পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ২১ মে, ২০১৬

মনা পাগলার মৌনতা....এবং ষষ্ঠ পর্ব

(পুর্ব প্রকাশের পর)

অামি আমার ছুরতে আমার বন্ধুকে দেখলাম
না বন্ধুকে নয়, স্বয়ং আল্লাহকেই দেখলাম।।

দেহেন নিজের ছুরতে নিজেরে দেহা মানে হক্করে দেহা। রবরে দেহা। রব আপনের ভিতরে প্রচ্ছন্ন অবস্থায় ঢাকা পইড়্যা আছে। হেরে জাগাইয়্যা তুলেন। উমের মুরগী দেকছেন? উমের মুরগী কি করে? কতোগুলি ডিমরে লইয়্যা উম দেয়। হেই উমে ডিম থিক্কা বাচ্চা বাইর অয়। ঠিক হেই রকম কইর‌্যা কলবের জিকির করেন। তাইলে দেকবেন কলবের ভিতর যে বইয়্যা রইছে, হেয় বাহির অইয়্যা আইব। হের কতা আপনে হুনতে পারবেন। হেয় কতা কয়। হেরে ডাইক্যা বাইর কইর‌্যা আনেন। হের পর হেয় আইয়্যা আপনের সামনে খাড়াইব। হেয় যেই ছুরত লইয়্যা খাড়াইব, হেইডাই আহসান ছুরত। হাদিছে আছে না "কুলুবুল মোমিনীনা আরশু আল্লাহ"। মোমিনের কলব আল্লাহ পাকের আসন। মোমিন কেডা? মোমিন অইলো হেই ব্যাক্তি যে আল্লাহ পাকের ইবাদত বন্দেগী করতে করতে আল্লাহওয়ালা অইয়্যা যায়। হাদিছে কুদছিতে আছেঃ
"লা ইয়ালো আবদী ইয়াতাকাররাবু ইলাইয়া বিন মাওয়াফিল হাত্তা উহিববোহু ফা ইযা আহবাবতুহু কুনতু সামউহুল লাজি ইয়াস মাউবিহী ওয়া বাসারুললাজী ইউবসেরুবিহী ওয়া ইয়াদুহুল লাতি ইউবতেশু বিহা ওয়া রিজলুহুল লাতি ইয়ামশী বিহা।" মানি অইলো আল্লাহ তার নিজ জবানে কইতাছেঃ যহন আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত কইর‌্যা আমার নৈকট্য লাব করে তহন আমি তারে ভালোবাসি আর আমি তারে ভালোবাইস্যা তহন আমি হের কান অই যেইডা দিয়া হে হুনে তার চোক অইয়্যা যাই যেইডা দিয়া হে দেহে। আর হের আত অই যেডা দিয়া সে ধরে। হের পা অইয়্যা যাই যেইডা দিয়া হে হাঁটাহাঁটি করে। তার মানি অইলো মানুষের মইদ্যে আর হের মইদ্যে কোন পার্থক্য থাকে না। মানুষ হের গুণাবলী অর্জন কইর‌্যা ক্ষণিকের জন্য অইলেও আল্লাহময় অইয়্যা যায়। বুঝবার পারছেন। হেরে দেহা আর আল্লাহরে দেহার মইদ্যে কোন পার্থক্য থাকে না। হের চেহারাই আল্লাহর চেহারা। ফাছাম্মা ওয়াজহুল্লাহ। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) হেই গুণাবলী অর্জন কইর‌্যাই বলছিলঃ মানরানী ফাক্কাদ রায়াল হাক্কা। যে আমারে দেকলো হে আল্লারে দেকলো। 

সাধারণ মানুষের কাছে এইডা বিশ্বাস অইবার চায় না এই কারণে যে, হেরা একবার আকাশের দিকে চায় একবার গাছ গাছালি, পাখ পাখালির দিকে চায় আর মনে মনে চিন্তা করে, হেয় কেমতে আল্লাহ অয়? হেয়তো আমাগো মতোই দেকতে? হেয়তো বিয়া করছে। আল্লাহতো বিয়া শাদী করে নাই। তার কোন ছাওয়াল পাওয়ালও নাই। হেয় যদি আল্লাহ অয়, তাইলে সাত আসমানের উপরে যে, হে কেডা? তাছাড়া সুরা ইখলাসে তো আল্লাহ কইছেঃ কুল হু আল্লাহু আহাদ। আল্লাহু সামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইয়ুলাদ। ওয়া লাম ইয়্যাকুল্লাহু কুফু ওয়ান আহাদ। কও আল্লাহ আহাদ। আল্লাহ সামাদ। এইহানে আল্লাহ পাইলেন দুডা। একজন আহাদ। আরেকজন সামাদ আল্লাহ।

-মানে কি? আল্লাহতো এক। সে বহু হয় কিভাবে? আর আপনি যা বলছেনঃ আল্লাহ আহাদ এবং আল্লাহ সামাদ? এইটাতো পুরোপুরি শেরেক। আপনি আল্লাহকে ডিভাইডেড করার চেষ্টা করছেন। এটা মহাপাপ। আল্লাহ পাক বলেছেনঃ তিনি সব কিছু মাফ করবেন। কিন্ত্তু কেউ যদি তার সাখে শেরেক করে তাকে তিনি কোন মতেই মাপ করবেন না। কারণ শেরেক করা কবিরাহ গুণাহ...

-ভাই, আপনেগো লগে আর আমাগো লগে পার্থক্য অইলো এই জায়গায়। আপনেরা নিরাকার আল্লাহকে বিশ্বাস করেন কিন্ত্তু সাকার আল্লাহতে বিশ্বাস করেন না। অথচ হাদিছে আছেঃ আল্লাহ বলেনঃ হে মানুষ আমি অন্নহীন ছিলাম তোমরা আমারে অন্ন দেওনি। আমি বস্ত্রহীন ছিলাম তুমি আমারে বস্ত্র দেওনি। আমি পিপাসার্ত ছিলাম। তুমি আমারে পানি দেও নাই। মানুষ কয়ঃ হে আল্লাহ, তুমিতো নিরাকার। তুমারে কেমতে পানি খাওয়ামু? কেমতে ভাত খাওয়ামু? আর হেইডা হুইন্যা আল্লাহ কয়ঃ তুমি যুদি কোন পিপাসার্তকে পানি খাওয়াইতা তাইলে আমি খাইতাম। তুমি যুদি কোন ক্ষুদার্তকে খাদ্য দিতা তাইলে আমি খাইতাম। বাই, এইহানে দেহেন আপনে যারে নিরাকার কইতাছেন, হেয় কইতাছে কোন ক্ষুদার্থ মানুষরে খাওয়াইলে হেয় খাইতো। খাইলো মানুষ। কইলো আল্লাহ আমি খাই। এহন আপনে দেহেন নিরাকার আল্লাহ সাকার আল্লাহতে আইস্যা খাওয়া খাদ্য খাইলো মানুষের রুপ ধইর‌্যা। নিরাকারের তো কোন মুক নাই। খাইবো কেমতে? তারে খাইতে অইলে আকার ধইর‌্যাই খাইতে অইবো? কি কন আপনে?

-হুম। ব্যাপারটা একটু চিন্তার বিষয়...

-বাই, সব কিছুতেই চিন্তার বিষয়। আল্লাহ পাক বলছেনঃ চিন্তাশীলদের জন্য রয়েছে বিশেষ নিদর্শন।

আজহার মনার কথা শুনে কিছুটা চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। নিরাকার আল্লাহকে সকলেই বিশ্বাস করে। কিন্ত্তু বিপত্তি ঘটে সাকার আল্লাহ পাকের ক্ষেত্রে। কারণ ইসলাম ধর্মে নরোত্তরোপ করা নিষেধ। অর্থাৎ আল্লাহর হাত পা নাক মুখ চোখ ইত্যাদি আছে সেটা করা যাবে না। সেটা যদি করা নিষেধ হয় তাহলে যে হাদিছের কথা মনা বললো সেটার ব্যাখ্যা কি হতে পারে? অন্নহীনকে অন্নদান,বস্ত্রহীনকে বস্ত্রপ্রদান, পিপাসার্তকে পানি প্রদান করা এবং তা ব্যবহার করা কিভাবে সম্ভবপর? মানুষ খাইলে আল্লাহ বলে তাকে খাওয়ানো হলো। বস্ত্র দিলে বলা হলো আল্লাহকে দেওয়া হলো। কিন্ত্তু তিনিতো প্রয়োজনহীন। তার কোন কিছুরই অভাব নাই। তাহলে তিনি এ কথা কেন বললেন? এর ব্যাখা কি হতে পারে?

আজহারকে এভাবে চিন্তা করতে দেখে মনা মুচকি মুচকি হাসছে। 
(চলবে)