পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৬

তৈলাক্ত বাঁশের নতুন অংকঃ সফলতাই উন্নয়নের মুলমন্ত্র

আজিজ মাষ্টার প্রাইমারী স্কুলের পিটি শিক্ষক। সেই আজিজ মাষ্টার আজকে একটা মজার খেলা খেলছে। সে পিটি ক্লাসের ছেলেপুলেদের দিকে তাকিয়ে বলছেনঃ
-আচ্ছা তোরা কি তৈলাক্ত বাঁশের অংকটা করেছিলি....
ছেলেরা সমস্বরে হ্যাঁ বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো। কিন্ত্তু আজিজ মাষ্টরের সন্দেহ হল। সে আবারো বললোঃ
-যারা যারা অংকটা করেছিস, তারা হাত তোল....
দেখা গেল উপস্থিত সংখ্যার আধিক্যটাই বেশি। সেটা দেখে সে বেশ খুশি হলো। সে সমস্ত ছেলেদেরকে দুটি ভাগে ভাগ করলো। তারপর যারা করেছে, তাদের একদিকে আর যারা করেনি, তাদের অন্য দিকে রাখলেন। এরপর তিনি স্কুলের মাঠে একটি আট-দশ ফুট লম্বা বাঁশে ভালো করে তেল মালিশ করলেন। তারপর সেই বাঁশের মাথায় একটা সাইনবোর্ড ঝুঁলিয়ে দিলেন। সেখানে লেখাঃ "বর্তমান সময়ে উন্নয়নের চাবিকাঠি। সাফল্যের মুলমন্ত্র "।
তিনি অন্যান্য ছাত্রদের নিয়ে সেই তেলমাখা বাঁশটি মাঠের মধ্যে পুঁতে রাখলেন। এরপর যে সমস্ত ছেলেরা অংকটা করেছে-তাদের ডাকলেন। তারপর বললেনঃ

-এই বাঁশের মাথায় যে সাইনবোর্ডটি দেখছিস, যে আগে এই সাইনবোর্ডটি এনে আমার কাছে দিবি, তার জন্য রয়েছে বিশেষ পুরস্কার।

-কি পুরস্কার, স্যার? ছেলেরা জানতে চাইলো।

-আরে আগে তো সাইনবোর্ডটি আন। তারপর পুরস্কার। আচ্ছা, সবাই জামা খুলে ফেল্। যখন আমি বাঁশিতে ফুঁ দেব, তোরা শুরু করে দিবি। ঠিক আছে...যা সবাই যা।

ছেলেরা উন্নয়নের চাবিকাঠি ধরার জন্য এবং পুরস্কার পাওয়ার জন্য ইতি মধ্যেই লম্ফ জম্ফ শুরু করে দিয়েছে। অনেককেই দেখা গেল বেশ আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে আজিজ স্যারের দিকে। সেটা দেখে স্যারও মহা খুশি। তিনি আর দেরী করলেন না...রেড়ি ওয়ান...টু...থ্রি বলে বাঁশিতে ফুঁ দিলেন। আর অম্মনিতেই শুরু হলে গেল নাচন কুর্দন। একজন উঠতে চায়তো আরেকজন ঠেলে ধরে...সবারই দৃষ্টি ঐ সাইনবোর্ডটির দিকে। অন্য কোন দিকে তাদের মন নেই....ধ্যান নেই....তাদের লক্ষ্য একটাই উন্নয়নের চাবি। আর সাথে পুরস্কার।

আজিজ স্যার লক্ষ্য করলেনঃ ছেলেরা ইতিমধ্যেই মারামারি শুরু করে দিয়েছে। কেউ তাকিয়ে দেখছে...স্যার কিছু বলেন কি-না? কিন্ত্তু যখন দেখলো স্যার তেমন কিছুই বলছে না...তখন তারাও বুঝলো....এখন স্যার কি বলবে না। কারণ তিনিতো তাদেরকেই বলেছেন যেভাবে পারিস ঐ সাইনবোর্ড লেখা কাগজটি স্যারের হাতে দিতে। কাজেই যারা এ ব্যাপারটা বুঝতে পারলো...স্যারের মৌন সম্মতি আছে, তখনই তারা দ্বিগুণ উৎসাহে মারামারি করছে।
আজিজ স্যার চেয়ারে বসে ছেলেদের মারামারি দেখছেন আর হাসছেন। তার সাথে যোগ দিয়েছে সেই ছেলেপুলেরা যারা অংকটা করেনি। তারাও স্যারের পাশে দাঁড়িয়ে হাসছে...

তারা দেখছেঃ সারভাইভার ফর দ্যা ফিটেস্ট.....ওয়েলিং ব্যামবো...ক্লাইবিং দ্যা চিন্ডেন।