পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৫

শ্বেতার ডায়রী-চতুর্থ পর্ব

(তৃতীয় পর্বের পর হতে)

সাত্তার নামক পুলিশটা আমাকে ধমক দিয়ে বললোঃ

-ওই কি দ্যাখস..এ্যায়ই...একদম চক্ষু দুইটা উঠালামু.....চুপ কইর‌্যা বইয়্যা থাক

-ভাই...আপনি এমন করছেন কেন? আমি কি করেছি? আমি কি চোর? না ডাকাত? আমি কি কারো বাড়িতে আগুন দিয়েছি ? না-কি কোন মিটিং মিছিলে বোমা মারছি? না হাইজ্যাক করেছি...

-তুই কিচ্ছু করস নাই। এতো রাইতে তোর আচরণ গতিবিধি সন্দেহ জনক হওয়ায় তোরে ধরছি। বেশি তেরি বেরি করবি, তো তোরে জংগি বানাইয়্যা কোর্টে চালান করইয়্যা দিমু

এরপর আর তর্ক করা চলে না। শুনেছি ৫৪ ধারায় নাকি আচার-আচরণ, গতিবিধি সন্দেহজনক হলে তাকে ধরা যায়। কিন্ত্তু আমার আচার আচরণতো সন্দেহ জনক ছিল না। খামোখা আমাকে গাড়িতে উঠিয়েছে। ঢাকায় আমার তেমন কোন আত্মীয়-স্বজন নেই। নেই কোন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। থাকলে না হয় মোবাইলে কল দিয়ে ধরিয়ে দিতাম। হায়! আমার কেউ নেই। হুমায়ুন আহমেদের "কোথাও কেউ নেই" নামক জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটকের মুনার মতো আমি আবারো আমার সেই কোন পুরোনো স্মৃতিতে হারিয়ে যেতে চাইলাম। কিন্ত্তু পারলাম কই

তারিখঃ ২৬শে মার্চ, ২০১৪ইং
বারঃ বুধবার
আজ তুমি আমার সাথে বেশ খারাপ আচরণ করছো। আমি তোমার কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করিনি। আমি ভাবতেও পারিনি তুমি এমন করবে?........

তারিখঃ ২৮ শে মার্চ, ২০১৪ইং
বারঃ শুক্রবার
আজ বাবা আমাকে বকেছে। কাল রাতে যখন তোমার সাখে কথা বলছিলাম তখন বাবা নাকি সব শুনেছে। সকালে ঘুম হতে উঠতে দেরী হওয়ায় আম্মুর বকাঝকা শুনতে হয়েছে। আচ্ছা আজ শুক্রবার। বন্ধের দিন। একটু আরাম-আয়েশ করে কি ঘুমাতে পারবো না? আমি কি কচি খুকি? জানি না...


তারিখঃ ৩০ শে মার্চ, ২০১৪
বারঃ রবিবার
আজ আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি। ফোনের পর ফোন দিচ্ছি। তুমি আসছো..আসছি...এইতো পাঁচ মিনিট...আরে জ্যাম কি করবো... আসছিতো...বলে নানা টাল বাহানা করছো। কিন্ত্তু তুমি এখনো আসছো না কেন? তুমি কি জানো - রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা কতো কষ্টের..কতো যন্ত্রণার...তুমি কি একটুও চেন্ঞ্জ হবে না? প্লিজ একটু নিজেকে চেন্ঞ্জ করো...অত্যন্ত আমার জন্য হলেও...

পুলিশের গাড়িটা একটা চায়ের দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালো। পাশের দুজন চোখ রগড়াতে রগড়াতে গাড়ি হতে নামলো। তারপর তারা আমার দিকে তাকালো। আমি মাথা নিচু করে বসে রইলাম। মাথা ব্যাথা নামক রোগটা পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় নাকি অন্যকোন অদৃশ্য কারণে উধাও হয়ে গেল। এখন যেটা ভর করেছে সেটা হলো মানসিক যন্ত্রণা।
(চলবে)