পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৫

সোনার মানুষ- পন্ঞ্চম পর্ব

(পূর্ব প্রকাশের পর)
যেমন ধর ইসলামের নবী (আঃ) এর কথা। তিনি কি করেছেন? তিনি কি সংসার ধর্ম পালন করেন নাই? করেছেন এবং তাঁর সন্তানাদিও ছিল। সে যদি সংসার ধর্ম পালন করে আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে পারে তাহলে কেন অন্য কেহ পারবে না? কিভাবে সংসার করে আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে হয় তাতো স্বয়ং রাসুল পাক(আঃ) নিজেই দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। যাতে করে তার উম্মতগণ সেই পথ অনুসরণ করে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করতে পারে। রাসুল(আঃ) বলেছেনঃ" লা রাহাবানিয়াত ইল্লাল ইসলাম।" ইসলামের মধ্যে কোন সন্ন্যাস নাই। তাঁকে অনুসরণ করা প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর জন্য আবশ্যকীয় কর্তব্য। আর তাঁকে মেনে চলার অর্থ তার সুন্নাতের মধ্যে সামিল থাকা। এরপরই আসে তরিকত। শরীয়ত হতে তরিকতকে এবং তরিকত হতে শরীয়তকে পৃথক জানাই পাপ। মারেফাত সকলের জন্যই প্রযোজ্য। মারেফত ব্যতীত কোন ইবাদতই হতে পারে না। শরীয়ত দেহ আর তরীকত তার রুহ। সুতরাং রুহ ব্যতীত দেহ যদ্রুপ অচল ও অকর্ম্মন্য তদ্রুপ তরিকত ব্যতীত শরীয়তও অচল এবং অপুর্ণ ও প্রাণহীন মৃতদেহ স্বরুপ। মুল কথা হলোঃ ইসলাম, ঈমান এবং এহসান (মারেফাতে এলাহী) - এই তিনটি মিলেই শরীয়ত গঠিত হয়েছে। এই তিনটি জিনিসের সমষ্টিগত বস্তুর নামই শরীয়ত। সুতরাং উক্ত তিনটি জিনিস হতে একটি বাদ পড়িলে শরীয়ত অপুর্ণ থাকবে। ইসলাম ও ঈমান লাভ করার ন্যায় ইলমে ইহসান অর্থাৎ মারেফাতে এলাহী হাসিল করাও ফরজ। অতএব আহলে মারেফাত না হলে আহলে শরীয়ত হওয়া যায় না এবং যিনিই আহলে শরীয়ত তিনিই আহলে মারেফাত। যারা বলে আহলে মারেফাত জানার প্রয়োজন নাই। তারা ভীষণ গলদের মধ্যে রয়েছে। তাদের দিলে মহব্বত ও আদব শুন্যতার দরুণ এবং রসুলে পাকের বিরুদ্ধাচরণ করায় এবং নুরে আকলের অভাবে খাবাছতে বাতেন ও ওয়াছ ওয়াছার দরুণ রহমতে এলাহীর অভাবে মরে গিয়েছে। তাদের থেকে দুরে থাকাই বান্ঞ্চনীয়।

 উপরোক্ত কথাগুলো বলে তিনি একটু বিরতি দিলেন। সেই ফাঁকে কবির সবার জন্য আদা দিয়ে লাল চা বানিয়ে নিয়ে এসেছে। সেই চা সবার মাঝে দেয়া হচ্ছে। সেই ফাঁকে ছলেমান বললোঃ

-হুজুর, আপনের কথায় বুঝা যাইতাছে যারা শরীয়ত পালন করতাছে তারাই মারফতের মধ্যেই আছে। যদি তারা মারফতের মধ্যেই থাকে তাইলে তারা তরীতকের লোকগো দেকতে পারে না কেন্?

চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে তিনি ছলেমানের দিকে তাকিয়ে তার নাম জিগ্যেস করলেন। জবাবে ছলেমান তার নাম এবং পেশা বলে। তা শুনে শাহ্ সাহেব বললেনঃ

-শুন মিয়া। কেবলমাত্র শরীয়ত পালন করলেইতো হবে না। তাকেতো মারেফাত হাছিল করতে হবে। আর এলমে মারেফাত হাছিল করার জন্য তাকে তরীকতের মধ্যে অবশ্যই দাখিল হতে হবে। পবিত্র কুরআন পাকে এরশাদ হয়েছেঃ "ইয়া আইয়ুহাললাজিনা আমানুত্তাকুল্লাহা ইয়াবতাগু ইলাহিল অসিলাতা। ওয়া জাহিদু ফি সাবিলিল্লাহি লা আল্লাকুম তুফলিহুন।" (চলবে)