পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০১৭

ধ্যানে দেহ জগত দর্শনঃ - পর্ব ৬

(পুর্বপ্রকাশের পর হতে) 

“শব্দে সৃষ্টি – শব্দ লয় --------------------- শব্দে হয় জগৎময়”।

ধ্যানরত অবস্থায় যে মানুষটাকে ‘মানুষগুরু’ রূপে বিশ্বাস করা যায় সেই মহামানুষটিকে ছবি আকারে সামনে এনে বসিয়ে ধ্যানস্থ হতে হবে। ক্রমে সেই মহামানবের অস্পষ্ট ছবিটি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে থাকবে এবং আলো ও শব্দ আকারে উনি সংযোগে আসবেন। আর তখনই দেহের দ্বার উদঘাটন হতে থাকবে এবং ত্রিনয়ন অর্থাৎ সুক্ষ্ম শ্রবণ ও সুক্ষ্ম দৃষ্টি চেতনা ও অনুভুতির মাধ্যমে অনুভবে আসতে শুরু করবে। 

‘বিগ ব্যাঙ তত্ত্ব’ই হোক বা ‘STEADY STATE’ তত্ত্বই হোক কিংবা ভারতীয় ‘তন্ত্র তত্ত্ব’ হোক, কেন্দ্র থেকে জগতের যেভাবে উদ্ভব হয়, তার প্রথম দিকে থাকে সুক্ষ্ম অবস্থায়। যতই তা কেন্দ্র থেকে দুরে সরে আসে ততই পায় স্থুলাবস্থা। এই সুক্ষ্মাবস্থা ও স্থুলাবস্থা হয় বিস্ফোরণজনিত তরঙ্গ বা FREQUENCY এর তারতম্য অনুযায়ী। 

FREQUENCY তারতম্য অনুযায়ী যে এক-এক অবস্থা হয় রঙের তারতম্যই তা চমৎকারভাবে প্রকাশ করে। শব্দের শ্রেণীবিভাগেও এর স্বপক্ষেই প্রমান দেয়। রঙের ক্ষেত্রে লাল, হলুদ, সাদা, নীল, বেগুনী ইত্যাদি রঙ বস্তুত FREQUENCY এর তারতম্য হিসাবে শব্দ ও FREQUENCY এর তারতম্য হিসাবে সুক্ষ্ম বা স্থুল হয়। সবচেয়ে বেশি FREQUENCY এর আলো যেমন স্থুল চোখে অদৃশ্য, তেমন সবচেয়ে বেশী বা কম FREQUENCY এর শব্দও তেমনি স্থুল কর্ণে অশ্রুত। এ থেকে SUPERSONIC ও SUBSONIC শব্দতত্ত্বের উদ্ভব হয়েছে। 

স্থুল যন্ত্রে যে আলো ধরা পড়ে না, সুক্ষ্ম যন্ত্রে সে আলো ধরা পড়ে। তেমনি স্থুল যন্ত্রে যে শব্দ ধরা পড়ে না, সুক্ষ্ম যন্ত্রে সে শব্দ ধরা পড়ে। অনুরূপভাবে স্থুল দৃষ্টিতে যা দেখা যায় না, সুক্ষ্ম দৃষ্টি হলে তা দেখা যায়। বরং এই সুক্ষ্ম দৃষ্টি বা শ্রুতি মানুষের মধ্যে আসা কিভাবে সম্ভব? তা দেহতত্ত্ব বিশ্লেষণ করার সময় বুঝাচ্ছি। এখন ‘তন্ত্র তত্ত্বে’ জগতের সুক্ষ্মতা ও স্থুলতা বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের প্রথম দিকের বৃত্ত গুলিতে সুক্ষ্ম অবস্থা থাকে। অণু সৃষ্টি হয়ে সে সুক্ষ্মতা স্থুলতা প্রাপ্ত না হলে স্থুল চোখে কিছু ধরা পড়ে না। কিন্তু সুক্ষ্ম যন্ত্রে সেই সুক্ষ্মতা ধরা পড়ে। 

যেমন মানুষের দেহের উপর সুক্ষ্ম নানা বর্ণের যে আলো আছে, স্থুল চোখে তা ধরা পড়ে না। কিন্তু বৈজ্ঞানিকেরা এক ধরনের ফটো তুলে সেই আলো ধরে ফেলেছেন। এই ফটোগ্রাফি ‘কিরিলিয়ান’ বা ‘কারলিয়ান’ ফটোগ্রাফি নামে পরিচিত। এই কারলিয়ান ফটোগ্রাফির মত জগতেরও প্রাথমিক বৃত্ত পর্যায়গুলি সুক্ষ্ম। প্রান্তভাগের বৃত্তই একমাত্র স্থুল। বীজের মধ্যে মহীরুহের মত এই সুক্ষ্ম পর্যায়ে দেহ জগতের ও বিশ্ব জগতের উপাদান লুকিয়ে থাকে। জগতের সুক্ষ্ম ও স্থুল পর্যায় এই ধরনেরঃ



 চলবে............