পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭

সৃষ্টিরহস্যের আলোচনা

মে নেনে কে হামু বুত
মি গুফত আনাল হক
দার সুরাতে মনসুর
মনসুর না বুদা
কে বারাদার বারামাত
“জালালউদ্দিন রুমি


অক্সিজেন যদি থিসিস হয় এবং হাইড্রোজেন হয় এন্টিথিসিস এবং উভয়টার সংমিশ্রণে তথা সিনথেসিস যদি পানি হয় তবে কি বলতে পারি না যে, ফেরেস্তা থিসিস এবং শয়তান এন্টিথিসিস এবং উভয়ের সংমিশ্রনে তথা সিনথেসিসে আমরা পাই মানুষ। মানুষের গুণগত বৈশিষ্টকে যদি ভাগ করি তবে ফেরেস্তা তথা সম্পুর্ণ পবিত্র এবং শয়তান তথা সম্পুর্ণ অপবিত্র উভয়টারই সংমিশ্রন পাই । একই মানুষের আকারের মধ্যে আল্লাহর ওলিকেও পাই আবার একই মানুষের আকারের মধ্যে শয়তানকেও পাই । এই দ্বান্দিক বিশ্লেষণের ব্যাপ্তিটাই হলো সমস্ত পৃথিবীতে বাস করা মানুষগুলো, যেন একটা না থাকলে অন্যটার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে না। আল্লাহ মানুষের পূর্বে ফেরেস্তাদের তৈরি করলেন। চরিত্রের বিশ্লেষণে ফেরেস্তা হলো সম্পূর্ণ ভাল (অ্যাবসোলিউট গুড) । এই সম্পুর্ণ ভালো ফেরেস্তাদের অপবিত্র কাজ করার কোন অধিকারই দেওয়া হলো না। কিন্তু এই সম্পুর্ন ভালোটাই তথা ফেরেস্তাদের আল্লাহর কাছে সম্পূর্ণ ভালো লাগলো না। তিনি বানালেন শয়তান । শয়তান হলো সম্পূর্ণ অপবিত্র (অ্যাবসোলিউট ব্যাড)। এই সম্পূর্ণ অপবিত্র তথা শয়তানকেও আল্লাহর কাছে সম্পূর্ণ খারাপ লাগলো। তাই তিনি সম্পূর্ণ ভালো ফেরেস্তা আর সম্পূর্ণ খারাপ শয়তানের সংমিশ্রণে বানালেন মানুষ । এই ফেরেস্তা এবং শয়তানের মিশ্রিত রুপ মানুষই আল্লার কাছে সবচাইতে প্রিয় । তাই মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব তথা আশরাফুল মাখলুকাত (ক্রাউন অব দ্য ক্রিয়েশন) বলে ঘোষণা করলেন। নিদিষ্ট সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি (লিমিটেড ফ্রি উইল অ্যান্ড চয়েজ) দেওয়া হলো। এই ইচ্ছাশক্তি তথা আমিত্ব বর্জন করে আল্লাহতে ফানা হয়ে যাবার ফর্মুলা দিলেন। আমিত্ব বর্জন করলেই আল্লাহর জাতের সঙ্গে মিশে যাবার সর্বোচ্চ পুরষ্কার পাবার কথা ঘোষণা করলেন।
[ সুত্রঃ সুফীবাদ-ডাঃ জাহান্গীর আল সুরেশ্বরী ]