পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ধ্যানে দেহ জগত দর্শন--পর্ব ৩৭

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)

বস্তু সত্ত্বা তার শেষভাগ থেকে আবার উৎসে ফিরে যাবার জন্য স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হয়, অর্থাৎ বিস্ফোরণের শক্তি যখন শেষ হয়ে যায় তখন স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রের টানে দ্রুত আভ্যন্তরমুখী হয়, যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ''Centripetal Force'' নাম দেওয়া হয়েছে । কিন্তু জগতের গোলাকার পরিধির প্রান্তভাগে ইতোমধ্যে স্বাভাবিকভাবেই জড় থেকে প্রাণ, প্রাণ থেকে মন, মন থেকে যে বুদ্ধির বিকাশ ঘটে তাতে মনুষ্য জাতি ও জীব আত্মপ্রকাশ করে । 

তাঁরা স্থূল জগত Centripetal Force এর টানে লয় প্রাপ্ত হবার আগেই আপন আন্তর্সত্ত্বায় জগত রহস্যের মূল সূত্র ধরতে পেরে জেনে যান যে জগতে প্রত্যেকটি পদার্থের মধ্যেই জগত ব্রহ্মাণ্ডের লীলা স্তব্ধ হয়ে আছে । শক্তির বিচ্যুরণ হলে সেই ক্রিয়া আবার ফুটে ওঠে। মানুষ দেহতত্ত্বের মধ্যে সেই সত্য আবিষ্কার করে জগতের উৎসের সন্ধান পেয়েছে। যে সত্য সন্ধানের কাহিনী বর্তমান পুস্তকের দেহতত্ত্বাংশে আমি মিঠু লিখেছি । 

অণু পরমাণু থেকে জীব ও মানুষ সব কিছুতেই জগত সৃষ্টি প্রক্রিয়ার নানা স্তর ভেতরের শূন্যতাকে আবরিত করে আছে । এই আবরণ একে একে সরে গেলে ভেতরের অনন্ত শূন্যতা তার স্বরূপে ফিরে যায় । যেমন পিঁয়াজের শেষ খোসা সরে গেলে অন্তঃস্থ শূন্যতা বাইরের শূন্যতার সঙ্গে একাকার হয়ে মিলে যায় । শক্তির একান্নতম ধাপে জগত স্থূলতা প্রাপ্ত হয় । দেহতত্ত্বে এই একান্ন ধাপ সপ্তস্তরে বিভক্ত । এর মধ্যে স্থূল থেকে সূক্ষ্ম বস্তু স্তর রয়েছে ছয়টি । তার তন্মত্র সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অনুকরণ রয়েছে সপ্ততলে। 

সপ্ততলের শেষ পর্যায়ে ব্রহ্মরন্ধ্রে কিছুই নেই। রয়েছে শুধু মহাশুন্যতা। স্থুলতা হলো তরঙ্গের হের ফের হেতু, সুক্ষ্মতাও তাই । যত স্থূল, Frequency তত কম । যত সূক্ষ্মাসূক্ষ্ম, Frequency তত বেশি । আলোর নির্দিষ্ট Frequency যেমন দৃশ্যমান। অতিরিক্ত Frequency তেমনই অদৃশ্য। তেমনই বস্তুসত্ত্বার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট একটি Frequencyই বস্তুরূপে বিরাজমান।বেশি হলে সূক্ষ্ম অবস্থায় স্থিতিমান। যা স্থূল দৃষ্টি দ্বারা দর্শনযোগ্য নয় । জীবের ক্ষেত্রে এই Frequency তার কামনা,বাসনা,লোভ, লালসা, হিংসা, বিদ্বেষ, গীবত,অহংকার, আমিত্বের আবেগ । যত কামনার পশুত্ব বেশি ততই তার Frequency স্থূল।  ততই সে স্থূলতার ভারে আচ্ছন্ন । এইক্ষেত্রে জগতের মধ্যে মানুষ জীবকে ব্যাখা করলে তাকে সাগরে নিমজ্জিত একটি জাহাজ বলে প্রতীয়মান হবে । 

(চলবে) 
Written by:Ariful Islam Mitu