনা পাছা ডলতে ডলতে ভোঁ দৌড় দিল।

(চলবে)