মনার মন ভালো নেই। আজকে সে যে দৃশ্যটি দেখেছে সেটিকে সে কোন মতেই মানতে পারছে না। বার বার সে একই কথার পুনরাবৃত্তি করছেঃ
-মানুষের অইলোটা কি? আরে, এ্যাগো আল্লাহয় কেমতে আশরাফুল মাখলুকাত কইর্যা দুন্নিইয়্যায় পাডাইলো? কেমতে এগো আশরাফুল মাখলুকাত কওন যায়? আরে এ্যাগো থিক্ক্যাতো রাস্তার কুত্তাও ভালো...
মনাকে বির বির করতে দেখে হারুন ব্যাপারী জিগ্যেস করলোঃ
-কি অইছে? কি কইত্যাছো এ ডি...
-ঐ দ্যাখ। একটা ডাষ্টবিনের দিকে ইশারা করে দেখায় মনা। তারপর বলে
......দ্যাখছোস মানুষের একটা বাচ্চা ডাষ্টবিনের মইধ্যে পইড়্যা আছে...মইর্যা গেছে...মনে হয়... মানুষের একটা বাচ্চা.... হেইডা পইর্যা আছে ডাষ্টবিনের মইধ্যে......মনে অইলো রাস্তার মইধ্যে যেমুন কুত্তা বিলাই বাচ্চা জন্ম দেয়... হেই রকম...কি কমুরে বাই...মা-বাবার মইধ্যে কোন দয়া মায়া আল্লায় রাখে নাই...এইডা কেমুন বাবা-মা?
......দ্যাখছোস মানুষের একটা বাচ্চা ডাষ্টবিনের মইধ্যে পইড়্যা আছে...মইর্যা গেছে...মনে হয়... মানুষের একটা বাচ্চা.... হেইডা পইর্যা আছে ডাষ্টবিনের মইধ্যে......মনে অইলো রাস্তার মইধ্যে যেমুন কুত্তা বিলাই বাচ্চা জন্ম দেয়... হেই রকম...কি কমুরে বাই...মা-বাবার মইধ্যে কোন দয়া মায়া আল্লায় রাখে নাই...এইডা কেমুন বাবা-মা?
মনার মুখে এ কথা শুনে হারুন ব্যাপারী বুঝতে পারলো ব্যাপারটা কি? হারুন ব্যাপারী অনুমান করতে পারছে হযতো কোন কপোত-কপোতীর যুগলবন্দীর অবৈধ ফসল। যার মাসুল দিতে হলো ঐ মাসুম বাচ্চাটাকে। হারুন দেখলো - সেখানে একটা ছোট খাটো জটলার সৃষ্টি হয়েছে। লোক জন নানান কথা বলাবলি করছে...হারুন কৌতুহলী হয়ে সে জায়গায় গেল এবং উঁকি দিয়ে দেখলো - কাঁথা দিয়ে মোড়ানো একটা সদ্যপ্রসুত বাচ্চাকে কে বা কারা যেন ডাষ্টবিনে ফেলে রেখেছে। বাচ্চাটিকে মনে হয় রাতের আঁধারের কোন এক সময় ফেলে রেখে গেছে। বাচ্চাটির কান্নার শব্দ শুনে ময়লা কুড়াতে আসা ছোট ছোট বাচ্চারা চিৎকার চেঁচামেঁচি করে উঠে। সেই চিৎকার শুনেই আশে পাশের লোকজন ছুটে আসে এবং তারা দেখে পুলিশে খবর দেয়। আর মনা হয়তো সেই সময় ঐ ঘটনাটা দেখেছে। হারুন আর মনা দুজনেই পাশে দাঁড়িয়ে আবারো সেই বাচ্চাটিকে দেখছে...বাচ্চাটির গায়ের রং ফর্সা...স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো নয়। রোগা-পাতলা...ঠোঁট দুটো শুকিয়ে গেছে... মনে হয়..পানি বা দুধ কোনটাই দেয়া হয়নি...বাচ্চাটাকে কেউ ধরতে সাহস পাচ্ছে না....সবাই পুলিশের জন্য অপেক্ষা করছে...কিছু মহিলারা মুখে কাপড় টেনে ঘোমটা পড়ে দেখতে এসেছে...তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ বলছে..আহারে...বাচ্চাটা কতো সুন্দর..কার বাচ্চা...কেডা এমুন কাম করলো....অর মা-বাপ...কে জানে...মানুষ আর মানুষ নাই...বেবাকতে পশু অইয়্যা গেছে গা....
বাচ্চার কান্না শুনে কেউ ধরতে সাহস না পেলেও তছি পাগলী আর সহ্য করতে পারলো না। সে ছুটে এসে বাচ্চাটাকে টেনে কোলে তুলে নিল। তার পর কাউকে কিছু বুঝে উঠতে না দিয়েই নিজের বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করলো। তছি নিজের বুকে তুলে কাপড় দিয়ে ঢেকে নিজের স্তনের একটা বোঁটা বাচ্চাটার মুখের মধ্যে গুঁজে দিল। বাচ্চাটা সেই বোঁটাটা মুখে পুড়ে টানার চেষ্টা করছে দেখে তছি খুশিতে আটখানা হয়ে চেঁচিয়ে উঠলোঃ
-বাঁইচ্যা আছে...দুত খাইতাছে...
আশে পাশের মুরব্বী স্থানীয়রা লজ্জা পেলেও তছির এই মমত্ববোধ দেখে খুশি হলো। আর মহিলারা তাদের ঘোমটাটা আরো দীর্ঘায়িত করলো। ছোট ছোট বাচ্চারা তছিকে ঘিরে রেখেছে...ব্যাপারটা লক্ষ্য করে মনা হাসলো। ঠিক সেই সময় একটা পুলিশের গাড়ি আসলো। সাংবাদিকরা বাচ্চাটার ছবি তুলল। রিপোর্ট লেখার জন্য সাংবাদিকরা যখন তাদের কাগজ কলম বের করছে তখন পুলিশের এস.আই জহির এসে জিগ্যেস করলোঃ
-দেখি বাচ্চাটা....
তছি পাগলী বাচ্চাটাকে কাপড় সরিয়ে দেখালো।
-কার বাচ্চা...
-কেমতে কমু...তছি বললো।
-কার বাচ্চা...সেটা না জেনে ধরছিস ক্যান...
-আরে না ধরলেতো মইর্যা যাইতো গা...
-হুম...তুই কি প্রথম দেখেছিস...
-জ্বে না..অামি খবর পাইয়্যা আছি। অাইয়্যা দেহি বাচ্চাটা এইহানে এই খ্যাতা দিয়া জরাইন্ন্যা আছিল। আমি হেইডা সরাইয়্যা বুকে তুইল্ল্যা নিছি..তারপর দুত দিছি...
-ভালো করেছিস...আচ্ছা থানায় কে ফোন করছিল...
-অামি। জমির সাহেব পাশে থেকে বললেন।
-আচ্ছা...কি হয়েছে..ঘটনাটা খুলে বলুনতো...
-আমরা ফজরের নামাজ শেষ করে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। সেই সময় ঐ বাচ্চাদের চিৎকার চেঁচামেঁচিতে শুনি একটা বাচ্চা ডাষ্টবিনের মধ্যে পড়ে আছে। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো মারা গেছে..তাই আপনাদের ইনফর্ম করা...
-হুম।
সাংবাদিকরা পুলিশের জেরার ঘটনা সহ সবকিছুই লিপিবদ্ধ করছিল। সাংবাদিক রহমান সাহেব...রিপোর্ট লেখার ফাঁকে জমির সাহেবকে জিগ্যেস করলেনঃ
-আচ্ছা....বাচ্চাটাকে কখন ফালানো হয় সেটা কি অনুমান করে বলতে পারবেন...
-না ভাই। তা পারবো না। মনে হয় মাঝ রাতের কোন এক সময় কেউ ফেলে রেখে গেছে...বুঝতেইতো পারছেন..সমাজে লোক লজ্জার ভয়ে হয়তো রাতের আঁধারকেই কাজে লাগিয়েছে...
-এখন এই বাচ্চাটাকে কি করা যায়? জানতে চাইলেন রহমান সাহেব এস,আই জহিরের কাছে...
(চলবে)
বাচ্চার কান্না শুনে কেউ ধরতে সাহস না পেলেও তছি পাগলী আর সহ্য করতে পারলো না। সে ছুটে এসে বাচ্চাটাকে টেনে কোলে তুলে নিল। তার পর কাউকে কিছু বুঝে উঠতে না দিয়েই নিজের বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করলো। তছি নিজের বুকে তুলে কাপড় দিয়ে ঢেকে নিজের স্তনের একটা বোঁটা বাচ্চাটার মুখের মধ্যে গুঁজে দিল। বাচ্চাটা সেই বোঁটাটা মুখে পুড়ে টানার চেষ্টা করছে দেখে তছি খুশিতে আটখানা হয়ে চেঁচিয়ে উঠলোঃ
-বাঁইচ্যা আছে...দুত খাইতাছে...
আশে পাশের মুরব্বী স্থানীয়রা লজ্জা পেলেও তছির এই মমত্ববোধ দেখে খুশি হলো। আর মহিলারা তাদের ঘোমটাটা আরো দীর্ঘায়িত করলো। ছোট ছোট বাচ্চারা তছিকে ঘিরে রেখেছে...ব্যাপারটা লক্ষ্য করে মনা হাসলো। ঠিক সেই সময় একটা পুলিশের গাড়ি আসলো। সাংবাদিকরা বাচ্চাটার ছবি তুলল। রিপোর্ট লেখার জন্য সাংবাদিকরা যখন তাদের কাগজ কলম বের করছে তখন পুলিশের এস.আই জহির এসে জিগ্যেস করলোঃ
-দেখি বাচ্চাটা....
তছি পাগলী বাচ্চাটাকে কাপড় সরিয়ে দেখালো।
-কার বাচ্চা...
-কেমতে কমু...তছি বললো।
-কার বাচ্চা...সেটা না জেনে ধরছিস ক্যান...
-আরে না ধরলেতো মইর্যা যাইতো গা...
-হুম...তুই কি প্রথম দেখেছিস...
-জ্বে না..অামি খবর পাইয়্যা আছি। অাইয়্যা দেহি বাচ্চাটা এইহানে এই খ্যাতা দিয়া জরাইন্ন্যা আছিল। আমি হেইডা সরাইয়্যা বুকে তুইল্ল্যা নিছি..তারপর দুত দিছি...
-ভালো করেছিস...আচ্ছা থানায় কে ফোন করছিল...
-অামি। জমির সাহেব পাশে থেকে বললেন।
-আচ্ছা...কি হয়েছে..ঘটনাটা খুলে বলুনতো...
-আমরা ফজরের নামাজ শেষ করে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। সেই সময় ঐ বাচ্চাদের চিৎকার চেঁচামেঁচিতে শুনি একটা বাচ্চা ডাষ্টবিনের মধ্যে পড়ে আছে। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো মারা গেছে..তাই আপনাদের ইনফর্ম করা...
-হুম।
সাংবাদিকরা পুলিশের জেরার ঘটনা সহ সবকিছুই লিপিবদ্ধ করছিল। সাংবাদিক রহমান সাহেব...রিপোর্ট লেখার ফাঁকে জমির সাহেবকে জিগ্যেস করলেনঃ
-আচ্ছা....বাচ্চাটাকে কখন ফালানো হয় সেটা কি অনুমান করে বলতে পারবেন...
-না ভাই। তা পারবো না। মনে হয় মাঝ রাতের কোন এক সময় কেউ ফেলে রেখে গেছে...বুঝতেইতো পারছেন..সমাজে লোক লজ্জার ভয়ে হয়তো রাতের আঁধারকেই কাজে লাগিয়েছে...
-এখন এই বাচ্চাটাকে কি করা যায়? জানতে চাইলেন রহমান সাহেব এস,আই জহিরের কাছে...
(চলবে)