পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

পুজা

#মুর্তিপুজা বনাম #মানুষপুজা
__________________
#মুর্তিপুজা = মুর্তি + পুজা। মুর্ত মান হয়ে উঠেন যিনি। বস্তুমোহ থেকে যিনি নির্লিপ্ত থেকে রবকে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন তথা মুর্তমান করতে পেরেছেন, তিনিই জাগ্রত মুর্তি এবং তার পুজাই মুর্তিপুজা। পুজা বলতে ফুল দ্বারা আর্চনা করা বুঝায়।
#মানুষপুজা = মানুষ + পুজা। মানুষ বলতে মনুষ্যত্ববোধে জাগ্রতচেতনা সম্পন্ন কোন ব্যক্তিবিশেষ কে বোঝায়, যার ভেতর রয়েছে স্র্রষ্টার রহিম এবং রহমান নামক বিশেষ দুটি গুণের প্রকাশ্যমান বৈশিষ্ট্য। এ ধরণের মানুষকে সদা সর্বদাই সমাজের সাধারণ স্তরের জনগণের জন্য কল্যাণপ্রসুত বিভিন্ন কার্য্যসম্পাদন করতে দেখা যায়। তাদের পুজা হয় জনগণের ভজনা দ্বারা। অর্থাৎ তাদের জয়জয়কার হয় মানুষের মুখে মুখে।
সুতরাং উভয়বিদ পুজা বোধবিহীন মানুষ(?) নামক সাধারণ্যের মাথায় ঢোকে না বলেই তারা সর্বদাই এ শ্রেণীর মানুষকে নিন্দাবাক্যে পর্যভুষিত করে আত্মতৃপ্তি লাভ করে থাকে। সমাজে ঐরুপ মহাপুরুষ যতো থাকবে, সমাজ তত মঙ্গলময় এবং কল্যাণপ্রসুত হয়ে উঠে এবং যে সমাজে যত মানুষ(?) নামক সামাজিক জীব থাকবে, সে সমাজ তত উৎশৃংখল এবং অধঃপতনে যাবে।
#স্বপনচিশতী





#খন্ডিত স্বত্ত্বা ও #বিভেদজ্ঞানঃ অনুমাননির্ভরতা ভুল
----------------------------------------------------
একক কোন স্বত্ত্বা যখন তার নিজের স্বত্ত্বাকে খন্ডিত করলেন, তখন সেই খন্ডিত স্বত্ত্বাগুলো কোনটি অত্যাধিক উজ্জ্বল, কোনটি অনধিক উজ্জ্বল আবার কোনটি একেবারেই ম্রিয়মান দেখাতে লাগলো।
তুমি যদি উজ্জ্বল্যপ্রাপ্ত স্বত্ত্বাটিকে স্বীকার কর এবং অনুজ্জ্বল অথবা ম্রিয়মান স্বত্ত্বাটিকে অস্বীকার কর, তাহলে পুর্ণ স্বত্ত্বাটিকেই অস্বীকৃতি জানালে। কেননা ঐ অনুজ্জ্বল স্বত্ত্বাটি বা ম্রিয়মান স্বত্ত্বাটিও ঐ একক স্বত্ত্বাটির একটি খন্ডিত স্বত্ত্বা।
কাজেই তোমার উচিত উভয়কেই মেনে চলা এবং কাউকে অবজ্ঞা না করা। কারণ বিভেদজ্ঞান অজ্ঞানতারই নামান্তর।

#স্বপনচিশতী


#আলোকপোকাঃ
---------------
আলো আঁধারে ঘিরে থাকা বনাঞ্চলে একধরণের পোকা বাস করে যেগুলো আলো দেখলেই ধেয়ে চলে আসে। যতদুরেই রাখা হোক না কেন...আলোর সন্ধান পেলেই তারা ছুটে আসবে এবং কিছু পোকা আগুনে ঝাঁপ দিয়ে পুড়ে মারা যাবে।
তোমার ভেতর যদি সেই আলো থাকে তাহলে তুমি তা লুকিয়ে রাখতে পারবে না। তোমার হৃদয়ালোকের ঐশী তেজে পোকা-মাকড়ের মতো আশেকান ভক্তবৃন্দ তোমারে ঘিরে ধরবে।

#স্বপনচিশতী





বিশ্বাস ও আস্থা
---------------
তুমি যে কোন কিছুতেই বিশ্বাস আনতে পারো আবার নাও আনতে পারো। কিন্ত্তু একবার যদি বিশ্বাস স্থাপন কর, তাহলে সাথে আস্থাটাও অর্জন করিও। কেননা, সহজেই বিশ্বাস স্থাপন করা গেলেও আস্থা সহজেই অর্জন করা যায় না। পরীক্ষিতের যেমন পরীক্ষা দরকার তদ্রুপ বিশ্বাসেরও আস্থা দরকার।।

#স্বপনচিশতী









সুলতানুল হিন্দ গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মঈনউদ্দিন চিশতী (রহঃ) সঞ্জরী বলেছেনঃ-
"আউসাফে আলী বগুফতেগু মুমকিন নিস্ত,
গুনজায়েশে বহর দর সবু মুমকিন নিস্ত "
বংঙ্গানুবাদঃ আলীর (আঃ) মহিমা ভাষার তুলিতে যায় না কখনো আঁকা,
অসীম সাগর কলসির মাঝে যায় কি কখনো রাখা ?
মাওলানা জালালুদ্দিন রুমী (রহঃ) তাঁর 'দিউয়ানে শামস তাবরিজ' গ্রন্থে হযরত আলীর (আঃ) তাৎপর্য নির্দেশ করেছেনঃ-
"এটা কুফরি নয়, আমি কাফির নই।যত দিন হতে এই সৃষ্টি আছে,আলী (আঃ) আছেন, যত দিন সৃষ্টি থাকবে,আলী (আঃ) থাকবেন।
"এক রাতে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) আলীর (আঃ) কাছে কোরআনের তফসির শুনতে আসেন।শুধু সুরা ফাতেহার তফসির করতেই রাত ফজর হয়ে গেল দেখে ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ এক সুরা ফাতিহার তফসির করতেই রাত ফজর হয়ে গেল। বাকি কিতাব তো পড়ে রইল।
মাওলা আলী (আঃ) বললেনঃ কোরআনের মূল সুরা এই ফাতিহা আর সুরা ফাতেহার মূল বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম।বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিমের মূল হচ্ছে বিসমিল্লাহ। বিসমিল্লাহর মূল হছে 'বে' হরফ টি।'বে' হরফের মূল হচ্ছে নুকতাটি আর এই নোকতাটি কে জানো?
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ না।
আলী (আঃ) বললেনঃ"আনা নুখতাতু আতহাল বায়ে " আমিই 'বে' -এর নিচের এই নুকতা।
মহানবী (সাঃ) বলে গেছেনঃ হে আল্লাহ্‌, আলী যেদিকে ঘুরবে হককে সেদিকে ঘুরিয়ে দিও।আরো বলেছেনঃ মোনাফেক ব্যতীত কেউ আলী বিদ্বেষী হতে পারে না।আলীর সাথে বিদ্বেষ রাখে কি-না, তা দেখে কে মোনাফেক, সাহাবা ও আনসারগণ তা নির্ণয় করতেন।[তিরমিজি ]
হযরত জাবের (রাঃ) বলেনঃ তায়েফ গমনের দিন রসুলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আলীকে (আঃ) ডেকে নিয়ে পরামর্শে বসলেন।এক ঘণ্টা বেশী দেরি হওয়ায় সাহাবীগণ আরজ করলেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে এমন কি লম্বা-চওড়া গোপন পরামর্শ করলেন?
রসুলে খোদা (সাঃ) উত্তর দিলেনঃ গোপন পরামর্শ আমি করিনি, স্বয়ং আল্লাহতায়ালাই তাঁর সাথে পরামর্শ করেছেন ।


স্মৃতির ভাব সম্প্রসারণঃমন ও আত্মা
------------------------------------
-তোমার কি মনে আছে সেই দিনটির কথা?
-কোন্ দিনটির কথা,বলোতো?
-ঐযে সেদিন তুমি বলেছিলেঃ
তোমার কেবল তুমি আছো, আছোতো বেশ
আমার কেবল আমি আছি, রাঙ্গিয়েছিতো বেশ।
কিছু তার স্মৃতি, কিছু পাচ্ছি তার রেশ।।

সারসংক্ষেপঃ তোমার আত্মা আর তুমি দুটি কেবল ভিন্ন বিষয়। প্রেম যদি করতেই হয়, তাহলে তোমার নিজের সাথেই করো।ভালো যদি বাসতেই হয়, তো নিজেকেই বাসো। যার সাথে চলছো, ফিরছো, অথচ তার সাথে প্রেম করবে না, ভালোবাসবে না - এটা কেমন কথা?




নিরাকার খোদাঃ মোল্লাবাদ বনাম সুফীবাদ
-------------------------------------------
নিরাকার খোদা অনেকেই বলে থাকেন। তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করলে একটি ধারণা পাওয়া যায়। সেটি হলোঃ নিরাকার=নির+আকার এবং খোদা=খোদ তথা নিজ বা আত্মা। তাহলে নিরাকার খোদা = নির (পানি)+আকার +খোদ তথা আত্মা।
নির বলতে জল বা পানি বোঝায়।
আকার অর্থ যার ওজন আছে, আয়তন আছে এবং যা স্থান বা জায়গা দখল করে অর্থাৎ সামগ্রিক ভাবে বলতে গেলে যা দৃষ্টিগোচরীভুত হয় এবং স্পর্শ করা যায়,তাকেই আকার বলে।
আত্মা বলতে পন্ঞ্চভুতে তথা ক্ষিতি, অপ, তেজ,মরুৎ এবং ব্যোম - এ পন্ঞ্চ উপাদানে সৃষ্ট দেহরুপকে বোঝায়।

এবার আসি ব্যাখ্যা প্রসংগে। পানির কোন আকার নেই। পানিকে যে পাত্রে রাখা হয়, সেই আকার ধারণ করে। তদ্রুপ নিরাকার খোদা যে দেহে অবস্থান করছে, তা বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে বিভিন্ন আকারে দেখছে। পণ্ঞ্চভুতে স্থিত আত্মা বিভিন্ন রংগে প্রকাশ হচ্ছে। যেমনঃ ফর্সা, কালো, শ্যামলা ইত্যাদি। যার ফলে যারা আত্মাকে নিরাকার বলছে মুলতঃ তাদের কাছে এর সঠিকরুপটি ধরা পড়ছে না। বিধায় তারা আকাশের দিকে ইংগিত করে নিরাকার বোঝার চেষ্টা করছে। আর যারা তার স্বরুপকে ধরতে পারছে, তারা তাকে তার প্রেমের সমীকরণে নিয়ে রচনা করছে প্রেমের মহাকাব্য। তারা তাকিয়ে থাকে সেই প্রেমের মানুষটির দিকে, যে তাকে প্রতিনিয়ত ভ্রমন করাচ্ছে দেহ হতে দেহান্তরে।
মোল্লাদের সাখে পার্থক্যটা এখানেই। মোল্লারা যেটা বলে-সেটা তারা বুঝে না।

#স্বপনচিশতী