এ্যাই খোকা শোন..
অামি তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করলাম কে ডাকছে? কারেন্ট নেই। হাল্কা অন্ধকার।
কোন কোন বাড়ীতে চলছে জেনারেটর। কারো বা আইএসপি। সন্ধ্যা হতেই ইলশে গুঁড়ির
মতো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বাহিরে বের হয়েছিলাম একটা কাজে। কাজটি শেষ
হতেই বাড়ীতে ফিরছি। চারদিকে কেমন যেন একটা অদ্ভুত পরিবেশ। এই পরিবেশে এই
অদ্ভুত নামে কে আমাকে ডাকতে পারে? আমি আবারো চারিদিকে তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা
করলাম কে ডাকছে। কিন্ত্তু কিছুই দেখতে পেলাম না। আমি আবারো হাঁটতে শুরু
করেছি ঠিক সেই সময় আবারো শুনতে পেলাম
-এ্যাই খোকা শোন…এইদিকে আয় ….এ্যাই দিকে বাবা..
অামি আবারো তাকিয়ে দেখতে চেষ্টা করলাম..কই কিছুইতো নজরে পড়ছে না। ভালো
করে তাকাতেই হটাৎ নজরে পড়লো অন্ধকারে একটা কোণে ঘাপটি মেরে বসে আছে একটি
লোক। গায়ে ছিন্ন বস্ত্র। মলিন বেশ ভুষণ। মাথার চুলগুলো উসকো খুসকো। একটা
বাড়ীর প্রবেশদ্বারের সামনে ঠ্যায় হেলান দিয়ে বসে আছে লোকটা। পুরো শরীর ময়লা
চাদর দিয়ে ঢাকা। কেবল মাথাটা বের করে আছে। তার দিকে আমার দৃষ্টি পড়তেই
তিনি আমাকে ইশারায় ডাকলেন। অামি কাছে গেলাম।
-কি নাম তোর?
-জ্বি আমার নাম সোহান।
-সোহান? এটা কোন নাম হলো? তুই হিন্দু না মুসলমান?
লোকটা অদ্ভুত ভংগিতে বললো। বলার ধরণটা কেমন ছিল ঠিক বোঝাতে পারবো না।
ঠোঁট বাঁকিয়ে কি রকম করে যেন বললো। তাছাড়া আমি কোন ধর্মের সেটা জানার তার
কি কোন প্রয়োজন আছে? প্রথমে ক্ষাণিকটা বিরক্তবোধ করলেও এখন কৌতুহল বোধ
হচ্ছে। দেখতে ইচ্ছে করছে সে কি করে? জানতে ইচ্ছে করছে – কেন সে আমার
সর্ম্পকে জানতে চাচ্ছে? দেখি না কি হয় টাইপের আর কি? আমি বললামঃ
-আমি মুসলমান ।
-তাহলে মোহাম্মদ বলিসনি কেন?
আমি তার এ প্রশ্নে অনেকটা হতভম্ব হয়ে গেলাম। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেনঃ
-তু্ই কি মুহাম্মদের বংশধর নস?
-জ্বি।
-তাহলে তওবা কর। আর আমার সাথে সাথে বল “অসতাগফিরুল্লাহ রাব্বিমিন….”
আমি সম্মোহিত হয়ে যেন তার সাথে সাথেই বললাম – “অসতাগফিরুল্লাহ….
(চলবে)