পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সাঁইয়ের এনাটমি ও মনা পাগলার অদ্ভুত হাসি - পর্ব এক

মনা একটি ছবি দেখছে আর হাসছে। তার হাসি দেখে আশে পাশে পথচলা পথিকেরা বার বার তার দিকে তাকাচ্ছে। কিন্ত্তু সেদিকে তার মোটেও ভ্রুুক্ষেপ নেই। সে হাঁটছে তার নিজের মতো করে। হেলে দুলে। কিন্ত্তু যারা মনাকে চেনে তারাও তার এ আচরণের কারণটা ধরতে পারছে না। তারা দেখলোঃ মনার হাতে একটি ছবি। সে ছবিটি বার বার দেখছে আর খিলখিল করে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। কিন্ত্তু কাউকে সেই ছবিটি দেখাচ্ছে না। রহস্যটা কি?

মনার এমন আচরণে ভবা মনাকে জিগ্যেস করলোঃ

-কি রে মনা, তোর আজইগো কি অইছে? অত হাসতাচ্ছ কেরে?

-আর কইস না। একখান ছবি পাইছি। হেই ছবি দেইক্কা খালি হাসি আহে।

-কিয়ের ছবি? দেহি..

-তোরে দেহান যাইবো না। দেকলে তুই ও হাসবি...

-কস কি...তাইলেতো দেহন লাগে...দেহানা দোস্ত

-দেখবি? দ্যাখ...

ছবিটা দেখে মনা ও ভবা দুই জনেই হাসিতে গড়াগড়ি খা্চ্ছে। একজন আরেকজনের দিকে তাকাচ্ছে আর ইশারা করে হাসছে।

সাধারণ লোকজন এ হাসির রহস্য ধরতে পারছে না। আর কিছু বুঝতেও পারছে না। কিন্ত্তু তারাও মনা-ভবার কীর্তিকলাপ দেখে তাদের সাথে হাসিতে যোগ দিয়েছে। তারাও এখন মনা-ভবাদের সাথে হাসছে। কিন্ত্তু কি এমন ঘটনা ঘটেছে যে তাদের হাসি থামতেই চাইছে না। বিষয়টা ভাবিয়ে তুললো রশিদ সরকারকে। তিনি মনাকে একটি কষে ধমক দিলেন। তারপর মনার হাত থেকে ছিনিয়ে নিলেন ছবিটি। ছবিটি তেমন কিছুই না। বায়োলজির একটি হিউম্যান এ্যামব্রায়োর ছবি। যেটাকে স্পার্ম বলা হয়। অর্থাৎ শুক্রাণুর একটি ব্যবচ্ছেদ করা ছবি। ছবিটিতে হিউম্যান স্পার্ম এর চিত্র দিয়ে এর কয়টি অংশ তা দেখানো হয়েছে। সেই ছবিটি মনা দেখছে আর হাসছে। অন্য দিকে ভবাও সেটা দেখে হাসছে। কিন্ত্তু এতে হাসির কি আছে, তা রশিদ সরকার বুুুুঝতে পারছেন না। তিনি হাসির রহস্যভেদ জানতে মনাকে জিগ্যেস করলেনঃ

-এটা দেখে হাসির কি আছে?

-কন কি সরকার সাব? এইডা দেইক্ক্যা হাসমু না? হুনেন সরকার সাব, আমাগো মতো অনেক পাগল আছে যারা এইডাকে কয় সৃষ্টিকর্তা। এইডা নাকি আমাগো সৃষ্টি করছে। এইডা যুদি আমাগো সৃষ্টিকর্তা অয়, তাহলে হেই সৃষ্টিকর্তারে কে বানাইছে? হেইডারে বানাইছি আমরাই। আমরা যা খাই (রিজিক যথাঃ ভাত, মাছ, মাংশ, ডিম, দুধ ইত্যাদি ) হেইডার মুল যে সৃষ্টিরস হেইডা থিক্কাইয়্যা অয় এই মুলবীজ। যেইডারে কয় দেহবীজ। এই দেহবীজ থিক্ক্যাই মানুষের জন্ম হয়। পশু-পাখির জন্ম অয়। তথা জীবের জন্ম। আপনে যুদি খাওয়ন দাওয়ন বন্ধ কইর‌্যা দেন, তাইলে এই বীজ অইবো না। যুদি অয় তয় হেইডার শক্তি থাকবো না। হেইডা হাতর পাইর‌্যা কেমতে ওর মায়ের রেহেমে যাইবো? কন...

- তাতো সত্য। কিন্ত্তু কোরআনে তো বর্ণিত আছেঃ

১. "ওয়া লাকাদ খালাকনাল ইনসানা মিন সালাসালেম মিন হামায়েম মাসনুন [সুরা হিজর আয়াতঃ ২৬]। আমরা মানুষকে গঠন করিয়াছি কর্দম হইতে, নক্সাকাটা নরোম মাটি হইতে।
২. ওয়া লাকাদ খালাকনাল ইনসানা মিন সুলালাতেম মিন তীন [সুরা মুমেনুন আয়াতঃ১২]। অর্থঃ আমরা গঠন করিয়াছি মানুষকে কাদামাটির বিশুদ্ধ সারভাগ হইতে।
৩. ফাইন্না খালাকনাকুম মিন তুরাবেন [সুরা হজ্জ আয়াতঃ৫] অর্থঃ আমরা তোমাদিগকে গঠন করিয়াছি (বা সৌষ্ঠবদান করিয়াছি) মাটি হইতে।

(চলবে)