পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৭

ধ্যানে দেহ জগত দর্শন- পর্ব ১৫

“প্রভু হলো দয়ার ডিপু
 ডাকি তাই নূই্য়ে বপু।” 

শক্তিকে এখানে তুলতে পারলে নানা দৈবীভাবে দেহ অনুরণিত হতে থাকে। বিশুদ্ধ চক্র থেকে শক্তি যখন আরও ঊর্ধ্ব দিকে এগিয়ে চলে তখন ‘জ্যোতির্ময় নীল’ আরও সুক্ষ্মতর হতে আরম্ভ করে অর্থাৎ COLOR BECOMES MORE LUMINOUS NEAR THE CENTRE। এখানে নানা দিব্যদর্শন ও পার্থিব জগতের বিগত মহাত্মাদের অর্থাৎ উচ্চ কোটি সাধকদের বহু সুক্ষ্ম দেহ দর্শন হয়। এরপর শক্তি যখন ভ্রু মধ্যে আজ্ঞা চক্রে প্রবেশ করে তখন নানা রঙের বিস্ফোরণ হতে থাকে। মাঝে মাঝে এখানেও নানা দিব্যদর্শনও হতে থাকে। .
বিঃদ্রঃ- হুজুর পাক (সাঃ) এর অনুমতি ছাড়া এই আজ্ঞা চক্রে প্রবেশ করা সহজসাধ্য নহে।  কারণ এইখানের অবস্থান দরবারে রেসালত আর রেসালতের ইমাম অর্থাৎ সরদার হুজুর পাক (সাঃ)। 

আজ্ঞাচক্র অর্থাৎ অনুমতি চক্র পার হলে সপ্ততলে অর্থাৎ স্থায়ী দিব্য জগতে প্রবেশের অধিকার মেলে। এখানে পূর্বে বর্ণিত সকল রঙের তন্মাত্র অর্থাৎ ESSENCE পুনরায় সুক্ষ্মারুপে দেখা যায়। তারই মাঝে মাঝে দৈবী সত্ত্বার তন্মাত্র রূপ চোখে পড়তে থাকে। আজ্ঞাচক্র হল দিব্য জগতে প্রবেশের ছাড়পত্র স্বরূপ। সেইজন্য এর নাম ‘আজ্ঞা চক্র’, অর্থাৎ অনুমতিপত্র বা ছাড়পত্র বিশেষ।

অনুমতি পেলে মেরুদণ্ডের রন্ধ্রপথ তখন পরিষ্কার হয়ে যায়। মূলাধারের কুণ্ডস্তিত শক্তির ঊর্ধ্ব যাত্রা পথে তখন আর কোন বাধাই থাকে না। বিনা বাধায় শক্তি দ্রুত ঊর্ধ্বে উঠে সপ্ততলে চলে যায়। সপ্ততলে নানা বর্ণের ও নানা দৃশ্যের তন্মাত্র দর্শনের পর শক্তি প্রবেশ করে বিন্দুতে। তখন বিন্দু অদৃশ্য হয়। বিন্দুর (বস্তুত বিন্দু অদৃশ্য হয় না। সাধকের চেতনা বিন্দুস্থ হয়ে বিন্দুর স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আর লক্ষ্য করতে পারে না। যেমন ব্রহ্মাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আমরা ব্রহ্মাণ্ডের স্বরূপ প্রত্যক্ষ করতে পারি না।) পরিবর্তে শুধুমাত্র জ্যোতি দর্শন হতে থাকে। সপ্ততলে নানা বর্ণ মাঝে মাঝেই অনন্ত আকাশে কোটি চন্দ্র প্লাবিত জ্যোৎস্নার প্লাবনে মন প্রাণকে স্নিগ্ধ করে দেয়। বিন্দুতে ঢুকলে সুক্ষ্মা অহংবোধ ও দিব্যবোধ একাত্ম হয়ে অদ্ভুত এক পরিপূর্ণ আনন্দ দান করতে থাকে। যেন ঈশ্বরের সঙ্গে একাত্ম হয়েছি অথচ তাকে বোধ করে আনন্দও পাচ্ছি এইভাবে। বিন্দুর এই জ্যোতির্মণ্ডলে প্রবেশ করলে ব্যাক্তি মানুষের নিজের মধ্যেই দৈবী ক্ষমতা দেখা দেয়। বিন্দুর জগতে প্রবেশ করলে জ্যোতি ছাড়া সে তখন আর কিছুই দেখে না। কিন্তু জাগ্রত অবস্থায় চোখ বুঝলে সেই দিব্য জ্যোতি নানা রূপ অঙ্কন করে প্রতীকী ভাষায় কথা বলে। ঠিক যেন আকাশের মেঘ। আকাশের মেঘ যেমন এক এক সময় এক এক রূপ ধারণ করে – সেই জ্যোতিও নানাপ্রকার রূপ ধারণ করে ইঙ্গিতে কথা বলতে থাকে। জগতের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সবই যেন তার চৈতন্যসত্ত্বার ধৃত হয়ে আছে। ইচ্ছামাত্র প্রতীকী রূপে সে সম্পর্কে নানা ইঙ্গিত দেয়। 

চলবে..................