পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ২২ জুন, ২০১৬

মনা পাগলার আত্মচিৎকার এবং বাস্তবতা-পর্ব সাত

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)

মানুষের বাক শক্তি অইতাছে কালাম তথা বাইক্য। এই বাক শক্তির গুণেই শব্দময় জগতের সৃষ্টি অইছে। কলুল্লাহার বাণী হুননের লাইগ্যা কান পাতন লাগে। তাইলেই হুনতে পারবি তার কতা বার্তা। হেয় অইলো বোবাজাতের মতো। নীরব ভাষায় হেয় কতা কয়। হের কতা হুননের লিগ্যাইতো মানুষজন ঘর বাড়ী ছাইড়্যা জংগলের মইধ্যে আশ্রয় লইছে। নীরব সাধন করছে। তার পর হের লগে কতা-বার্তা কইছে। নবী পাক হেরা গুহায় ধ্যান না করলে কি হের কতা হুনতে পারতো? নবী পাক আল্লাহ পাকের সাথে কতা কইছে। হের লগে দেহা সাক্ষাত করছে। মুছা নবীওতো মাঝে মাঝে তুর পাহাড়ে যাইয়্যা আল্লাহ পাকের লগে কতা বার্তা কইছে।

-মুছা নবীর কতা বার্তার কতাতো মোল্লাগো মুকে হুনছি। কিন্ত্তু একটা বিষয় মাতার মইধ্যে ঢুকতাছে না। হেইডা অইলোঃ মুছা নবী যহন আল্লাহর লগে দেহা করতে গেল, তহন তো ফেরেস্তা জিব্রাইল (আঃ) এর কতা হুনি না। ফেরেস্তা জিব্রাইল কি খালি মহানবী (সাঃ) এর লগেই সাক্ষাত দিয়া কইলোঃ ইকরা বিসমি রাব্বিকাললাজি খালাক। আর অন্যান্য নবীগো লগে দেহা সাক্ষাৎ করে নাই?

-এইডা তো জানি না। মনা বললো।

-বাই তাইলে তাওরাত যে আল্লাহর বাণী মানে আল্লাহর কতা। বাণী মানেতো কতা। তাই না? তো হেই তাওরাত কার মাধ্যমে নাজিল অইলো? কে আনলো এই বাণী? কোরআনের বাণীতো আনছে হযরত জিব্রাইল (আঃ)। তাইলে তাওরাতও কি হযরত জিব্রাইল (আঃ) আনছে?

-কি কমুরে হারুইন্যা, তুইতো দেহি জ্ঞানীগো মতো কতা বার্তা শুরু কইর‌্যা দিচ্ছস। তর লগেতো বেশিক্ষণ বহন যাইবো না...তুইতো দেহি প্যাঁচে ফালাইয়্যা দিবি...তারপর উল্টা পাল্টা বইল্যা আমারে মানুষের আতে মাইর খাওয়াইবি...

-না বাই। হেইডা পারুম না। এই অঞ্চলে বেবাকতে আপনেরে চিনে। তাছাড়া মনের মইধ্যে প্রশ্নডা গুর গুর করছিল। হেরলিগ্যা কইয়্যা হালাইছি। বাই...ভুল অইলে মাফ কইর‌্যা দিয়েন।

-বেডা হোন। হগলতে সব কতা জানে না। দেহা গেছে কেউ জানে বেশি কেউ জানে কম। আবার যে যেইডা জানে অন্যজন হেইডা জানে না। এর লিগ্যাই কইছে জ্ঞানীরা সর্বদাই একসাথে থাকতে পছন্দ করে। তারা কারো লগে বিবাদ করে না। তারা পরস্পর ভাই ভাই। 

-হের লাইগ্যাইতো আপনে আমার বাই। আপনেরে আমি বেশি পছন্দ করি। আপনেরে পাইলে কাম-কাইজ হালাইয়্যা থুইয়্যা আপনের কাছে ছুইট্র্যা আহি।

-হেইড্যা আমি জানি। তয় তোর মইধ্যে জাননের আগ্রহডা বেশি দেইক্ক্যাই তোরে জানাই। নাইলে দেহস না অন্যডির লগে বেশি প্যাঁচাল পারি না। 

-জানিতো বাই। আপনে আমারে পছন্দ করেন। আমার আমারে দেকতে সইর‌্যা যাইতে চান।

-এই যে তুই একটা ফালতু কতা কইলি। তোরে দেকলে পলাই যের লিগ্যা হেইডা অইলো তুই কামের কতা থুইয়্যা আকামের কতা বেশি কস। আর প্যাঁচাস বেশি। কইতাছিলাম কি আর তুই হেই কতা থুইয়্যা একটা প্যাঁচ লাগাইয়্যা দিলি...

-বাই মনের মইদ্যে যে গাই মারে কি করমু কন? কতার মইদ্যে আইলে কি বাদ দেওন যায়?

-না বাদ দেওন যায় না। তয় আগে গুরুত্বপুর্ণ কতাগুলি হুইন্যা লওন উচিত। নাইলে পরে ভুইল্যা যাইতে পারি..

-আইচ্ছা বাদ দেন। আমরা আমাগো কতায় ফিইর‌্যা যাই।

মনা আবার শুরু করলো তার পুর্বের কথা। কিন্ত্তু সে কতা বলে আগের মতো আর ভাব পাচ্ছে না। কারণটা কি? কারণটা আর কিছুই নয়। কারণটা হলোঃ হারুন তাকে যে প্রশ্নগুলো করেছিল সেগুলো মনার মাথার মধ্যে ঘুর ঘুর করছে। সে না পারছে আগের কথায় ফিরে যেতে না পারছে তার কথা চালিয়ে নিতে। কিন্ত্তু মনার মন না বসলেও সে আবার বলা শুরু করলোঃ
(চলবে)