পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ধ্যানে দেহ জগত দর্শন--পর্ব ৩৮

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)

যত কামনার পশুত্ব বেশি, ততই তার Frequency স্থূল, ততই সে স্থূলতার ভারে আচ্ছন্ন। এইক্ষেত্রে জগতের মধ্যে জীবকে ব্যাখা করলে তাকে সাগরে নিমজ্জিত একটি জাহাজ বলে প্রতীয়মান হবে। মালপূর্ণ জাহাজের অধিকাংশই জলের নীচে থাকে। জাহাজ হালকা হলে একমাত্র নিচের অংশ ছাড়া আর বাকি সব অংশ উপরেই থাকে। মানুষের ক্ষেত্রেও তাই। যতই তার কামনা বাসনার ভার, ততই তার নিমজ্জমান অবস্থা। যত কামনা বাসনা কম ততই তার লঘুতা। লঘুতা হলেই তার উচ্চমার্গ বা স্তর। 

ধরা যাক এই ডায়াগ্রামের ছবিটার মতো দাঁড়াবে । নিম্নে ছবিটা দেওয়া হলঃ



চিত্র অনুসারে, স্থূল জগতে প্রথম দিকের মানুষ কামনা বাসনায় থাকে ভর্তি । ফলে জগত সমূদ্রে আকুন্ঠ ডুবে আছে। মৃত্যুর পর জগত পর্যায়ের প্রথম স্তরে সে ঘোরা ফেরা করে অর্থাৎ মূলাধার স্তরে । দ্বিতীয় পর্যায়ের মানুষের কামনা বাসনা আরেকটু কম । মৃত্যুর পর তার দেহের সূক্ষ্মাংশ কামনা-বাসনার তুলনামূলক লঘুতা হেতু স্বাধিষ্ঠান পর্যায়ে ভাসমান থাকে। তৃতীয় পর্যায়ের মানুষ অর্থাৎ যার কামনা বাসনা আরও কম, মৃত্যুর পর তার সূক্ষ্ম দেহের লঘুতা আরও বেশি। সে তার সূক্ষ্ম দেহের সঙ্গে সঙ্গে তৃতীয় স্তরে হালকা হয়ে ভাসতে থাকে। তিন স্তর পর্যন্ত পার্থিব জগতের অভিকর্ষ অত্যন্ত বেশি। ফলে এইসব স্তর থেকে সূক্ষ্ম দেহগুলি অতি তাড়াতাড়ি পৃথিবীতে নেমে এসে মাতৃগর্ভ হতে জন্মলাভ করে। এইসব আত্মা জলভরা মেঘের মতো। বেশিক্ষণ ভাসমান থাকতে পারে না। জলভরা মেঘ যেমন বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে, তেমনই কামনা-বাসনার ভার ঘনীভূত হয়ে অল্পদিনের মধ্যেই এই তিন স্তরের আত্মাকে ভারী করে তোলে। পুনরায় তারা পৃথিবীতে ঝরে পড়ে অর্থাৎ নতুন দেহ ধারণ করে। চতুর্থ পর্যায়ে যারা ওঠে তারা অনেকটা কম কামনা-বাসনা দ্বারা আক্রান্ত। এরা চতুর্থ স্তরে বেশ কিছুদিন বিরাজ করে। 

এখানে অনেকটা শান্তভাবে থাকে কিন্ত তৃতীয় পর্যায় পর্যন্ত নিম্নস্তরের আত্মারা স্থূলদেহের অভাবে কামনা-বাসনা দ্বারা পীড়িত হয়ে কষ্ট পায় এবং চতুর্থ পর্যায়ে যে আত্মা যেতে পারে (আত্মা মানে সূক্ষ্ম দেহ) BIOPLASMIC BODY, সে কিছুদিন শান্তিতে থাকার পর অবচেতন কামনা বাসনা পুনরায় ফুটে উঠতে থাকলে অর্থাৎ কর্মের ভোগের উপর উদয় বিলয় ঘটতে থাকলে সূক্ষ্মদেহ ভারপ্রাপ্ত হয় ও অবশেষে জলভরা মেঘের মতো একদিন নিচের দিকে ঝরে পড়ে। 

(চলবে)
Written by:Ariful Islam Mitu