পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ৭ জুলাই, ২০১৭

মিশন ইমপসিবল-ইবলিশের সাথে আদমের দ্বন্দ্ব সংঘাত - পঞ্চম পর্ব

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)

সুরা বাকারার ৩১নং আয়াতঃ
----------------------------
ওয়া (এবং) আললামা (শিক্ষা দেওয়া) আদামা (আদমকে) আসমাঅা (নামগুলি, নামসমুহ) কুললাহা (ইহার সব কিছু)
অর্থঃ এবং আদমকে নামসমুহ শিক্ষা দিলেন, ইহার সব কিছু। 
সুমমা (তারপর) আরাদাহুম (তাহাদেরকে উত্খাপন/ উপস্থাপন/প্রস্তাবন/আনয়ন/পেশ/উপস্থিত করিলেন) আলা (উপরে) মালাইকাতি (ফেরেস্তাদের)। 
অর্থঃ তারপর ফেরেস্তাদের উপর উপস্থাপন করিলেন। ফাকাআলা (সুতরাং বলিলেন) আমবিউন (অামাকে জানা্ও) বিআসমাই (নামসমুহের সহিত) হাউলায়ে (এইসবের)।
অর্থঃ সুতরাং বলিলেন, আমাকে জানাও এইসবের নামসমুহ 
ইন (যদি) কুনতুম (তোমরা হও) সাদিকিন (সত্যবাদী)।
অর্থঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও।

[ And He taught Adam all the names (of everything). then He showed to the angels and said "Tell Me the names of these if you are truthful" verse of Quran. Surah 2. Al- Baqarah. Ayat No-31. ]

সুরা বাকারার ৩২ নং অায়াত
 ---------------------------
কালু (তাহারা [ফেরেস্তারা] বলিল) সুবহানাকা (তুমি ভাসমান, পবিত্র) লা (না) ইলমা (জ্ঞান) লানা (অামাদের) ইললা (ব্যতীত, একমাত্র, ছাড়া) মা (যাহা) অাললামতানা (অামাদেরকে শিক্ষাইয়াছ) ইননাকা (নিশ্চ য়ই তুমি) আনতা (তুমি) আলিমুল (জ্ঞানী) হাকিম (বিজ্ঞানী)। 
অর্থঃ তাহারা (ফেরেস্তারা) বলিল, তুমি ভাসমান (পবিত্র), আমাদের জ্ঞান নাই একমাত্র যাহা তুমি আমাদেরকে শিক্ষাইয়াছ,
নিশ্চ য়ই তুমি, তুমিই জ্ঞানী, বিজ্ঞানী।

[ They (angels) said: "Glory be to You. we have no knowledge except what you have taught us. Verily it is You, the All-knower,the All-wise." verse of Quran. Surah 2. Al- Baqarah. Ayat No-32.]

করিম সাহেব উপরোক্ত ৩১ এবং ৩২নং আয়াত দুটি ভালোভাবে বুঝার চেষ্টা করলেন। তিনি দেখতে পেলেন, ফেরেস্তাদের সাথে অাল্লাহ্ পাকের কথোপকথনে ফেরেস্তারা আল্লাহ পাকের কাছে প্রশ্ন করেন এবং আল্লাহ পাক সে সব প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন। এবং পরীক্ষা করার ছলে তিনি আদমকে কিছু জিনিসের নাম শিখিয়ে দিলেন। তারপর তিনি ফেরেস্তাদের কাছে জানতে চান, বিষয় সমুহের নাম। কিন্ত্তু ফেরেস্তারা সে সবের নাম বলতে পারলো না। ফেরেস্তারা বললোঃ আপনি আমাদের যতটুকু জ্ঞান দিয়েছেন, আমরা ততটুকুই জানি। এর বেশি আমরা জানি না। অাদমকে জিগ্যাসা করায় অাদম সমস্ত কিছুর নাম বলে দিল। 

এথানে একটা বিষয় লক্ষ্যণীয়। সেটা হলোঃ আদমের শিক্ষক হলেন আল্লাহ্ পাক। যেহেতু তিনিই আদমকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। আরো একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার - সেটা হলোঃ ফেরেস্তাদেরও শিক্ষক হচ্ছেন আল্লাহপাক। কারণ, তাদের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধী হলোঃ মা আললামতানা ইন্নাকা আনতা অালিমুল হাকিম। এই দু'টোর মধ্যে  তুলনামুলক বিচারে আদমই শ্রেষ্ঠ। কারণ,

তফসীরে ইবনে কাসির - এ বর্ণিত আছেঃ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, যখন হযরত আদম (অাঃ) এর সৃষ্টিকার্য আরম্ভ হয় তখন ফেরেস্তাগণ বলেছিলেনঃ " আমাদের অপেক্ষা বেশি মর্যদা সম্পন্ন ও বিদ্বান মাখলুক সৃষ্ট হওয়া অসম্ভব।" এ কারণে তাদের উপর অাল্লাহর পরীক্ষা এসে যায় এবং কোন সৃষ্ট জীবই পরীক্ষা হতে নিস্তার পায়নি। যমীন ও আসমানের উপরেও পরীক্ষা এসেছিল এবং ওরা অবনত মস্তকে ও সন্ত্তুষ্ট চিত্তে অাল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করেছিল।  ফেরেস্তাদের তাসবীহ ও তাকদীসের অর্থ হচ্ছেঃ মহান অাল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করা, নামায পড়া, বেয়াদবী হতে বেঁচে থাকা, তার শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করা এবং তাঁর অবাধ্য না হওয়া। "কুদ্দুসুন" এর অর্থ হচ্ছে পবিত্রতা। রসুলল্লাহ (সাঃ) জিজ্ঞাসিত হচ্ছেনঃ "কোন্ কালামটি সর্বোত্তম?" উত্তরে তিনি বলছেনঃ "ওটা হচ্ছে ঐ কালামটি যা মহান আল্লাহ পাক তাঁর ফেরেস্তাদের জন্য পছন্দ করেছেন। ঐ কালামটি হচ্ছেঃ সুবহান অাল্লাহ ওয়াবি হামদি। (সহীহ মুসলিম) পৃষ্ঠা নং ২২০। 
(চলবে)