৩৮.
কাল সারারাত সরাইখানায়, কাটে নাই মাতলামো,
সাতসকালেই চলেছি আবার সরাইখানার দিকে।
আবার যে চলে পা দুটি আমার! বলছি না তাকে- থামো!
মাতাল আমার চোখে পড়ছে না ঘুম ঘুম পৃথিবীকে।
এখনো রবাব বেজেই চলেছে, চলছে গজল পাঠ,
ওহে নিজেকেই তাড়া দাও তুমি, তীর্থ যে ডাকে ওই-
ওখানে এখনো ভাঙেনি আসর, এখনো জমজমাট।
কেন একা যাবে? কিছু বন্ধুকে ডেকে নেবে নিশ্চয়ই।
একদিন তুমি সরাইখানায় পেয়েছিলে দেখা তার।
কতনা কাব্য করেছিল তুমি তাকে জয় করে নিতে।
সে বলেছে বড়ো উপহাস করে- ‘কোমরের এই হার-
এখানে তোমার হাত রাখলে যে! পারবে পাল্লা দিতে?
হাতটি সরাও, পারো যদি যাও- অন্য কোথাও যাও-
যদি পাও খুঁজে কেন্দ্রে কে আছে, আছে অন্তিমে কে-
তবে তুমি ওহে যাও তার কাছে, সেখানে গজল গাও।’
উঠে এলে তুমি- তবুও তো আশা!- যদি নেয় পিছু ডেকে।
আসে নাই ডাক! ঝড়ের সাগরে তখন জাহাজে উঠি-
জাহাজ তো নয়- শরাব সোরাহি! ওতেই যে ভাসমান!
কান্ডটা দেখে সাকি ও সাথীরা হেসে হয় কুটিকুটি!
হোক তারা হোক! গায়ে মাখবো না উপহাস অপমান।
বরং গজলে আমি বারবার বলে যাবো এই কথা-
নেহাৎ মাটির দেহটি তোমার তারই এত গৌরব?
হাফিজ শরাবে মতি রেখো তুমি ঠোঁট রেখো সর্বদা।
পেয়ালাই সব, পেয়ালা ভরসা, এই তো হে বাস্তব!