পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৭

ধ্যানে দেহ জগত দর্শন- পর্ব ১৪

(পুর্ব প্রকাশের পর হতে)
"সবকে টানে আকর্ষণ তাকে 
টানে সে কোন জন ?
কারো হিসাব দিবা বর্ষে 
কারো আবার আলোক বর্ষে"। 

সৃষ্টি প্রথম দৃশ্যমান হয় স্থুল জগতে। কিন্তু সৃষ্টি একটি অন্ধ আবেগে আপন পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছে অর্থাৎ যেখান থেকে সে এসেছে সেখানেই ফিরে যাবার পথে সে এগিয়ে চলেছে। এখন আর এটা ব্যাখ্যাতীত নয়। কারণ চেতনা Energy রূপে ফুটে উঠে বস্তু পুঞ্জে তাকে আচ্ছাদিত করে ভেতরে পূর্ণ চেতনাকে ধরে রাখে। এবং সেই চেতনাই গতি চরিত্র অনুযায়ী আবার উৎসের দিকে ফিরে যাবার মুখে Evolution রূপে নিজেকে প্রকাশ করে আত্মস্ত হয়। সুতরাং চেতনা সর্বত্রই রয়েছে। কোথাও স্থির হয়ে।  কোথাও বা চলমান রূপে। 

এই অন্ধ আবেগ বা গতিকেই বলে “Will” বা Elan Vital”। স্থুল থেকে ব্যাখ্যাতীত রহস্যে প্রাণের আবির্ভাব হয়েছে। একে অন্ধ আবেগ না বলে সচেতন আবেগও বলা যায়। কারণ এই আবেগ ধুম্র  কুন্ঞ্জ রুপে ধারণ করে ঘূর্ণাবর্তে তাঁর মধ্যে যে শূন্যতাকে ধরে রাখে, সেই শূন্যতা পূর্ণচেতনাময়। প্রমাণঃ সেই শূন্যস্থ বা সমাধিস্থ - সম (Equal) অধি - (Still Stage Beyond The Physical World)  = সমাধি। 

জীব ত্রিকালজ্ঞ হয় প্রান থেকে মনের। মন থেকে বুদ্ধির। চিত্তবৃত্তি ও অহঙ্কারের আবির্ভাব। এই বুদ্ধি দ্বারা মানুষ বুঝতে শিখেছে যে, শূন্যতা থেকে সৃষ্টি, শূন্যতাতেই আবার ফিরে যেতে হবে। শুধু তাই নয়। ব্যাবহারিক জীবনে বহু সাধু সন্ত এই শূন্যতাতে ফিরেও গেছেন। ফলে মনুষ্য দেহের বাইরে উৎকৃষ্টতর অন্য কোন দেহের প্রয়োজন নেই বলে ভিন্ন গ্রহেও যে সব জন্তু ও জীব দেখা যায় তারা ক্ষুদ্রাকার বা বৃহদাকার হলেও দ্বিহস্ত দ্বিপদ বিশিষ্টই। তার বাইরে নয়। বৃহদাকার জীব দেখা যায় সেই সব গ্রহের মধ্যে যার মধ্যাকর্ষণ শক্তি কম। যে সকল গ্রহে মধ্যাকর্ষণ শক্তি বেশি সেখানে জীব ক্ষুদ্রকায় কিন্তু বেশি তেজসম্পন্ন। 

অনাহত চক্রের স্বচ্ছ নীল আকাশেই যে প্রথম অলৌকিক দর্শন হয় তা নয়। তার আগেও মাঝে মাঝে নানা ধরনের অলৌকিক জ্ঞান হয়। তার মধ্যে কিছু কিছু হয়তো আপন মনের সংস্কারের প্রতিফলন। কিছু হয়তো বা সত্য যেমন ঘূর্ণ্যমান শিবলিঙ্গ বা বলয়যুক্ত শনিগ্রহ। শিবলিঙ্গ আর কিছুই নয়। বিন্দু - যাতে পুরুষ শূন্যতা ও প্রকৃতি একাত্ম হয়ে আছে। আনন্দ অর্থাৎ বিন্দুপর্যায়ে শূন্যের চতুর্দিকে এই বিন্দুরুপ আলো ঘূর্ণ্যয়মান হয় অর্থাৎ বিন্দু শূন্য বা পুরুষের চতুর্দিকে গৌরপট্রের মত বিরাজ করে। যোগীরা হয়তো এ দেখেই শিবলিঙ্গের কল্পনা করেছিলেন। অনাহত চক্র ছাড়িয়ে শক্তি উপরের দিকে যখন উঠতে থাকে তখন নীল রং ক্রমন উজ্জলতর ও সুক্ষাতর হতে আরম্ভ করে। অবশেষে বিশুদ্ধ চক্রে এসে পৌঁছালে তা নীল জ্যোতির আকার ধারণ করে। উৎসের নিকটবর্তী অঞ্চলে যে নীল রঙের গভীরতা, তা উপলব্ধি করা যায়। এই “জ্যোতির্ময় নীল” দিব্যজগতের খুব কাছাকাছি। এখানে নানা দিব্য মূর্তি দর্শন হয়। তবে তারা কেউ রক্ত মাংসের নন। হয় সাধকের মনের প্রক্ষেপন অথবা দৈবীসত্তা সুক্ষারুপ। মনে রাখতে হবে যে বিভিন্ন যে রূপ তা তরঙ্গের তারতম্য হেতু।

 চলবে.........