পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

সারমাদ দারদী আজাব সিকাস্তা কারদী তুনে-পর্ব আট

(পূর্ব প্রকাশের পর)
ঘুম হতে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে সকালের নাস্তা করলাম। চায়ের পানি চুলায় বসিয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। তারপর কালকে যে লেখাটা লিখেছিলাম সেটার উপর চোখ বুলালাম। দেখলাম কতোটুকু কি লিখেছিলাম।পড়া শুরু করলাম-আচ্ছা তাহলে আজকে বায়াত বা অঙ্গিকার সর্ম্পকে কেস স্ট্যাডি করতে হবে।তার আগে চা খেতে হবে। চা বানিয়ে মাহিনকে কল করবো কি-না ভাবছি। মাহিনতো সুফী সাহেবের কাছে বায়াত নিয়ে ছিল। তো বায়াত বিষয়ে মাহিনকে জিগ্যেস করলেইতো হয়? তার আগে দেখতে হবে কয়টা বাজে? মাহিন আছে নাকি অফিসে চলে গেছে।পার্ট টাইমের চাকরী আর ভাল লাগছে না। সেটা আমি ছেড়ে দেব। প্রয়োজনে টিউশনী করবো।পড়া শোনা শেষ করেই চাকুরী করবো-চিন্তা করছি। চা খেতে খেতে দেখলাম আটটা দশ বাজে। তার মানে মাহিন এখনো অফিসে যায় নি। বাড়ীতেই আছে। কল করবো কি-করবো না ভাবছি। কেননা মাহিন যদি আসে তো আমার কেস স্ট্যাডি করতে বেশ বেগ পেতে হবে।এসেই গল্প জুড়িয়ে দেবে। তারচেয়ে আগে যেটা ইমপোট্যান্ট সেইটাই করি।কাগজ কলম নিয়ে লিখতে বসলামঃ

বায়াত-অঙ্গিকার করাঃ

বায়াত মানে কি? কেন বায়াত হতে হবে? বায়াত সর্ম্পকে কোরআন হাদীসে কি বলা হয়েছে

বায়াত-আরবী শব্দটি অভিধানিকে দৃষ্টিতে "বাইউন" শব্দের অনুরুপ যার অর্থ বিক্রয় করা। বিক্রয় ক্ষেত্রে ক্রয়ও হয়। একপক্ষ হতে বিক্রয় অপর পক্ষ হতে ক্রয়। উভয়ের কার্যকে আরবীতে "মোবায়াআৎ" বলা হয়। ইসলামের পরিভাষায় বায়াত বলা হয়। কোন মহানের হস্ত ধারণ করে বিশেষ প্রতিজ্ঞা বা অঙ্গিকারের উপর দীক্ষা গ্রহণ করা। এক্ষেত্রে দুটি পক্ষ। হস্ত থারণকারী, অঙ্গীকার ও প্রতিজ্ঞাকারী, অপরপক্ষ হলো যার হস্ত ধারণ করা হয়, যার কাছে অঙ্গীকার ও প্রতিজ্ঞা করা হয়। এক্ষেত্রে উভয়ের কাজ "মোবায়াত" বলা হয়। ক্রিয়াপদও ঐরুপ হবে। ইসলামে যে বায়াত হয় সেই বায়াত কোনো মহান মানুষের হস্তেই ধারণ করা হয়। তার মানে বায়াত মানে অঙ্গিকার করা। অঙ্গিকার করা – দুই প্রকার।
এক. লিখিত অঙ্গীকার
দুই. মৌখিক অঙ্গিকার।
অঙ্গিকার এক প্রকার ওয়াদা। আর ওয়াদা পালন করা ওয়াজিব তথা অবশ্য করনীয়। ওয়াদার বরখেলাপ করা মানে তা ভংগ করা। সেটা এক ধরণের অপরাধ। অঙ্গিকার করার সময় স্বেচ্ছা সায় থাকতে হবে। জোর পূর্বক অঙ্গিকার বা সায় আদায় করা অপরাধ এবং তা চুক্তি আইনে বৈধ নয়।চুক্তি আইনের () ধারায় বলা হয়েছে-স্বেচ্ছায় সায় ব্যতীত চুক্তি সম্পাদন হয় না এবং তা বৈধ নয়। তার মানে কি? তার মানে অঙ্গিকার করার জন্য আমাকে অবশ্যই নিজের ইচ্ছায় যেতে হবে। এখানে জোর যবর দস্তি খাটবে না। এর অর্থ দাঁড়ালো আমি যদি কারো কাছে অঙ্গিকার করি, তাহলে সেই দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে কর্তব্য পালন করাও জরুরী। অর্থাৎ আমাকে তার গোলামী খাটতে হবে। সে যা বলবে আমাকে তাই করতে হবে। যদি না করি তাহলে ওয়াদা বা অঙ্গিকার ভংগ হবে। আর অঙ্গিকার ভংগ করলে তো তার শাস্তি অনিবার্য

বায়াত কেন হতে হবে?

বায়াত কেন হতে হবে-বিষয়টি নিয়ে যথেস্ট বিতর্ক আছে। কেননা একদল মানবে আরেক দল মানতে চাইবে না। কিন্ত্তু কোরআন হাদীছ কি বলে বিষয়ে সেটা জানা জরুরী। কেননা যারা মানবে না তারা কোরআনে থাকলে কি আর না থাকলে কি - কোনটাই তারা মানতে চাইবে না। কিন্ত্তু যারা মানতে চাইবে তারাতো কোরআন-হাদীস দেখালেও মানবে। কারণ ঈমান বলে কথা। বিশ্বাস করাটা না করাটা যার যার এখতিয়ার। কিন্ত্তু বুদ্ধিমানের লক্ষণ হচ্ছে বির্তক পরিহার করা এবং উত্তম পন্থা গ্রহণ করা। তাই বিষয়ে সর্বপ্রথম গুরুত্ব দেব কোরআন শরীফের দিকে
. আয়াতঃ"লাক্কাদ রাদি আল্লাহু আনিল মুমেনিনা এজ ইউবা ইউনাকা তাহ্ তাস সাজারাতে ফা আলেমা মাফিকুলুবিহিম ফাআন জালাচ্ছাকিনাতা আলাইহিম ওয়া আছাবাহুম ফাতাহান কারিবা "- সুরা ফাতাহ আয়াত-১৮
অর্থ:নিশ্চয়ই  আল্লাহ মুসলমানদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছিলেন যখন তারা নবী (সাল্লাল্লাহুআলাইহিস সালাম)এর হাতে গাছের নিচে বায়াত গ্রহণ করছিল। ফলত: তিনি তাদের অন্ত: করণে যে সততা কৃতজ্ঞতা বিরাজ করছিল তা অবগত হয়েছেন। অত:পর তাদের প্রতি তিনি শান্তি অবতরণ করেছেন এবং তাদেরকে শীঘ্রই বিজয় দানে পুরস্কৃত করেছেন
.অায়াতঃ"ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানোত্তাকুল্লাহা ওয়াবতাগু  ইলাইহিল ওয়াছিলাতা ওয়া জাহিদু ফি ছাবিলিল্লাহি লায়াল্লাকুম তুফলেহুন"- সুরা মায়েদা আয়াত-৩৫।  অর্থ: হে আমানুগণ। আল্লাহকে ভয় করতে থাক এবং আল্লাহকে চেনার জন্য ওছিলা তালাশ কর। এবং আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ কর। এতেই তোমাদের সাফল্য
.আয়াতঃ "ইন্নাল্লাজিনা ইউবায়ি উনাল্লাহা ইয়াদুল্লাহে ফাউকা আইদিহিম"- সুরা ফাতাহ আয়াত-১০
অর্থ: যারা আপনার হাতে হাত দিয়ে বায়াত হয়েছে হে রাসুল(সাল্লাল্লাহুআলাইহিস সালাম) অবশ্যই তারা  আল্লাহর হাতে হাত দিয়ে বায়াত গ্রহণ করেছে। তাদের হাতের  উপরআপনার হাত
. আয়াতঃ"মাই ইউতের রাসুলা ফাক্কাদ আতা আল্লাহ"- সুরা নেসা আয়াত-৮০
অর্থ : যে ব্যক্তি রাসুলের আনুগত্য করলো সে আমারই (আল্লাহর) আনুগত্য করলো
.আয়াতঃ"কুল ইনকুনতুম তুহিব্বুনাল্লাহে ফাত্তাবেউনি ইউবিকুমুল্লাহ"-সুরা আল এমরান আয়াত-৩১
অর্থ: তোমরা যদি আমাকে ভালবাসিতে চাও তবে আমার নবীকে ভালবাস। নবীকে ভালবাসলেই আমাকে ভালবাসা হবে
.আয়াতঃ"ওয়া আতিউল্লাহা  ওয়া আতিউর রাসুলা ওয়া উলিল আমরি মিনকুম"- সুরা নিসা আয়াত-৫৯
অর্থ: আনুগত্য কর আল্লাহর, আনুগত্য কর রাসুলের এবং তার প্রতিনিধির
মহিলাদিগকে বায়াত করার দলিল
"ফাবায়হুন্নাআস্ তাগফেরলা হুন্নাল্লাহা"-সুরা মোমতাহেনা আয়াত-১২
অর্থঃ হে নবী(সাল্লাল্লাহুআলাইহিস সালাম) আপনি মহিলাদিগকে বায়াত করুনএবং তাদের নিকট থেকে অংগিকার নিন
এবার আসি অন্যান্য গ্রন্থপন্ঞ্জীতে। দেখি কি বলা হয়েছে বায়াত সমন্ধে?
" সিয়ারুল আসরার" কিতাবে হযরত বড়পীর (রহঃ) সাহেব লিখেছেন-"কলব জিন্দা করার জন্য পীর বা আহলুত তালকীন অন্বেষণ করা ফরয " হযরত মহিউদ্দিন ইবনুল আরাবি (রঃ) বলেছেন-"আল ফেকাউ লে ছালাহির জাহেরে আল তাসাউফ লে এছলাছির বাতেনে" অর্থাৎ ফেকাহ শাস্ত্র মানুষের শরীয়তকে শুদ্ধ করে আর তাসাউফ মানুষের অন্তরকে পরিস্কার করে। মাওলানা রুমী (রহঃ) বলেছেন-"কোনবীয়ে ওয়াক্ত খেসাশত আয় মুরিদ তাকে নুরে নবী আমাপদীদ" অর্থাৎ তোমার পীরকে জামানার নবী মনে কর। তিনি আরো বলেছেনঃ" খোদ--খোদ কামেল না-শোদ মাওলানায়ে রুম-তা-গোলামে শামসের তাবরেজী না-শোদ" অর্থাৎ আমি কখনো নিজে কামেল হতে পারি নাই যতক্ষণ না আমি শামশের তাবরেজীর গোলাম হয়েছি। হযরত হাফেজ সিরাজী  (রহঃ) বলেছেন-" বকোয়ে এশক সানেহ বে-দলীল রাহকদম কেমান বখশ নমুদাম ছদ এহতেশাম না-শোদ" অর্থাৎ পথ প্রদর্শক পীর ছাড়া এশকের গলীতে পা রেখো না কারণ আমি শত চেষ্টা করেও কিছুই হইনি। কোনো শয়ের বলেছেনঃ" একভি আগর  তরকহো তুজছে হাবীব! তো উঠে শাহেশর মে আমা বে নছীব" অর্থাৎ শরীয়ত মারেফত এই দুইটি এলমের একটিও যদি ত্যাগ কর তবে কেয়ামতের দিন অন্ধ হয়ে উঠবে। মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী (রহ:) বলেছেনঃ" গার-তুই খাওয়াহী হাম নিশানী বা খোদাতু-নিশানী দর হুজুরে আওলিয়া " তুমি যদি আল্লাহর সংস্পর্শে বসতে ইচ্ছা কর তবে কোন আওলিয়ার সংস্পর্শে বস। "গারতু চাহে আছলে হখ আয় বে-খবর কামেলোকা খাকে পাহো ছর বছর।" অর্থাৎ হে বে-খবর তুমি যদি আল্লাহর হুজুরে পৌছতে ইচ্ছে কর তবে অবশ্যই কোন কামেল অলির পদধুলি হয়ে যাও।" ছবছে হো আজাদ উনকে হো গোলাম গারমেলে দ্বিনক্কা মজা তুঝকো তামাম।" অর্থাৎ সবকিছু ত্যাগ করে তুমি কোন কামেল অলির গোলাম হয়ে যাও তবেই ধর্মের স্বাদ গ্রহণ করতে সমর্থ হবে। "কাবা বুনিয়াদে খলিলে আজর আস্ত দিল গুজার গাহে জলীলে আকবর আস্ত"অর্থাৎ আজর পুত্র ইব্রাহিম (:) তৈয়ার করেছেন পাথরের কাবা আর আল্লাহ স্বয়ং তৈয়ার করেছেন মানুষের দিল। খাজা মঈন উদ্দিন চিশতী (:) বলেছেনঃ" তুমি যদি আল্লাহর মুখ দর্শন করতে চাও তবে আমার চেহারার দিকে তাকাও আমি তার দর্পণ সে আমা হতে পৃথক নয়।" হাদিস শরীফে আছেঃ" মানরাণী ফাক্কাদ রায়াল হাক্কা" যে আমাকে দেখলো সে আল্লাহকে দেখলো
এছাড়া আরোও অন্যান্য সর্বজন মান্য সর্বজন স্বীকৃত ইমাম মুজতাহিদ আওলিয়া কিরামগণ (রহঃ) পীর সাহেবদের নিকট বায়াত গ্রহণ ফরয বলে ফতওয়া দিয়েছেন। যেমন হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) তার ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন কিমিয়া সায়াদাত কিতাবে হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী আজমেরী (রহঃ) তার লিখিত আনিসুল আরওয়াহ কিতাবে ইমামুশ শরিয়াত ওয়াত তরীকাত শায়েখ আবুল কাশেম কুশাইরী (রহঃ) রিছালায়ে কুশাইরিয়া কিতাবে হযরত মাওলানা কাজী ছানাউল্লাহ পানিপাথি (রহঃ) মালাবুদ্দা মিনহু এরশাদুত্তালেবীন কিতাবে শাহ আব্দুল আজিজ মোহাদ্দিস দেহলভী(রহঃ) তফসীরে আজিজ নামক কেতাবে হাফিজে হাদিসে আল্লামা রুহুল আমীন (রহঃ) তাছাউফ তত্ত্ব বা তরীকত দর্পণ নামক কিতাবে, আল্লামা শামী (রহঃ) রদ্দুল মুহতার কেতাবে, ইমাম ফকরুদ্দীন রাজী (রহঃ) তার তাফসীরে কবীর কেতাবে, কাইয়্যুমে আউয়াল আফজালুল আউলিয়া হযরত ইমাম মোজাদ্দেদ আলফে ছানী (রহঃ) তাঁর বিখ্যাত আলোড়ন সৃষ্টিকারী মকতুবাদ শরীফে,হযরত ইমাম আহমদ রেফায়ী (রহঃ) তাঁর বুনইয়ানুল মুশাইয়্যদ কেতাবে, হযরত ইসমাঈল হাক্কি (রহঃ) তাফসীরে রুহুল বয়ানে সরাসরি পীর গ্রহন করা ফরজ বলে ফতুয়া দিয়েছেন প্রসঙ্গে হাদিয়ে বাঙ্গাল মুজাহিদে আজম শায়খুল মাশায়েখ আল্লামা কারামত আলী জৌনপুরী (রহঃ) তাঁর যদুত তাকাওয়াতে লিখেছেন যে এলমে তাছাউফ ব্যতিত ইলমে শরীয়তের উপর যথাযথ আমল করা কিছুতেই সম্ভব নহে
তার মানে বিখ্যাত বিখ্যাত সব অলিগণ মাশায়েখগণ বায়াত নিয়েছিলেন

একটানা লিখে ক্লান্ত বোধ করছি। আরো কিছুক্ষণ চিন্তা করা প্রয়োজন। তার আগে আমাকে একটু বিরতি দেয়া প্রয়োজন। আমি আর দেরী করলাম না। লেখাটা রেখে উঠে ওয়াস রুমে গেলাম। একটু ফ্রেস হয়ে চায়ের পানিটা আবার গরম করতে দিলাম। ভাবছি মাহিনকে ফোন করবো কি-না? যেই ভাবা অম্মনি শুনতে পেলাম কলিংবেলের আওয়াজ। অামি মোবাইলটা হাতে নিয়েই দরজাটা খুললাম। খুলেই দেখি মাহিন

-কি রে, তুইতো দেখি বইয়ের দোকান পাট খুলে বসছিস

-নারে। একটা বিষয়ে একটু কেস স্ট্যাডি করছি

-কোন্ বিষয়ে?

-আরে ঐদিন সুফী সাহেবর সাথে ওখান থেকে আসার পর হতেই। মাথার ভেতর কেমন যেন পোকা ঢুকে গেল। তাই তার কথার সুত্র ধরে এগুনোর চেষ্টা করছি

- দেখি কি লিখেছিস? হুম বায়াত মানে কি? কেন বায়াত হতে হবে? বায়াত সর্ম্পকে কোরআন হাদীসে কি বলা হয়েছে? এব্যাপারে  তুইতো আমাকে ডাকলেইতো পারতি। তোকে বেশ কিছু ঘটনা শোনাতাম

-তোর ঘটনা পরে শুনবো। তার আগে চা নিয়ে আসি। চা খাব আর আয়েশ করে তোর কথা শোনা যাবে
আমি রান্না ঘরে গেলাম। আর মাহিন আমার লেথা পড়তে শুরু করেছে। যাক ভালোই হলো। ভুল থাকলে ধরতে পারবে। আর ওর কথা শুনলে হয়তো আরো কিছু তথ্য পাবো। আমি দু'কাপ চা নিয়ে মাহিনকে বললাম
-বারান্দায় আয়। আরাম করে বসি। মাহিন আসতেই ওর হাতে চায়ের কাপ তুলে দিয়ে বললাম শুরু কর তোর কথা। মাহিন চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে চেয়ার টেনে বসলো আমার কাছে। তাহলে শোন

(চলবে)