পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৫

শিবলিঙ্গ



হিন্দুধর্মকে কটাক্ষ করতে বিধর্মীদের অন্যতম হাঁতিয়ার শিবলিঙ্গ শুধু তাঁরা  নয় হিন্দুরাও অশিক্ষার ফলে একে পুরুষ যৌনাঙ্গ মনে করে এবং তাকে হিন্দুদের আরাধ্য ভেবে হাসি ঠাট্টা করেঅষ্টাদশ শতাব্দীতে খ্রিষ্টান মিশনারীরাও কম অপপ্রচার চালায়নি, এমনকি মেরিয়াম-ওয়েবস্টার ডিকশনারীতেও এর অর্থ 'বিশেষ ধরনের পুরুষ লিঙ্গের প্রতীক' হিসেবে দেয়া হয়েছিলএখন দেখে নেয়া  যাক-ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসারে শিবলিঙ্গ বলতে কি বোঝায়? আগামা ধর্মসূত্রের তৃতীয়  অধ্যয়ের ১৬-১৭ নং শ্লোকে বলা হয়েছে- Linঅর্থ  বিলীন হওয়া  এবং ga অর্থ  উত্পন্ন হওয়া অর্থাত্ যে মঙ্গলময় সৃষ্টিকর্তা(শিব) থেকে সবকিছু উত্পন্ন হয় এবং প্রলয়কালে সবকিছু যাতে বিলীন হয় তারই প্রতীক এই শিবলিঙ্গস্বামী বিবেকানন্দ ১৯০০ সালে প্যরিসে হয়ে যাওয়া ধর্মসমূহের ঐতিহাসিক মূল শীর্ষক সম্মেলনে বিশ্ববাসীর সামনে অথর্ববেদের স্কম্ভসুক্তের সাহায্যে তুলে ধরেন যে শিবলিঙ্গ মূলত বিশ্ব ব্রহ্মান্ডেরই প্রতীকস্বামী শিবানন্দ বলেন,"এটি শুধু ভূলই নয় বরং অন্ধ অভিযোগও বটে যে, শিবলিঙ্গ পুরুষলিঙ্গের প্রতিনিধিত্বকারী" তিনি লিঙ্গ পুরানের নিম্নলিখিত শ্লোকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন-
"
প্রধানাম প্রকৃতির
যদাধুর লিঙ্গমুত্তমম
গান্ধবর্নরসাহৃনম শব্দ
স্পর্শাদি বর্জিতম"
অর্থাত্ লিঙ্গ হল
প্রকৃতির সর্বোচ্চ প্রকাশকযা স্পর্শ,বর্ন,গন্ধহীন

ওঁ শান্তি  শিবলিঙ্গ কি?
লিঙ্গ শব্দের মূল অর্থ হলো সূক্ষ দেহ এই দেহটিতে যুক্ত আছে পাঁচটি  জ্ঞানেন্দ্রিয়, ৫টি কর্মেন্দ্রিয় এবং ৫টি প্রাণ ,অপান বায়ু , মন বুদ্ধি - মোট ১৭টি অবয়ব যুক্তদেহ সকল সৃষ্টিরই  সূক্ষ শরীর আছেআমাদের যখন মৃত্যু  হয় তখন জীবাত্মা সূক্ষ শরীরে বিচরণ করেন এবং পুনরায় দেহ ধারণ করেন শিব রুদ্র ও মহাদেব এই তিনটি নামই আমাদের মধ্যে বেশি পরিচিতযে সূক্ষশরীরকে আমরা লিঙ্গ বলে পূজা করি তা সৃষ্টির সূক্ষ শরীর প্রকৃতিতে বীজ বপন রূপ সূক্ষ বিষয়টিকে দেখানো হয়েছেএখানে স্ত্রী-পুরুষের মিলিত অঙ্গ নয়বিশেষভাবে লক্ষ্য করলে তা অনুধাবন করা যায়আমাদের প্রচলিত ধারনায় যা আসে তাকে আমরা সহজে ভুলতে পারি নাযে সূক্ষ শরীরে ১৭টি গুণ নিয়ে অবস্থা করছেন তার পুনরায় স্থুল দেহ ধারণ অন্যদিকে প্রকৃতিতে অর্থাৎ মাটিতে বীজ  বপণকারণে  বীজের সেই সূক্ষ এবং সুপ্ত শক্তিই অংকুরিত হয়ে বৃক্ষাদি শস্যাদি রূপ ফল আমাদের দেন প্রত্যেক দেব-দেবীর বা সৃষ্টির এরূপ সূক্ষ দেহ আছে, সেই দেহের আহ্ববান করি ঘটে,পটে (ছবিতে),মূর্তিতে শিবলিঙ্গও তদ্রুপ সৃষ্টির সূক্ষ দেহ অর্থাৎ ধরিত্রীর সকল কিছুই যেখান থেকে সৃষ্টি এবং যেখানে বিনাশ
বিজ্ঞান কী  বলে?
ধর্মেরি সূত্র ধরেই বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে সূক্ষতম এমন কিছু মানবদেহকে নিয়ন্ত্রণ করে যাকে ধরে রাখা কিংবা বেঁধে রাখা সম্ভব নয়বিজ্ঞানীরা সর্বোচ্চ ছিদ্রহীনস্থানে দেহের মৃত্যু ঘটিয়ে সূক্ষতম আত্মাকে আটকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেনকিন্তু পারেননি আত্মা প্রমাণ করা সম্ভব নয় এজন্য বিজ্ঞানীরা ধর্মকে অস্বীকারও করেননি কখনও