পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

আমার ভাংগা ঘরে চাঁদের আলো উছলিয়া পড়ে

আমার ঘরটি বেশ ছোট। সেই ছোট্র ঘরটিতে এই শীতের উত্তুরি হাওয়া হু হু করে ঢুকে পড়ে। হাড় কাঁপুনি শীতের আমেজ বেশ উপভোগ্য হয়। ঘরটির পেছনে আছে মুল খালের একটি অংশ। কাঠ দিয়ে ঘাট তৈরী করা হয়েছে। সেই ঘাটে যখন হাঁটি তখন মড় মড় শব্দ করে। মনে হয় এক্ষুণী বুঝি ভেংগে যাবে।কিন্তু ভাংগে না। শব্দ করাটা বাতিক। শব্দ করতেই হবে। নচেৎ কি ভাবে জানান দেবে সে এখনো টিকে আছে? যেমনটা আমাদের ভেতরটা ডিব ডিব করে জানান দেয়। ঠিক সেইরুপ। পার্থক্য হলোঃ একটা প্রকৃতির অংশ অন্যটি প্রকৃতি থেকে সংগৃহীত। যাদের সম্মি লনে তৈরী করা হয়েছে এই ঘাটটি।
সুদীর্ঘ শীতের রাত্রি শেষে যখন প্রকৃতির নিয়মে জগন্নাথ পুর্ব দিকে উঁকি দেয়, তখন একচিলতে রোদ্দুর এসে উঠোনে আছড়ে পড়ে। সোনালী সেই রোদ্দুর জানান দেয়, সে এখনো আমাদের মতো ছা-পোষাদের কীট পতঙ্গের মতো বাঁচিয়ে রেখেছে। জগতের নাথ সুর্যদেবকে তাই সনাতনীরা প্রথানুযায়ী নমস্কার করে থাকে। অন্যদিকে চাঁদনী রাতে যখন চাঁদমামা তার আলো ফেলে তখন এক মায়াবী পরিবেশের সৃষ্টি করে। পুরো উঠোনজুড়ে চলে আলো-আঁধারির খেলা। এমন মায়াবী পরিবেশে মনটা বেশ উথাল পাথাল করে। হারিয়ে যেতে চায় কোন এক অচেনা অজানা দেশে। কিন্তু চাইলেই কি তা পারা যায়? যায় না। দয়াময় যখন দয়া করে ডাকবেন, তখন অবশ্যই সেই ডাকে সারা দিয়ে চলে যেতে হবে। হারাতে হবে বিধাতার এই সাজানো সংসার। কি অদ্ভুত? তাই -না?
হযরত থাজা শাহ্ পীর চিশতী (রহঃ) তাঁর চিশতী উদ্দ্যানে বলেছেনঃ
কেনোরে মন বুঝতেছো না, এ ভবের ভাবনা ভেবে, লাভ কিরে তোর ওরে কানা।
সত্যিইতো। এ ভব খেলাঘরে কিছুদিনের জন্য এসেছি। আবার চলে যাবো। কিন্তু যখন আমার সন্তানদের দিকে তাকাই, তখনই প্রাণটা হু হু করে কেঁদে ওঠে। এই সন্তানদের ছেড়ে একদিন বিদায় নিতে হবে। নিয়তির এমনই বিধান যে, তা অলংঘনীয়। এই নিয়মের কোন ব্যত্যয় নেই।
সত্যিই.. কি রহস্যময় এই জগত সংসার.....