পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬

মনা পাগলার আত্মচিৎকার এবং বাস্তবতা-পর্ব চার

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)

-আপনের কতা আমি কিছুই বুঝবার পারতাছি না। কি কইতাছেন? একবার কইতাছেন এই উনিশ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আবার কইতাছেন সুরা আলাকের কতা? কেমুন জানি প্যাচ খাইয়্যা যাইতাছে গা...

-আরে ব্যাডা, যখন সুরা আলাক নাযিল অয় তখন প্রথম পাঁচটা আয়াতই নাযিল অয়। হেই সুময় আর কোন আয়াত নাযিল অয় নাই।

- না অইলে এই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কখন নাযিল অইলো? এইডা কি কুরঅানের অায়াত না?

হারুনের কথা শুনে মনা কেমন যেন ভ্যাবা চেগা খেয়ে যায়? আসলেই তো এই যে আমরা কোরআন পাঠের সময় তাউজ তথা আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইয়াতের রাজিম বলি এবং এরপর বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলি...এটা কখন কোন্ সময় নাযিল হলো? কারণ, আল্লাহ পাক বলেছেন, এই সেই কোরআন যার মধ্যে কোন সন্দেহ নাই যারা মুত্তাকি তাদের জন্য। অর্থাৎ যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদের জন্য এই কোরআনের মধ্যে কোন প্রকার সন্দেহের অবকাশ তৈরী করা হয় নাই তথা রাখা হয় নাই। তাছাড়া যখন সুরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত নাযিল হয় তখন সেই আয়াতের উপর অনেকগুলো ঘটনা প্রযোজ্য হয়। অর্থাৎ বেশ কিছু প্রশ্নের উদ্রেক করে। যেমন কথিত আছেঃ যখন মহানবী হেরাগুহায় ধ্যান মগ্ন অবস্থায় ছিলেন তখন তিনি একটি আওয়াজ শুনতে পান, কে যেন তাকে তার নাম ধরে ডাকছে? তিনি সেই আওয়াজ শুনে ভয় পেয়ে যান এবং তিনি হযরত খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) - এর কাছে এ ঘটনা ব্যক্ত করেন এবং বলেন আমাকে আবৃত কর। হযরত খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) - এর চাচাতো ভাই খ্রীষ্টান পাদ্রী ওরাকা ইবনে নওফেল এর কাছে এই ঘটনা ব্যক্ত করলে তিনি তাঁকে বলেনঃ যখন আপনার নাম ধরে ডাকা হবে তখন আপনি বলবেনঃ লাব্বাইক...তারপর শুনেন সে কি বলে? নওফেল এর কথা শুনে মুহাম্মদ যখন হেরা পর্বতের গুহায় আবারো ধ্যানের স্থানে যান তখন তিনি শুনতে পান, তাকে তার নাম ধরে ডাকছে , ইয়া মুহাম্মদ, ইয়া মুহাম্মদ...সেই আহব্বান শুনে তিনি তখন লাব্বাইক বলে সাড়া দিলেন। তখন দেখলেন-এক সুন্দর যুবক এসে তাকে বলছেনঃ পড় তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন জমাট বাঁধা রক্তবিন্দু হতে।

মুহাম্মদ (সাঃ) যখন এই ঘটনাটা নওফেল এর কাছে বর্ণনা করেন এবং আয়াতগুলো শুনান, তখন তিনি বলে উঠেন কুদ্দুসুন কুদ্দুসুন। অর্থাৎ পবিত্র আত্মা পবিত্র আত্মা। যাকে আমরা ফেরেস্তা জিব্রাইল বলে জানি। এই ঘটনাটা স্যার সৈয়দ আমির আলী কর্তৃক রচিত দ্যা স্পিরিট অফ ইসলাম নামক গ্রন্থে বর্ণিত আছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোখাখাররুল ইসলাম কর্তৃক রচিত ইসলামের ইতিহাসগত বিভ্রান্তির রহস্য নামক গ্রন্থে বর্ণিত আছে।এই ঘটনাটি অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে দেখা যায়-মুহাম্মদকে প্রথমেই ছোট করা হয়েছে বকলম বলে। অর্থাৎ তিনি লেখা পড়া কিছুই জানতেন না। যিনি লেখা পড়া জানেন না, তিনি কিভাবে বৈদেশিক বাণিজ্য পরিচালনা করেছেন? কিভাবে তিনি হিলফুল ফুযুল  নামক ঐতিহাসিক ঘটনার সুত্রপাত করালেন? মুসলমানরা বলবেন-আল্লাহর কুদরতে....আরে গাধার দল...সবকিছুই যদি আল্লাহর কুদরতেই হয়, তাহলে সবকিছুই কুদরতেই হোক...এই কুদরত নামক বিষয়টি জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটা বিরাট প্রশ্নবোধক চিন্হ এঁকে দিয়েছে। তারা ধরতেই পারছে না যে এ ঘটনা দ্বারা মুহাম্মদ (সাঃ) কতো ছোট করা হয়েছে? তাকে যেতে হয়েছে খ্রীষ্টান পাদ্রীর নিকট। তার কাছে কে আসলো, সেটা সে জানলো না। জানলো-খ্রীষ্টান পাদ্রী। যে খ্রীষ্টান পাদ্রী হেরা গুহা নামক কোন সালাতের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন কি-না, তাও মুসলমানরা জানলো না। অথচ সেই ঘটনা পড়ে মুমসলমানরা বলে উঠছেঃ সুবহানাল্লাহ...উল্লেখ্য যে এই পবিত্র আত্মা তথা কুদ্দুসুন এসেছিল। সেই ঘটনাটা বর্ণনা করার সময় কিন্ত্তু হযরত মরিয়ম (আঃ)-কে কিন্ত্তু কোন খ্রীষ্টান পাদ্রীর নিকট যেতে হয়নি। কেননা হযরত মরিয়ম (অাঃ) হচ্ছেন খ্রীষ্টানদের মা মেরী। এবং তার পুত্র হযরত ঈসা (আঃ) হচ্ছেন তাদের মান্যবর নবী। কিন্ত্তু মুসলমানদের নবীকে যেতে হয়েছে খ্রীস্টানদের নিকট। কি আজব তাদের কারসাজি যারা এই ঘটনাটা সাজিয়েছেন? কারা করেছেন? সেটা আবার অন্য ইতিহাস...মনা কোন কুল কিনারা করতে পারছে না...এতক্ষণ সে বিজ্ঞের মতো কথা বলছিল। কিন্ত্তু হারুণের প্রশ্ন শুনে সে সত্যিই মহা চিন্তায় পড়ে গেল।

(চলবে)